1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
মাযারের নামে কোনো কিছু মানত করা বৈধ কিনা
জবাব দিচ্ছেন: মাওলানা আবূ নছর মোহাম্মদ কুতুবুজ্জামান তাফাদার
  • ৮ মে, ২০২১

মাযারের নামে কোনো কিছু মানত করা, মাযারের দান বাক্সে দান করা, মাযারের নিকট বাতি জ্বালিয়ে রাখা এবং মাযারের খাদিম হওয়া শরীআতের দৃষ্টিতে কতটুকু সঠিক? জানতে চাই।

প্রশ্নকারী: বদরুল ইসলাম
ডাইকের বাজার, নোয়াগাঁও, ফেঞ্চুগঞ্জ, সিলেট

জবাব: মান্নত হবে কেবল আল্লাহর নামে, কোনো ওলী বা মাযারের নামে নয়। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে মান্নত করা সম্পূর্ণ নাজায়িয। যেমন কেউ বলল, “আমি অমুক ওলীর কিংবা তার মাযারের নামে এরূপ সাদকাহ করার মান্নত করলাম।” এরূপ মান্নত গায়রুল্লাহর (আল্লাহ ব্যতীত অন্যের) নামে হওয়ার কারণে তা নাজায়িয এবং তা পূরণ করা যাবে না; বরং এজন্য তাওবা-ইস্তিগফার করা প্রয়োজন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং ১২৫৭৫; সুনানে আবূ দাউদ, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৬৯; আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮৫; আল বাহরুর রায়েক ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৯৮; আলমুগনী লি ইবনে কুদামা, খণ্ড ১৩, পৃষ্ঠা ৬৪৩; রদ্দুল মুহতার, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৩৯)

তবে কেউ যদি আল্লাহর নামে মান্নত করেন এবং স্থান হিসেবে কোনো ওলীর মাযার এলাকা বা মসজিদকে শর্ত করেন, বা অন্য যেকোনো স্থান বা মসজিদকে শর্ত করেন, অনেকে আল্লাহর নামে কোন নেক কাজের মান্নত করতে গিয়ে কোন স্থানের কথা শর্ত করে থাকে, যেমন বলেন, “আমি আল্লাহর নামে অমুক মসজিদে দুই রাকআত নামায পড়ার মান্নত করলাম বা “আল্লাহর নামে একটা গরু বা ছাগল অমুক ওলীর মাযারের মিসকিনদেরকে দান করার মান্নত করলাম” এরূপ মান্নত করা জায়িয রয়েছে। তবে মান্নত পূর্ণ করার ক্ষেত্রে উক্ত মসজিদে তা আদায়ের কিংবা উক্ত স্থানের মিসকিনদেরকে দেওয়া আবশ্যক নয়, বরং অন্য যেকোনো স্থানে তা আদায় করা যাবে। এটি হানাফী ফকীহগণের নির্ভরযোগ্য অভিমত। এ সম্পর্কে ‘বাদাইয়ুছ ছানায়ী’ গ্রন্থে আছে,

وإن كان مقيدا بمكان بأن قال: لله علي أن أصلي ركعتين في موضع كذا، أو أتصدق على فقراء بلد كذا – يجوز أداؤه في غير ذلك المكان عند أصحابنا الثلاثة – رحمهم الله

-যদি মান্নতকারী কোন স্থানের শর্ত করে মান্নত করে থাকে, যেমন এভাবে বলল, আল্লাহর নামে অমুক স্থানে দু’ রাকআত নামায আদায়ের মান্নত করলাম অথবা বলল,আল্লাহর নামে অমুক শহরের ফকীরদেরকে সাদকাহ করার মান্নত করলাম; তাহলে আমাদের তিন ইমাম তথা ইমাম আবূ হানীফা, ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ (র.) এর মতানুযায়ী উক্ত স্থান ব্যতীত অন্য স্থানেও তা আদায় করা জায়িয হবে। (বাদাইয়ুছ ছানায়ী: ৫খণ্ড, ৯৩ পৃষ্ঠা)

মাযারের দান বাক্সে দান ও মাযার সংশ্লিষ্ট যে সকল দ্বীনী খিদমত রয়েছে, সেগুলোর সহায়তার উদ্দেশ্যে মাযারের দান বাক্সে দান করা যাবে। তবে উক্ত দানকৃত অর্থ যদি নাজায়িয কিংবা হারাম কাজে ব্যয় হবার সমূহ আশঙ্কা থাকে, তাহলে সে ক্ষেত্রে দান করা নাজায়িয। কেননা ইহা নাজায়িয বা হারাম কাজে সহায়তার নামান্তর। পবিত্র কুরআন মাজীদে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوٰى ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللهَ ۖ إِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ

-তোমরা নেক ও খোদা ভীরুতার ক্ষেত্রে সহায়তা করো, আর তোমরা পাপাচার ও সীমালঙ্গনে সহায়তা করো না। (সূরা মায়িদা, আয়াত-০২)

মাযারের নিকট বাতি জ্বালানো: প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে যেমন- যিয়ারতকারীগণের সুবিধার্থে অন্ধকারচ্ছন্ন অবস্থায় কোনো আলোর ব্যবস্থা না থাকলে মাযারের নিকট বাতি জ্বালানো জায়িয। অন্য প্রকারের আলো থাকাবস্থায় অপ্রয়োজনে বাতি জালিয়ে রাখা নাজায়িয। যেহেতু ইহা অপচয়ের শামিল।

মাযারের খাদিম হওয়ার বিষয়টি মূলত সুষ্ঠুভাবে সেখানকার কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে অর্থাৎ যেখানে জনসমাগম ও ব্যস্ত পরিবেশ রয়েছে, সেখানে সুষ্ঠুভাবে সবকিছু পরিচালনার প্রয়োজনে দায়িত্বশীল হিসেবে খাদিম নিযুক্ত থাকা জায়িয, যেমন অন্যান্য জায়িয কর্মকা- পরিচালনায় কমিটি কিংবা সমিতি দায়িত্ব পালনের জন্য নিযুক্ত থাকে। মাযারের খাদিম নিযুক্ত করা বা হওয়া প্রয়োজনে জায়িয হবে।

জবাবদাতা: প্রিন্সিপাল ও খতীব, আল ইসলাহ ইসলামিক সেন্টার
মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র

ফেইসবুকে আমরা...