1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
রোযার মাসাইল
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ‘ফাতাওয়া ও মাসাইল’ থেকে সংকিলিত
  • ৭ এপ্রিল, ২০২১

যে সব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় এবং শুধু কাযা ওয়াজিব হয়
রোযাদার ব্যক্তিকে জোরপূর্বক কোনো কিছু আহার করানো হলে, কুলি করা বা নাকে পানি দেওয়ার সময় রোযার কথা স্মরণ থাকা সত্ত্বেও অসতর্কতাবশত পেটে পানি প্রবেশ করলে, রোযাদারের প্রতি কোনো কিছু নিক্ষেপ করার পর তা তার গলায় প্রবেশ করলে, ডুব দিয়ে গোসল করার সময় হঠাৎ নাক বা মুখ দিয়ে পানি গলার মধ্যে প্রবেশ করলে, রোযার দিনে ঘুমের অবস্থায় কোনো কিছু আহার করলে অথবা রোযা অবস্থায় পাথর, লোহা বা শিশার টুকরা বা এ জাতীয় কোনো কিছু আহার করলে যা সাধারণত খাদ্য হিসেবে খাওয়া হয় না বা ঔষধরূপেও সেবন করা হয় না এসব ক্ষেত্রে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ রোযার কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
লোবান, আগর বাতি জালিয়ে ইচ্ছাকৃত এর ধোঁয়া গ্রহণ করলে, কাঁচা লাউ যা রান্না করা হয়নি তা ভক্ষণ করলে, তাজা বা শুকনো আখরোট, শুকনো বাদাম, খোসাসহ ডিম, ছিলকাসহ আনার ও কাঁচা পেস্তা ভক্ষণ করলে রোযা ভঙ্গ হবে এতে কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। শুকনো পেস্তা বাদাম চিবিয়ে ভক্ষণ করলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। অবশ্য না চিবিয়ে গিলে ফেললে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। খোসা ফাটা থাকলেও অধিকাংশ ফকীহদের মতে এ হুকুমই প্রযোজ্য হবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

চাউল, বাজরা, মশুরী, মাসকলাই ইত্যাদি ভক্ষণ করলে রোযা ভঙ্গ হবে ও কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। দাঁতের ফাঁকে যদি কোনো খাদ্য দ্রব্য আটকিয়ে থাকে আর তা সামান্য পরিমাণ হলে রোযা ভঙ্গ হবে না। পরিমাণে বেশি হলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। ছোলা বুট বা এর চেয়ে বড় কোনো কিছু হলে একে বেশি বলে গণ্য করা হবে। এর চেয়ে ছোট বা কম হলে তা কম বলে ধর্তব্য হবে। এরূপ কোনো বস্তু মুখ থেকে বের করে হাতে নিয়ে পুনরায় তা গলাধঃকরণ করলে রোযা ফাসিদ হয়ে যাবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

সাহরীর লোকমা মুখে রয়ে গেলে এবং ফজর উদিত হওয়ার পর তা গলাধঃকরণ করলে তার রোযা ভঙ্গ হবে ও কাযা ওয়াজিব হবে। আর যদি মুখ থেকে বের করে পুনরায় খায় তাহলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। অন্যের থুথু গলাধঃকরণ করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এতে কাযা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না। কিন্তু প্রিয় ব্যক্তির থুথু গলাধঃকরণ করলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে, নিজের মুখের থুথুতে বেশিই হোক তা গলাধঃকরণ করলে রোযার কোনো ক্ষতি নেই। কিন্তু নিজের থুথু হাতে নিয়ে পুনরায় তা গলাধঃকরণ করলে রোযা ভঙ্গ হবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে, কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। যদি কথা বলার সময় অথবা অন্য কোনো সময় মুখের থুথুতে রোযাদার ব্যক্তির দুই ঠোঁট ভিজে যায় অতঃপর সে যদি তা গিলে ফেলে তাহলে তার রোযা ফাসিদ হবে না। যদি লালা মুখ থেকে থুতনি পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে যায় এবং এর যোগসূত্র মুখের মধ্যে থাকে এমতাবস্থায় উক্ত লালা মুখে টেনে নিয়ে তা গিলে ফেললে রোযা ফাসিদ হবে না। কিন্তু মুখের সাথে যুগসূত্র ছিন্ন হয়ে গেলে এবং তা গলাধঃকরণ করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

রোগের কারণে যদি কারো মুখ থেকে লালা নির্গত হয়ে মুখে পুনপ্রবেশ করে এবং গলায় ঢুকে তবে রোযা ভঙ্গ হবে না। রক্ত পান করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে এবং কাযা ওয়াজিব হবে, কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। দাঁত থেকে রক্ত বের হয়ে গলায় ঢুকলে যদি থুথুর পরিমাণ বেশি হয় তাহলে ক্ষতি নেই। আর রক্তের পরিমাণ বেশি হলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। সমান সমান হলেও রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। রেশমের রঙ্গের কাজ করার সময় যদি রেশম মুখের ভেতর ঢুকে এবং মুখের থুথু রঙ্গিন হয়ে যায় তবে এ থুথু গলাধঃকরণ করলে এবং এ সময় রোযার কথা স্মরণ থাকলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে বৃষ্টি বা বরফের পানি গলার ভেতর ঢুকলেও রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

নিজ স্ত্রীকে স্পর্শ করা, একত্রে মিলিতভাবে শয়ন করা, মুসাফাহা করা এবং মুআনাকা করা বা চুমু দেওয়ার দ্বারা যদি আদ্রতা অনুভব হয়, তাহলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। কাযা আবশ্যক হবে। কাপড়ের উপর দিয়ে স্ত্রীকে স্পর্শ করার পর বীর্য নির্গত হলে এ ক্ষেত্রে স্বামী যদি স্ত্রীর শরীরের উষ্ণতা অনুভব করে তাহলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অন্যথায় ভঙ্গ হবে না। রোযা অবস্থায় কোনো ব্যক্তি যদি হস্তমৈথুন করে এবং এতে বীর্য নির্গত হয় তবে তার উপর কাযা ওয়াজিব হবে। অনুরূপ স্ত্রীর দ্বারা হস্তমৈথুন করিয়ে বীর্যপাত করানো হলে তাতেও রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

সাহরী খাওয়ার পর পান মুখে ঘুমিয়ে পড়লে এবং সুবহে সাদিকের পর জাগ্রত হলে এ রোযা সহীহ হবে না। কাযা ওয়াজিব হবে। কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। (তাতারখানিয়া, ১ম খণ্ড)

যদি কোনো ব্যক্তি রোযা অবস্থায় ভুলে পানাহার বা স্ত্রী সহবাস করার পর রোযা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে অব্যাহত রাখলে তার রোযা অবশ্যই ভঙ্গ হয়ে যাবে। এতে কাযা ওয়াজিব হবে কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

বমি হওয়ার পর রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে পানাহার করলে রোযা অবশ্যই ভঙ্গ হয়ে যাবে। তাতে কাযা ওয়াজিব হবে, কাফফারা ওয়াজিব হবে না। আর এতে রোযা ভঙ্গ হয় না এ কথা জানা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃত রোযা ছেড়ে পানাহার করলে তাতে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। স্বপ্নদোষ হওয়ার পর রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে পানাহার করলে কাযা ওয়াজিব হবে, কিন্তু কাফফারা ওয়াজিব হবে না। অবশ্য স্বপ্ন দোষের হুকুম জানা সত্ত্বেও এরূপ করলে কাফফারাও ওয়াজিব হবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
রামাদান মাসে কোনো কারণবশত যদি রোযা ভঙ্গ হয়ে যায় তাহলেও দিনের বেলায় রোযাদারের ন্যায় পানাহার বন্ধ রাখা ওয়াজিব। (হিদায়া, ১ম খণ্ড)

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় এবং কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়
রামাদান মাসে নিয়ত করে রোযা রাখার পর ওযর ব্যতীত স্বেচ্ছায় তা ভঙ্গ করলে ঐ রোযার কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হয়। মলদ্বার বা যোনিদ্বার দিয়ে যৌনচারিতায় লিপ্ত হলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। বীর্যপাত হোক বা না হোক কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। মহিলা যদি স্বেচ্ছায় পুরুষের সাথে এ কাজে লিপ্ত হয় তবে তাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই এ হুকুম প্রযোজ্য হবে। জোরপূর্বক আরম্ভ করার পরে মহিলা যদি স্বেচ্ছায় এ কাজে রাযী হয়ে যায় তবে সে ক্ষেত্রেও কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে। কোনো মহিলা যদি কোনো বালক বা পাগলকে সুযোগ দেয় এবং তারা যদি তার সাথে যিনা করে তবে উক্ত মহিলার উপর কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে খাদ্য বা ঔষধ গ্রহণ করলে কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে। রোযাদার ব্যক্তি যদি খাদ্য বা পানীয় জাতীয় কোনো কিছু পানাহার করে তাহলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। যেসব গাছের পাতা সাধারণত ভক্ষণ করা হয় তা ভক্ষণ করলে কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। শাক-সবজির হুকুমও অনুরূপ। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

শুধু লবণ খেলেও কাফফারা ওয়াজিব হবে। রোযা অবস্থায় শিংগা লাগানোর পর রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে আহার করলে কাযা ও কাফফারা উভয় ওয়াজিব হবে।
চোখে সুরমা ব্যবহার করা অথবা শরীরে বা গোঁফে তৈল মাখার পর রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। মিসওয়াক করার পর রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।পরনিন্দা করার কারণে রোযা ভঙ্গ হয়ে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে কাফফারা
ওয়াজিব হবে।
কোনো ঘুমন্ত মহিলার সাথে সহবাস করা হলে পুরুষের উপর কাযা ও কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। (শামী)
রামাদান মাসে রোযার নিয়ত করে রোযা আরম্ভ করে ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। রামাদান ছাড়া অন্য কোনো রোযা ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। অনুরূপ রামাদানের রোযার নিয়ত করার পূর্বে রোযা ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে না। (হিদায়া, ১ম খণ্ড)

রোযা অবস্থায় যেসব কাজ মাকরূহ
রোযা অবস্থায় নিম্নোক্ত কাজগুলো মাকরূহ-
১. রোযা অবস্থায় গন্ধ জাতীয় বস্তু চিবানো
২. বিনা ওযরে কোনো কিছু চিবানো বা কোনো কিছুর স্বাদ গ্রহণ করা
৩. কোনো বস্তু খরিদ করার সময় জিহ্বা দ্বারা এর স্বাদ গ্রহণ করা। যেমন- মধু, তৈল ইত্যাদি
৪. শৌচকর্ম সম্পাদনে প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা
৫. কুলি করার সময় গড়গড়া করা এবং নাকে পানি দেওয়ার সময় নাকের ভেতর পানি টেনে নেওয়া
৬. পানিতে নেমে গোসল করার সময় বায়ু নির্গত করা
৭. মুখে থুথু জমিয়ে তা গিলে ফেলা (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
৮. স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর নফল রোযা রাখা
৯. কামোদ্দীপনা সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে নিজেকে নিরাপদ মনে না করলে এ অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা বা তার সাথে কোলাকুলি করা
১০. যে কাজ করলে রোযাদার দুর্বল হয়ে রোযা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় এমন কাজ করা। যেমন- শিংগা লাগানো অথবা অত্যাধিক কষ্টসাধ্য কোনো কাজ করা। (মারকিল ফালাহ ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
১১. এমন বিলম্বে সাহরী খাওয়া যে সময়ের ব্যাপারে সন্দেহ এসে যায়। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
১২. বিনা ওযরে রোযা অবস্থায় শিশু সন্তানের খাওয়ার জন্য কোনো কিছু চিবিয়ে দেওয়া। (মারাকিল ফালাহ)

রোযা অবস্থায় যেসব কাজ মাকরূহ নয়
১. মিসওয়াক করা। রোযা অবস্থায় সকাল-সন্ধ্যা তথা সবসময় মিসওয়াক করা জায়িয। কাঁচা বা শুকনো যেকোনো ধরনের ডাল দ্বারা মিসওয়াক করা যাবে।
২. চোখে সুরমা ব্যবহার করা। যদি সৌন্দর্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্য না থাকে তবে তা ব্যবহার করা জায়িয। আর যদি সৌন্দর্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্য থাকে তবে মাকরূহ।
৩. শিংগা লাগানো। যদি তাতে দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা না থাকে তবে তা মাকরূহ হবে না। আর যদি দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে তবে মাকরূহ হবে। তাই দিনে শিংগা না লাগিয়ে সূর্যাস্তের পর শিংগা লাগানো শ্রেয়।
৪. রোযা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা বা তার সাথে কোলাকুলি করা, যদি এতে সহবাসে লিপ্ত হওয়া বা বীর্যপাত হওয়া থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
৫. রোযা অবস্থায় কুলি করা বা নাকে পানি দেওয়া
৬. গোসল করা
৭. শরীর ঠান্ডা করার জন্য ভিজা কাপড় শরীরে জড়িয়ে রাখা (মারাকিল ফালাহ)
৮. স্বামী বদ মেজাজী হলে জিহ্বার অগ্রভাগ দ্বারা খাদ্যের স্বাদ চেয়ে দেখলে রোযা মাকরূহ হবে না।
৯. অনন্যোপায় অবস্থায় রোযাদার মা কোনো কিছু চিবিয়ে শিশুকে আহার করালে রোযা মাকরূহ হবে না। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

রোযার কাফফারা সম্পর্কিত মাসাইল
রামাদান মাসে রোযা রাখার পর বিনা ওযরে, ইচ্ছাকৃতভাবে তা ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। রোযার কাফফারা যিহারের কাফফারার মতোই। কাফফারা হলো, একজন গোলাম আযাদ করা। সম্ভব না হলে একাধারে ষাট দিন রোযা রাখা। তাও সম্ভব না হলে ষাটজন মিসকীনকে দু’বেলা আহার করানো।
গোলাম আযাদ করতে অক্ষম হলে একাধারে ষাটদিন রোযা রাখতে হবে। ভেঙ্গে ভেঙ্গে কিছু কিছু করে রোযা রাখা জায়িয নেই। যদি ঘটনাক্রমে মাঝে দুই একদিন বাদ পড়ে যায় তবে পুনরায় আরম্ভ করে ষাটটি পূর্ণ করতে হবে। তবে এই ষাট দিনের মধ্যে যদি কোনো মহিলার হায়িয আরম্ভ হয়ে যায় তবে পূর্বের রোযাগুলোও হিসাবে ধরা হবে। (শামী, ২য় খণ্ড)
নিফাসের কারণে যদি রোযা ভঙ্গ করতে হয় তবে পূর্বের রোযাসমূহ ধর্তব্য হবে না। নতুনভাবে পুনরায় ষাটটি রোযা রাখতে হবে। (শামী)
রোগের কারণে যদি কাফফারার রোযা ভঙ্গ করতে হয় সুস্থ হওয়ার পর পুনরায় ষাটটি রোযা রাখতে হবে। যদি মাঝে রামাদান মাস এসে যায় তবে রামাদান মাসের পর কাফফারার রোযা আদায় হবে না। নতুনভাবে আবার ষাটটি রোযা রাখতে হবে। (শামী)
বার্ধক্য বা অসুস্থতার কারণে কেউ যদি কাফফারার রোযা রাখতে সক্ষম না হয় তবে এর পরিবর্তে ষাটজন মিসকীনকে পেট ভরে দুই বেলা আহার করাতে হবে।
এই ষাটজন মিসকীনের প্রত্যেকেই বালিগ হতে হবে। কোনো নাবালিগকে কাফফারার খাদ্য খাওয়ানো হলে তা হিসাবে গণ্য হবে না। এর পরিবর্তে সমসংখ্যক বালিগ মিসকীনকে খাওয়াতে হবে। (শামী)
খাওয়ানোর পরিবর্তে প্রত্যেক মিসকীনকে ‘সাদাকাতুল ফিতর’ পরিমাণ চাল বা আটা বা এর মূল্য প্রদান করলেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। (শামী)
যার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে সে যদি অন্য কাউকে তার পক্ষ হতে কাফফারা আদায় করার জন্য আদেশ করে এবং উক্ত ব্যক্তি তা আদায় করে দেয় তবে কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু যার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়েছে তার বিনা অনুমতিতে অন্য কেউ যদি তার পক্ষ হতে কাফফারা আদায় করে তবে কাফফারা আদায় হবে না। (শামী, ২য় খণ্ড)
একজন মিসকীনকে ষাটদিন পর্যন্ত দু’বেলা আহার করালে অথবা ষাটদিন পর্যন্ত একজন মিসকীনকে ষাটবার সাদকায়ে ফিতরের সমপরিমাণ গম বা এর মূল্য প্রদান করলে এতেও কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। (হিদায়া)
একাধারে ষাটদিন আহার না করিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে আহার করালেও কাফফারা আদায় হবে। (মারাকিল ফালাহ)
ষাট দিনে গম বা আটা অথবা এর মূল্য হিসাব করে যদি একই দিনে তা কোনো এক মিসকীনকে প্রদান করা হয় তবে তাতে কেবল একদিনের কাফফারা আদায় হবে বাকী ঊনষাট দিনের কাফফারা পুনরায় আদায় করতে হবে। (শামী)
কোনো মিসকীনকে সাদাকায়ে ফিতরের পরিমাণ হতে কম প্রদান করলে তাতে কাফফারা আদায় হবে না। (বাহরুর বাইক)
একটি রোযা ভঙ্গ করলে একটি কাফফারা ওয়াজিব হয়। এমনিভাবে একাধিক রোযা ভঙ্গ করলেও একটি কাফফারাই ওয়াজিব হবে। একটি কাফফারার পরিমাণ ষাটজন মিসকীনকে দু’বেলা তৃপ্তি সহকারে আহার করানো। কিন্তু কাযার বিষয়টি এর থেকে ব্যতিক্রম। অর্থাৎ একাধিক রোযা ভঙ্গ করা অবস্থায় প্রত্যেকটি রোযারই কাযা ওয়াজিব হবে। অবশ্য দুই রামাদানের দু’টি রোযা ভঙ্গ করলে দু’টি কাফফারা আদায় করতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি কাফফারা যথেষ্ট হবে না। (শামী)

ফিদইয়ার মাসাইল
অতিশয় বৃদ্ধ ব্যক্তি যে রোযা রাখতে অক্ষম অথবা এমন রুগ্ন ব্যক্তি যার সুস্থতার আশা করা যায় না তাদের ব্যাপারে শরীআতের বিধান হলো, তারা রোযার পরিবর্তে ফিদইয়া দিবে। অর্থাৎ প্রত্যেক দিনের রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে দু’বেলা পেট ভরে আহার করাবে অথবা সাদকায়ে ফিতরের সমপরিমাণ গম, যব, খেজুর বা তার বাজার মূল্য কোনো মিসকীনকে প্রদান করবে। (শামী)
একটি পূর্ণ ফিদইয়া একজন মিসকীনকে দেওয়াই উত্তম। কিন্তু যদি একটি ফিদইয়া ভাগ করে একাধিক মিসকীনকে প্রদান করা হয় তবে ইমাম আবূ ইউসুফ (র.) এর মতে তাও জায়িয আছে। (শামী)
বৃদ্ধ যদি পুনরায় কখনো রোযা রাখার শক্তি ফিরে পায় অথবা নিরাশ রুগ্ন ব্যক্তি যদি আরোগ্য লাভ করে এবং রোযা রাখতে সক্ষম হয় তবে যেসব রোযার ফিদইয়া প্রদান করা হয়েছে পুনরায় এগুলোর কাযা করতে হবে। আর সে ফিদইয়াটা সাদাকা হিসেবে গণ্য হবে। (শামী ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
কারো যিম্মায় কাযা রোযা থাকলে সে যদি তার ওয়ারিসদেরকে ওসীয়াত করে যায় যে আমার এতগুলো রোযার কাযা আছে, তোমরা এ ফিদইয়া আদায় করে দিবে। এরূপ ওসীয়াত করে গেলে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হতে দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করার পর ঋণ পরিশোধ করে যে পরিমাণ সম্পদ থাকবে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা সম্পূর্ণ ফিদইয়া আদায় করা সম্ভব হলে তা আদায় করা তাদের উপর ওয়াজিব হবে। ফিদইয়ার পরিমাণ যদি তার অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশের চেয়ে বেশি হয় তবে মৃত ব্যক্তির সম্পদ দ্বারা যে পরিমাণ ফিদইয়া আদায় করা যায় ঐ পরিমাণই আদায় করা ওয়াজিব হবে। অতিরিক্ত পরিমাণ ফিদইয়া আদায় করা ওয়ারিসদের উপর ওয়াজিব নয়। বাকী ফিদইয়া আদায় করতে অতিরিক্ত যে সম্পদ লাগবে তার জন্য ওয়ারিসদের অনুমতি জরুরি হবে। (শামী, ২য় খণ্ড ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
যদি মৃত ব্যক্তি ওসীয়াত না করে যায় এবং এমতাবস্থায় যদি তার ওলী-ওয়ারিসগণ নিজেদের মাল থেকে তার নামায রোযার ফিদইয়া আদায় করে দেয় তবে তা জায়িয হবে। আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাআলা হয়তো নিজ গুণে তা কবূল করে নিবেন এবং তার অপরাধ ক্ষমা করে দিবেন। মৃত ব্যক্তির ওসীয়াত না করা অবস্থায় তার পরিত্যক্ত মাল থেকে ফিদইয়া আদায় করা জায়িয নেই। অনুরূপ ফিদইয়ার পরিমাণ যদি তার মালের এক তৃতীয়াংশ অপেক্ষা বেশি হয় তবে ওসীয়াত করা সত্ত্বেও ওয়ারিসদের অনুমতি ছাড়া অতিরিক্ত ফিদইয়া পরিত্যক্ত মাল দ্বারা পরিশোধ করা জায়িয হবে না। অবশ্য যদি ওয়ারিসগণ সকলেই খুশি মনে অনুমতি দেয় তবে পরিত্যক্ত মাল থেকে ও অবশিষ্ট ফিদইয়ার অবশিষ্ট আদায় করা জায়িয হবে। কিন্তু নাবালিগ ওয়ারিসের অনুমতি শরীআতে গ্রহণযোগ্য নয়। অতএব বালিগ ওয়ারিসগণ যদি নিজেদের অংশ পৃথক করে নিয়ে তার থেকে ফিদইয়ার অতিরিক্ত অংশ আদায় করে তবে জায়িয হবে। (শামী ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
ওলীর জন্য মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নামায ও রোযার কাযা আদায় করা গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং কোনো ওয়ারিস যদি মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে রোযা রাখে বা নামায পড়ে এতে তার কাযা আদায় হবে না। (আলমগীরী ও হিদায়া, ১ম খণ্ড)
রোযা পালনে অক্ষম এবং ফিদইয়া আদায়ে অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরও প্রকাশ্যে মানুষের সামনে পানাহার করা উচিত নয়।

মুসাফিরের রোযা
সফরে থাকাকালীন অবস্থায় মুসাফিরের জন্য রোযা না রাখা জায়িয আছে। অবশ্য পরে এর কাযা করে নিতে হবে। সফরের অবস্থায় রোযা রাখলে যদি কোনো ক্ষতি না হয় তবে রোযা রাখা উত্তম। যদি ক্ষতি হয় তবে রোযা না রাখাই উত্তম। (শারহুল বিদায়া ও নূরুল ঈযাহ)

রুগ্ন ব্যক্তির রোযা
অসুস্থ ব্যক্তি যদি জীবন বিপন্ন হওয়ার অথবা অঙ্গহানী ঘটার আশঙ্কাবোধ করে তবে তার জন্য রোযা না রাখা জায়িয। অনুরূপ রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা রোগ দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও রুগ্ন ব্যক্তির জন্য রোযা না রাখা জায়িয। রোগের কারণে রোযা রাখতে সক্ষম না হলে সুস্থ হওয়ার পর তার কাযা করতে হবে। রোগী নিজে রোগের আলামত অথবা নিজের অভিজ্ঞতা কিংবা ধার্মিক বিজ্ঞ মুসলিম চিকিৎসকের পরামর্শের ভিত্তিতে রোগ বৃদ্ধি জীবন বিপন্ন হওয়া বা অঙ্গহানীর প্রবল ধারণা হলেই রোযা না রাখা তার জন্য জায়িয হবে। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
রোগ আরোগ্য লাভের পর শরীরে দুর্বলতা থাকা অবস্থায় রোযা রাখলে যদি পুনরায় রোগাক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে তবে এ অবস্থায় রোযা না রাখা জায়িয আছে। (শামী)
কেউ যদি পীড়িত অবস্থায় মারা যায় তবে রোগের কারণে তার যেসব রোযা ছুটে গিয়েছে তার ফিদইয়া আদায় করার জন্য ওসীয়াত করা তার উপর ওয়াজিব নয়। কেননা সে কাযা রোযা রাখার সময় পায়নি। (শামী)
রোগের কারণে কয়েক দিন রোযা রাখতে সক্ষম হয়নি এরূপ কোনো ব্যক্তি যদি আরোগ্য লাভের কয়েকদিন পর মারা যায় তাহলে যে কয়েকদিনের রোযা তার ফাওত হয়েছে এ পরিমাণ সময় সে সুস্থ থাকলে উক্ত দিনগুলোর ফিদইয়া আদায় করার জন্য ওসীয়াত করে যাওয়া তার উপর ওয়াজিব। আর যে কয়েকদিন সে সুস্থ ছিল এর পরিমাণ যদি ছুটে যাওয়া রোযার অপেক্ষা কম হয় তবে যে কয়দিন সে সুস্থ ছিল সে কয়েকদিনের ফিদইয়া আদায় করার ওসীয়াত করে যাওয়া তার উপর ওয়াজিব। কিন্তু অতিরিক্ত দিনসমূহের ওসীয়াত করা তার উপর ওয়াজিব নয়। (শামী ও আলমগীরী, ১ম খণ্ড)

রোযা অবস্থায় ইনজেকশন ও ডুস গ্রহণ
মুখ, নাক, কান,মূত্রনালি এবং গুহ্যদ্বার ইত্যাদির কোনো একটি দিয়ে মস্তিষ্ক ও পাকস্থলীতে কোনো কিছু প্রবেশ করলে তাতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ সকল অঙ্গ ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে দেহাভ্যন্তরে কোনো কিছু প্রবেশ করানোর দ্বারা রোযা ভঙ্গ হয় না।
মুখ, নাক, কান, মূত্রনালি ও গুহ্যদ্বার ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প উপায়ে যদি সরাসরি পাকস্থলী অথবা মস্তিষ্কে কোনো কিছু প্রবেশ করানো হয় তাতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি সরাসরি পাকস্থলী বা মস্তিষ্কে না পৌঁছে তবে রোযা ভঙ্গ হবে না। অতএব গোশতে অথবা রগে কোনো প্রকারের ইনজেকশনের দ্বারা রোযা ভঙ্গ হবে না। স্যালাইন, গ্লুকোজ ইনজেকশন বা ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে রক্ত প্রবেশ করানো দ্বারা রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া রোযা অবস্থায় এ জাতীয় ইনজেকশন না নেওয়া শ্রেয়।
ডুশ ব্যবহার বা হাঁপানীর প্রকোপ নিরসনের জন্য গ্যাস জাতীয় ঔষধ (ইনহেলার) ব্যবহারের দ্বারা রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (জাদীদ ফিকহী মাসাইল)

রোযা অবস্থায় রক্তদান অথবা রক্ত গ্রহণ
রোযা অবস্থায় প্রয়োজনবোধে শিংগা লাগানো জায়িয। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকলে রোযা অবস্থায় শিংগা লাগানো মাকরূহ হবে। এ কারণেই ফকীহগণ বলেন, সন্ধ্যার পর শিংগা লাগানো উত্তম। (আলমগীরী, ১ম খণ্ড)
কাজেই পরীক্ষার উদ্দেশ্যে অথবা রক্তদানের উদ্দেশ্যে কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে শরীর থেকে রক্ত বের করলে রোযা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু এতে শারীরিক দুর্বলতার আশঙ্কা থাকলে মাকরূহ হবে। তাই দিনে রক্ত না দিয়ে রাতে দেওয়াই উত্তম। রোগ ব্যাধির কারণে কারো রক্ত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ইনজেকশনের মাধ্যমে রক্ত গ্রহণ করলে রোযা ভঙ্গ হবে না। (জাদীদ ফিকহী মাসাইল)

রোযা অবস্থায় অপারেশন
মুখ গহ্বর, নাক ও কানের অভ্যন্তর ভাগ, প্র¯্রাব ও বাহ্য ইন্দ্রিয়ের অভ্যন্তরে, মস্তিষ্ক ও পাকস্থলীর যেকোনো স্থানে অপারেশন করে কোনো অংশ কেটে ফেলে দেওয়া হলে তাতে রোযা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু এ সকল অঙ্গে অপারেশনের পরে ঔষধ বা অন্য কোনো কিছু প্রবেশ করানো হলে তাতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। উপরোক্ত ইন্দ্রিয়গুলো ছাড়া শরীরের যেকোনো স্থানে অপারেশন করলে এবং ঔষধ বা অন্য কোনো কিছু প্রবেশ করানো হলে তাতে রোযা ভঙ্গ হবে না।

ক্ষতস্থানে ঔষধ ব্যবহার
দুই প্রকারের ক্ষত আছে, যাতে ঔষধ ব্যবহার করাকে ফকীহগণ রোযা ভঙ্গকারী বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন:
১. আম্মা (أمه)  ২. জায়িফা (جَائفة)
মাথার উপরিভাগের গভীর ক্ষত যা মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তাকে ‘আম্মা’ বলা হয়। এতে ঔষধ ব্যবহার করলে ঔষধ মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায়। আর জায়িফা (جَائفة) পেটের ঐ গভীর ক্ষত যা পাকস্থলীতে পৌঁছে গেছে। এতে ঔষধ ব্যবহার করলে ঐ পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছে যায়। উপরোক্ত জখমদ্বয় দ্বারা ঔষধ যেহেতু সরাসরি পাকস্থলী বা মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় তাই এই দুই ক্ষতস্থানে ঔষধ ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এছাড়া শরীরের অন্য কোনো জখমে ঔষধ ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হবে না। (আলমগীরী, শামী)
অর্শ (পাইলস) রোগের বটি সাধারণত গুহ্যদ্বার থেকে কিছু নীচে গজিয়ে থাকে। তাই অর্শের বটিতে বরফ দ্বারা সেক দিলে অথবা এতে জমাট কোনো ঔষধ ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হবে না। শিশু অর্শের বটিতে তরল ঔষধ ব্যবহার করলে এর কিছু অংশ যদি ভিতরে চলে যায় তবে তাতে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (আহসানুল ফাতাওয়া)
চোখের ক্ষতস্থানে ঔষধ ব্যবহার করলে এবং ঔষধের স্বাদ গলায় অনুভূত হলেও রোযা ভঙ্গ হবে না। (শামী, ২য় খণ্ড ও আহসানুল ফাতাওয়া, ৪র্থ খণ্ড)

আধুনিক যুগের কোনো কোনো ফকীহ চোখে তরল ঔষধ ব্যবহারের ফলে রোযা ভঙ্গ হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের যুক্তি এই যে, শরীর বিজ্ঞানীদের মতে চোখের ছিদ্রির সাথে গলার সরাসরি সংযোগ রয়েছে। তাই চোখে তরল ঔষধ ব্যবহার করলে তা গলায় পৌঁছে যেতে পারে। সতর্কতা হিসেবে দিনের বেলা চোখে ঔষধ ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

[রোযার মাসাইলগুলো ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ফাতাওয়া ও মাসাইল থেকে নেওয়া ও ইষৎ সম্পাদিত]

ফেইসবুকে আমরা...