1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
তাকওয়া অর্জনের উপায়
জবাব দিচ্ছেন: মাওলানা আবূ নছর মোহাম্মদ কুতুবুজ্জামান তাফাদার
  • ৩ মে, ২০২১

একজন মুসলমানের জন্য তাকওয়া অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন হলো, একজন মুসলমান কিভাবে তাকওয়া অর্জন করবে?

প্রশ্নকারী: মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী

কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার

জবাব: একজন মুমিনের ঈমান পরিপূর্ণ করা, জীবন সফল করা, এমনকি আল্লাহর নৈকট্যের উচ্চ স্তরে নিজেকে পৌঁছানোর জন্যে তাকওয়ার বিকল্প নেই। যে এই গুণে যত বেশি গুণান্বিত সে-ই আল্লাহর নিকট ততবেশি সম্মানিত। তাই তাকওয়া অর্জনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর বিভিন্ন ভাষ্যের সার সংক্ষেপ থেকে কতিপয় বিষয় নি¤েœ তুলে ধরা হলো।

১. সত্যবাদীদের সাহচর্য গ্রহণ। পবিত্র কুরআনে তাকওয়া অর্জনের নির্দেশের সাথে এসেছে: وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ

-আর সত্যবাদীদের সাহচর্য গ্রহণ কর।

২. ওসীলা বা মাধ্যম অন্বেষণ। পবিত্র কুরআনে এসেছে- وَابْتَغُوا إِلَيْهِ الْوَسِيلَةَ

-এবং তার নৈকট্য লাভের ওসীলা (মাধ্যম) তালাশ কর।

এ আয়াতে বর্ণিত মাধ্যম সম্পর্কে তাফসীরকারকগণের যে প্রধান দুটি উক্তি পাওয়া যায়, তা হচ্ছে- ১. নেক আমল ও ২. তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত লোকের সাহচর্য গ্রহণ। যদিও উভয়টি তাকওয়া অর্জনের সহায়ক পন্থা, তবে তুলনামূলক প্রথমটি থেকে দ্বিতীয়টি অধিক ফলপ্রসূ ও সহজতর ব্যবস্থা। এরই ভাবার্থ সূরা ফাতিহায় বর্ণিত হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে- صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ

-চালাও তাদের পথে যারা তোমার নিআমতপ্রাপ্ত।

অন্যত্র নিআমতপ্রাপ্তদের পরিচয় দেওয়া হয়েছে, مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِينَ

-তারা (নিআমতপ্রাপ্তরা) হচ্ছেন- নবীগণ, সিদ্দীকগণ, শহীদগণ এবং নেককারগণ।

তাই তাকওয়া অর্জনে সুহবত বা সান্নিধ্যের গভীর প্রভাব রয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষের কর্ম, চিন্তা-চেতনা, চরিত্র ও নৈতিকতায় পরিবর্তন আসে। দ্বীনের অনুসরণের সফলতা এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে। সাহাবায়ে কিরাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুহবত অবলম্বন করেছিলেন। সাহাবীদের সুহবত তাবিঈগণ এবং তাবিঈগণের সুহবত তাবে তাবিঈগণ অবলম্বন করেছিলেন, যাদের যুগকে তাদের উত্তমতার কারণে সর্বোত্তম যুগের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে।

৩. আল্লাহকে সর্বোচ্চ ভয় করা।

৪. আল্লাহর আযাবের ভয় অন্তরে জাগ্রত করা।

৫. সর্বদা মৃত্যু, কবর জীবন তথা পরকালের কথা স্মরণের অভ্যাস গড়ে তোলা।

৬. আল্লাহর নিকট এর জন্য প্রার্থনা করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়শ: এ দুআ করতেন,

اَللّٰهُمَّ آتِ نَفْسِيْ تَقْوَاهَا، وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا، أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلَاهَا

-হে আল্লাহ! আমার অন্তরকে তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত করুন, একে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন করুন, আপনি সর্বোত্তম পবিত্রতা দানকারী, আপনি এর মালিক ও নিয়ন্ত্রক।

৭. হারাম বা সকল নিষিদ্ধ বিষয়াদি বর্জন করা এমনকি সন্দেহপূর্ণ বিষয়াদি থেকে বিরত থাকা।

৮. অনর্থক কথা, কাজ এবং চিন্তা-ফিকির থেকে বেঁচে থাকা।

৯. আল্লাহর নিদর্শনাবলিকে সম্মান প্রদর্শন করা।

১০. অন্তরে আল্লাহর মুহব্বত বৃদ্ধি করা ও পার্থিব বিষয়াদির মহব্বত কমানো।

১১. আল্লাহর ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পূর্ণ আনুগত্য করা।

১২. আল্লাহর রাস্তায় বেশি বেশি দান-খয়রাত করা।

এ সকল বিষয়াবলি তাকওয়া অর্জনের জন্য অপরিহার্য।

 

জবাবদাতা: প্রিন্সিপাল ও খতীব, আল ইসলাহ ইসলামিক সেন্টার 

মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্র

ফেইসবুকে আমরা...