1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
ফিলিস্তিন ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের ভূমিকা কি?
হামিদ মাশহুর
  • ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

এ ক্ষেত্রে প্রথম কথা হলো কোন রাষ্ট্রই তাদের সংকীর্ণ জাতিবাদী দর্শনের উপরে উঠে ফিলিস্তিনের ইস্যুতে শতভাগ কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে বেইমানী করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরা নির্লজ্জের মতো ইজরাইলের সুরে সুর মিলিয়েছে এবং একমাত্র মুসলিম দেশ হিসাবে হামাসের ৭ই অক্টোবরের হামলার নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরব সহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্র চূড়ান্ত শঠতার পরিচয় দিয়ে এই চলমান গণহত্যা নিয়ে নিশ্চুপ থেকেছে, কোন কার্যকর ভূমিকা নেয়নি। উপরন্তু সৌদি আরব এবং জর্ডান হুথির ছোড়া মিসাইলকে নিজেদের আকাশ সীমায় ধ্বংস করে কার্যত ইজরাইলের পক্ষাবলম্বন করেছে এবং ইজরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। একই ভাবে আরব আমিরাত যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে প্রো-ইজরাইলী শর্তগুলো প্রমোট করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে। চলমান এই গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওআইসি এবং আরব লীগের যৌথ সম্মেলনে ইজরাইলের উপর সামগ্রিক অবরোধ আরোপের যে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিলো তা কার্যকর করতে পারলে হয়তোবা আজকের এই ভয়াবহতা অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব হতো। কিন্তু বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মিশর এবং জর্ডানের বিরোধীতার কারণে সেই অবরোধ আরোপ করা যায়নি।

হামাসকে ইরান যথেষ্ট সহযোগিতা করলেও তারাও তাদের সামর্থ্যের সবটুকু সেখানে দেয়নি। অনেকে হামাসকে ইরানের এজেন্ট বলে যে প্রচারণা চালায় এটা মূলত তাদের সৌদী প্রভুদের চামড়া বাচানোর চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। ইরান হামাসকে অল্প বিস্তর সহযোগিতা করায় হামাস যদি খারাপই হয় তাহলে প্রশ্ন উঠে আরবের পুতুল সরকারগুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার লক্ষ্যে এই একবিংশ শতকে এসে কি কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে? কেউ তাদের একটা আন্তরিক এবং কার্যকর উদ্যোগ দেখাতে পারলেই মেনে নিবো ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়া হামাসের উচিত হয়নি। ওয়ার অন টেরর শুরুর আগে থেকেই আরবরা মার্কিন প্রভাবে ধীরে ধীরে ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তখন স্বাভাবিকভাবেই ফিলিস্তিনের মুজাহিদদের জন্য ইরান ছাড়া আর কোন পাওয়ারফুল এলাই থাকেনি। হামাস তার অস্তিত্বের স্বার্থেই ইরানের ঘনিষ্ঠ হয়েছে আর এর পুরো দায়ভার আরবদের, যারা পবিত্রভূমির মুজাহিদীনদেরকে ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার বহু আগেই ত্যায্য করেছিলো।

ইদানিং তুর্কিয়ে কে নিয়ে অনেকের সমালোচনাও চোখে পড়ছে। এটাও আসলে আহলে সৌদের কলঙ্ক ঢেকে রাখার চেষ্টা। তুর্কিয়ে এর মসনদে এরদোয়ানের মতো একজন ইসলামপন্থী ক্ষমতায় আছেন ঠিক, তবে তুর্কিয়ে আরবদের মতো কোন ইসলামী রাষ্ট্র নয়। সেখানে এরদায়ানকে নানা ঘরানার মত ও পথকে ডিল করেই বিদেশনীতি প্রয়োগ করতে হয়। তুর্কিয়ের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং ভৌগোলিক কারণে স্বাভাবিকভাবেই তার পক্ষে এমন অনেক কিছুই করা সম্ভব নয়, যা করা সম্ভব ছিলো সৌদি আরব, মিশর, আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর। তথাপি তুর্কিয়েও তার জাতীয় স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে ফিলিস্তিনের ইস্যুকে তাদের নিজেদের ইস্যু হিসাবে নেয়নি। নিলে তাদের পক্ষেও সম্ভব ছিলো আরো কার্যকর ভূমিকা রাখার।

মোট কথা গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র সমূহের মধ্যে কেউই তার সংকীর্ণ জাতীয় স্বার্থের বাইরে এসে চলমান গণহত্যা বন্ধে কার্যকর কিছুই করেনি। তবে সবচেয়ে বেশি নির্লজ্জতার পরিচয় দিয়েছে ফিলিস্তিনের নিকটতম প্রতিবেশী আরবরা, যাদের উপর দায়িত্ব ছিলো সবচেয় বেশি।

ফেইসবুকে আমরা...