1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
মর্দে মুজাহিদ সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) : জীবন ও অবদান
মাসুক আহমেদ
  • ৬ মে, ২০২১

সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) উনিশ শতকের প্রভাবশালী সূফীদের মধ্যে অগ্রগণ্য। তিনি উপমহাদেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর মুজাহিদ সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর অন্যতম খলীফা ছিলেন। নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী বালাকোট যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন এবং গাজীয়ে বালাকোট উপাধি লাভ করেন।১

বংশ পরিচয়
ইতিহাসবিদদের মতে তাঁর পূর্বপুরুষ ছিলেন ইরানী সূফীবংশোদ্ভূত। কালক্রমে তাঁরা আফগানিস্তানের গজনীতে সুলতান হন। গজনীর সুলতান বখতিয়ার কুতুব আলমের তিনি সপ্তম উত্তরপুরুষ। কারো কারো মতে, নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরীর সঙ্গে হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) এঁর বংশধর খালিদ বিন আবদুল্লাহর যোগসূত্র আছে। উমাইয়া শাসনকালে জনাব আবদুল্লাহ ৬৬৪ সালে কাবুলের শাসনকর্তা ছিলেন। আবার কারো মতে, তিনি ইরানের সূফীকবি আবু মুহাম্মাদ মুসলেহ উদ্দীন বিন আবদিল্লাহ শিরাজীর (শেখ সাদী) বংশধর।২ আনওয়ারুন নাইয়্যিরাইন গ্রন্থের বর্ণনা মতে, শাহ সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এর পূর্বপুরুষগণ গজনীর অধিবাসী ছিলেন। গজনী থেকে বাংলাদেশে আগমনের বহুল প্রচলিত ইতিহাস রয়েছে তা নিম্নরূপ-

বখতিয়ার নামে গজনীর বাদশাহর একজন ছেলে ছিল। বাদশাহ তাকে কুতুবে আলম নামে ডাকতেন। বাল্যকালেই বখতিয়ার পিতৃহারা হন। মৃত্যুকালে তার পিতা তাকে তার এক মামার রক্ষণাবেক্ষণে রেখে যান এবং সমস্ত রাজত্ব ও ধন-দৌলত  তাকে দিয়ে ওসীয়াত করেন; যদি ছেলে বড় হয়, তাহলে সমস্ত রাজত্ব ও ধন-দৌলত  ছেলেকে সমর্পণ করবে। বখতিয়ার বড় হবার পর তার পিতৃস¤পত্তি মামার নিকট দাবি করলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করেন। বরং তার উপর বিভিন্ন জুলুম, অত্যাচার করে তাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়। বখতিয়ার নিরুপায় হয়ে নিজপুত্র ফিরোজ শাহ ও কন্যা মায়মুনা খাতুন এবং কতেক সম্ভ্রান্ত লোককে সঙ্গে নিয়ে দেশ ত্যাগ করেন এবং দিল্লীর বাদশাহর নিকট উপস্থিত হন। দিল্লীর বাদশাহ রাজপুত্র হিসেবে বখতিয়ারকে খুব সম্মান করলেন।  ফলে বখতিয়ারের ভাগ্য আলোকিত হয়ে গেল। বাদশাহ তার অপরিসীম বুদ্ধিমত্তায় মুগ্ধ হয়ে তাকে গৌড় নামক স্থানের বাদশাহী প্রদান করেন।

বখতিয়ার দীর্ঘ দিন নিজ দায়িত্বে বহাল থেকে যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দেন। তার যোগ্যতা, দক্ষতা, কর্মপটুতা ও কর্তব্যপরায়ণতা স্থানীয় লোকদের ঈর্ষার কারণ হয়। বাদশাহকে এই বলে প্ররোচিত করল, তাকে যদি দেশ থেকে বহিষ্কার করা না হয়, তাহলে সে একসময় দিল্লীর বাদশাহীর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে। তাই স্থানীয় লোকজন ও বাদশাহ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। ফলে তিনি দিল্লীতে বসবাস করা কিংবা স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করা কোনোটাই উচিত নয় বলে মনে করে সুদূর নোয়াখালী জেলার দান্দিরা নামক স্থানে চলে আসেন। এখানে বখতিয়ারের বংশধর খ্যাতি অর্জন করে। ফিরোজ শাহ তার বোন মায়মুনা খাতুনকে সেনাপতি শুজা খাঁ এর সাথে বিবাহ দেন। ফলে মায়মুনাকে কেন্দ্র করে তাদের বংশ বিস্তার লাভ করে। মায়মুনা খাতুনের গর্ভে মিয়া মল্লিক জন্মগ্রহণ করেন। মিয়া মল্লিকের ঘরে ইবরাহীম জন্মগ্রহণ করেন। ইবরাহীমের ঘরে শেখ মুবারক ও শেখ বদ্দুহ জন্মগ্রহণ করেন। শেখ বদ্দুহ থেকে শেখ আমানুল্লাহ এবং শেখ আমানুল্লাহ থেকে শেখ নাসের মুহাম্মদ জন্মগ্রহণ করেন। তার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন শেখ মুহাম্মদ ফানাহ (র.)। তিনিই শাহ সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এর শ্রদ্ধেয় পিতা।

জন্ম
সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরীর জন্মসন ও জন্মস্থান নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভিন্নতা দেখা যায়। অধিকাংশের মতে তিনি ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে নোয়াখালী জেলার দান্দিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।৩

শিক্ষাজীবন
তাঁর পিতা শেখ মুহাম্মাদ ফানাহ কুরআন ও হাদীস বিশারদ আলিমে দ্বীন ছিলেন। তাঁর কাছেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর নোয়াখালী জেলার বাহমনী এলাকার বিশিষ্ট আলিম ও বুযুর্গ আজিমপুর দায়রা শরীফের সূফী দায়েমের খলীফা শেখ জাহিদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষা লাভ করেন। এরপর উচ্চ শিক্ষালাভের জন্য তিনি ঐতিহাসিক কলকাতা আলীয়া মাদরাসা গমন করেন। সেখান থেকে কুরআন, হাদীস, তাফসীর, ফিকহ, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে পা-িত্য অর্জন করেন। নূর মুহাম্মাদ আজমী তাঁর গ্রন্থে সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরীকে চট্টগ্রামের মুহাদ্দিসীনে কিরামের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। কারো কারো মতে আলিয়া মাদরাসায় অধ্যয়ন সমাপ্তের পর তাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।৪

তাসাওউফের তালীম
মাদরাসায় অধ্যয়নের পর তিনি আজিমপুর দায়রা শরীফের গদিনশিন সূফী সায়্যিদ লাক্বীত উল্লাহ (র.) এর কাছে নকশবন্দিয়্যাহ মুজাদ্দিদিয়াহ তরীকায় বায়আত গ্রহণ করে সূফী খেতাব লাভ করেন।৫ এরপর হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে কলকাতায় গিয়ে সায়্যিদ আহমাদ শহীদ বেরলভী (র.) এর কাছে কাদিরিয়া, চিশতিয়া, নকশবন্দিয়্যাহ-মুজাদ্দিদিয়া, মুহাম্মাদিয়া তরীকায় বায়আত গ্রহণ করেন।৬ আইনায়ে ওয়াইসী গ্রন্থের ১০২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে, একদা সায়্যিদ আহমদ শহীদ তিনমাস কলকাতায় অবস্থান করেন। এ সময় তাঁর প্রভাবে হাজার হাজার মুসলমান সঠিক পথ প্রাপ্ত হয়। সিলেট, চট্টগ্রাম এর দূর দূরান্ত থেকেও অনেক মুসলমান আসে এবং তাঁর নিকট বায়আত গ্রহণ করে সত্যিকার ও ধার্মিক মুসলমান হয়। সায়্যিদ মুহাম্মদ আলী স্বীয় গ্রন্থ মাখযানে আহমদী গ্রন্থে লিখেছেন, প্রত্যেক এলাকা ও অঞ্চল থেকে অগণিত মুসলমান তাঁর নিকট উপস্থিত হন। শিরক-বিদআতে লিপ্ত মুসলমানগণ এবং নাফরমান ও পাপীগণ নিজেদের খারাপ কর্ম থেকে তাওবা করে খাঁটি মুমিনের দলভুক্ত হয়। সে সময় চট্টগ্রাম জেলার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে মীরসরাই থানার অন্তর্গত মালিয়াইশ (মিঠানালা) গ্রামের জনৈক আলিম মাওলানা সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরীকে স্বপ্নে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে সুসংবাদ দেওয়া হয় যে, আমার আওলাদ সায়্যিদ আহমদ এসেছে, তুমি গিয়ে তাঁর হাতে বায়আত করো। অতঃপর সূফী নূর মুহাম্মাদ তাড়াতাড়ি কলকাতা আসলেন এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুসংবাদ অনুসারে আমীরুল মুমিনীন হযরত সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এর নিকট বায়আত গ্রহণ করেন।

সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) এর সুহবত
স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে বায়আত গ্রহণ করার পর ১৮২১-১৮৩১ এই দশ বছরের দীর্ঘ সময় তিনি মুরশিদের সরাসরি সুহবতে ছিলেন। ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুলাই, ১২৩৬ হিজরী সনের ২০ শাওয়াল ৪৩০ জন সঙ্গীসহ সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) কলকাতা থেকে হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ শরীফ রওয়ানা হন। পথিমধ্যে আরো ৭০০ জন এই মুবারক কাফেলায় যুক্ত হয়। সূফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী এই হজ্জের সফরে অন্যতম প্রধান সঙ্গী হিসেবে গমন করেন। জিহাদের সফরে সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) তাবুর সন্নিকটেই নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এর কামরা থাকত।৭

খিলাফত, দ্বীন প্রচার ও ফায়য প্রদানের নির্দেশ
বায়আত গ্রহণের পরেই তিনি পীরের নির্দেশে রিয়াযতে নিমগ্ন হন। সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) এর  তালীম তাওয়াজ্জুহের ফলে দ্রুত তিনি কামালতের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছান এবং খিলাফত লাভ করেন। পীর ও মুরশিদ কর্তৃক তিনি দ্বীন ও তরীকা প্রচার এবং সালিকদের মধ্যে ফায়য প্রদানের নির্দেশ প্রাপ্ত হন। তিনি ও তাঁর পীরভাইদের একান্ত প্রচেষ্টায় সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) এর কাফেলায় অসংখ্য সালিকের সমাবেশ ঘটতে থাকে তাঁরা সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) এর কাছে বায়আত হয়ে সুন্নাতে নববীর অনুসরণের প্রতি তৎপর হয়ে ওঠে। এমনকি এসময় প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জন বিধর্মী মুসলমান হতো। মাখযানে আহমদীর লেখক বলেন, ঐ সময় জনসমাজে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, (দেখলে) তুমি বলতে এ যেন নবীর যুগ পুনর্জীবন লাভ করেছে।৮

জিহাদের বায়আত ও অবদান
তরীকতের বায়আতের পাশাপাশি সূফী নূর মুহাম্মদ তাঁর পীর মুরশিদ সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর কাছে জিহাদেরও বায়আত গ্রহণ করেন। ১৮২৬ -১৮৩১ পর্যন্ত প্রায় ১৮টি ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। যেমন- আকুড়ার যুদ্ধ, নওশাহের যুদ্ধ, পাঞ্জতারের যুদ্ধ, মায়দার যুদ্ধ, শায়দুর যুদ্ধ, হাজারার যুদ্ধ, মাইয়ার যুদ্ধ ও ঐতিহাসিক বালাকোট যুদ্ধ। এছাড়া ফুলেড়া অভিযান, পেশোয়ার অভিযান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। মায়দার যুদ্ধে শত্রুপক্ষ কামানের গোলা ছুড়তে শুরু করলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে তখন সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) হাকীকতে মাকামে সাইফুল্লাহর ফায়য প্রয়োগ করেন ফলে নিজেদের সৈন্য রক্ষা ও শত্রুপক্ষকে ঘায়েল করার প্রথম পদক্ষেপ সফল হয়। এমনকি তিনি তাঁর নিজ হাত মুবারক দিয়ে কামানের গোলা হস্তগত করে অকার্যকর করে দেন। এর ফলশ্রুতিতে মুজাহিদ বাহিনী জয়লাভ করে। বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, কামান, গোলা, বারুদ ইত্যাদি হস্তগত হয়।৯

১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দে মাইয়ার যুদ্ধে ফজলুর রহমান বর্ধমানী শহীদ হন এবং মাওলানা আব্দুল হাকীম বাঙ্গালী ও সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) প্রমুখ জখমী হন। নওশাহের যুদ্ধে সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী অন্যতম সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিপক্ষের সহস্রাধিক সৈন্যের মুকাবিলা করেন। অসীম বীরত্ব ও সঠিক নেতৃত্ব সর্বোপরি আল্লাহ তাআলার গায়বী মদদে মুসলমানগণ উক্ত যুদ্ধে জয়লাভ করেন। এ সকল জিহাদে নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন, যুদ্ধের পূর্বে তিনি একটা রুমাল ঘুরিয়ে সেনাবাহিনীর চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করতেন এবং শত্রুপক্ষের তীর, বর্শা ইত্যাদি বিসমিল্লাহ বলে হাত দিয়ে ধরে ফেলতেন। অগণিত তীর, বর্শা ও বল্লমের আঘাতে তাঁর একহাত অবশেষে অবশ হয়ে যায় তবুও তিনি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেন নি। রণজিৎ সিং এর বাহিনীর সাথে এক যুদ্ধের প্রাক্কালে রণজিতের প্রাসাদের অদূরে আমীরুল মুমিনীন সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) তাঁর মুজাহিদ বাহিনী নিয়ে তাঁবু খাটান। নামাযের সময় হলে তিনি ঘোষণা দেন, “আজ ঐ ব্যক্তি আযান দিবেন যার (দীর্ঘ সময় উল্লেখপূর্বক) আসরের সুন্নাত নামায ছুটে যায়নি।” সেদিন সূফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী আযান দেন। কথিত আছে, তাঁর আযানের সাথে সাথে রণজিত সিং এর রাজমুকুট খসে পড়ে এবং ঝড় শুরু হয়।১০

বালাকোট যুদ্ধে অবদান
১২৪৬ হিজরীর ২৪ জিলকদ জুমুআ বার মুতাবিক ৬মে ১৮৩১ ইং সালে ঐতিহাসিক বালাকোট প্রান্তরে ইতিহাসখ্যাত বালাকোট যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। এ যুদ্ধে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩০০ জন এবং শিখদের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার। অপর্যাপ্ত রসদ ও প্রায় অস্ত্রবিহীন তিনশত মুসলিম মুজাহিদ বাহিনী বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ২০ হাজার শিখ সৈন্যকে বালাকোট প্রান্তর থেকে প্রায় ছয় মাইল দূরে হটিয়ে দেয়। কিন্তু কিছু পাঠানের বিশ্বাসঘাতকতায় অতর্কিত হামলায় মুজাহিদ বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে মুজাহিদে আযম সায়্যিদ আহমদ বেরলভী, শাহ ইসমাইল ও সায়্যিদ ওয়ারেস আলী প্রমুখ শাহাদাতের পেয়ালা পান করেন। এমন সঙ্কটকালে সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তাঁর ইমানদীপ্ত ভাষণে মুজাহিদ বাহিনীর মনোবল ফিরে আসে। অতঃপর দুর্নিবার গতিতে যুদ্ধ চলতে থাকে নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী একাই প্রায় দুই হাজার শিখকে হতাহত করেন। তাঁর মুবারক হাঁটুতে একটি গুলি বিদ্ধ হয়ে বের হয়ে যায় কিন্তু তাঁর কোন অনুভূতিই ছিল না, হাঁটু দিয়ে যখন অজস্র ধারায় রক্ত প্রবাহিত হতে লাগল এবং সেই পবিত্র রক্তের ধারায় কাপড় ভিজে গেল তখন তিনি অনুভব করতে পারলেন। এভাবে অবিরাম যুদ্ধ করার কারণে ও অনাহারে থাকার কারণে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকেন। তারপরেও তিনি ময়দান ছেড়ে যাননি। এক পর্যায়ে সারা শরীরে জখম ও রক্ত প্রবাহিত হতে থাকলে তিনি তরবারি ছেড়ে দিয়ে কবিতার পংক্তিতে আল্লাহ তাআলার দরবারে ফরিয়াদ করেন, “বরছুরম আমদওলে বিছিয়ার জোদ আজমন গুনদাসত, দৌলাত তেজী কেমীন গৌইয়ান্দ শমশির তাবুয়াদ।” অর্থাৎ “হে আমার রব! আমার মাথার উপর অনেক তীর তরবারি এসে পড়েছে কিন্তু তাতে আমার কোনো খবরই ছিল না বরং তরবারি আমাকে ঐশী প্রেরণা দেয় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে। কিন্তু আমি যে হীন দুর্বল হয়ে পড়েছি। আর যুদ্ধ করতে পারছি না।” ১১ বালাকোট যুদ্ধে এই বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘গাজীয়ে বালাকোট’ খেতাব প্রাপ্ত হন।

বালাকোট পরবর্তী জীবন
বালাকোট যুদ্ধের পর সূফী নূর মুহাম্মাদ কিছুকাল কলকাতায় অবস্থান করেন। একদা সূফী নূর মুহাম্মাদ গোলাম রহমান মসজিদে জামাআতের সহিত ইশার নামায পড়ার জন্য উপস্থিত হন। তখন ইংরেজ সরকারের একদল সিপাহী মসজিদটির চার পাশ ঘিরে ফেলে। পরিস্থিতি অনুধাবন করতে কারো অসুবিধা হলো না। সিপাহীরা অপেক্ষা করতে লাগল সূফী সাহেব নামায পড়ে বের হলেই গ্রেফতার করবে। অন্যান্য মুসল্লীগণ নামায শেষ করে স্ব স্ব গন্তব্যে ফিরে গেলেন। কেবলমাত্র সূফী নূর মুহাম্মাদ মসজিদের ভিতর আল্লাহর যিকরে মগ্ন। সিপাহীগণ ভাবল, তিনি আর কতক্ষণ মসজিদে থাকতে পারবেন, রাত্রি শেষে বাধ্য হয়েই তাকে বের হতে হবে এ ভেবে মসজিদ অবরোধ করে রাখল। তিনি যেন পালাতে না পারেন সেদিকে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রাখা হলো। কিন্তু স্বয়ং আল্লাহ যাঁর নেগাহবান, তাঁর অনিষ্ট সাধন করা কি মানুষের সাধ্য? ভোর হওয়ার পর সিপাহীরা সূফী সাহেবকে ডাকতে লাগল, মসজিদের ভিতর তন্ন তন্ন করে সন্ধান করা হলো কিন্তু তাঁর নাম গন্ধও পাওয়া গেল না। মহান আল্লাহ পাকের অপার করুণা ও অসীম কুদরতে সূফী নূর মুহাম্মাদ অলৌকিকভাবে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, ইংরেজ সিপাহীরা যখন উক্ত মসজিদ ঘেরাও করে রেখেছিল ঠিক একই সময়ে আসামের মুসলমানরা সূফী নূর মুহাম্মাদকে আসামে দেখতে পায়। এ সংবাদ জানতে পেরে ইংরেজ সরকার আরো বিচলিত হয়ে পড়ে। উক্ত ঘটনার কিছুদিন পর ইংরেজরা সংবাদ পেল যে, সূফী নূর মুহাম্মাদ গোলাম রহমান মসজিদের পার্শবর্তী একটি লঙ্গরখানায় অবস্থান করছেন। সংবাদ পাওয়া মাত্র কলিকাতা সিটি পুলিশের একটি বাহিনী অতর্কিতে সে লঙ্গরখানায় উপস্থিত হয় তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য। কিন্তু এবারও তিনি অলৌকিকভাবে রক্ষা পান। ইংরেজদের চক্রান্ত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এবার ইংরেজ সরকার আরেকটি কৌশল অবলম্বন করে। ইংরেজ সরকার সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরীর দৈনন্দিন কাজ-কর্মের রিপোর্ট করার জন্য কিছু গুপ্তচর নিয়োগ করে। কিন্তু আল্লাহ পাকের মহিমা গুপ্তচররা সূফী সাহেবের সান্নিধ্যে এসে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা দেখে আত্মসমর্পণ করে এবং মুসলমান হয়ে যায়। এভাবে ইংরেজ সরকার একের পর এক কৌশল গ্রহণ করে। কিন্তু তাদের সকল চেষ্টা ও চক্রান্ত ব্যর্থ হয়। এবার সূফী নূর মুহাম্মাদ কে হত্যা করার জন্য জনৈক দুষ্কৃতিকারীকে নিয়োগ করে। কিন্তু সে দুষ্কৃতিকারীও সূফী সাহেবের কারামত দর্শনে সূফী সাহেবের নিকট আত্মসমর্পণ করে এবং মুসলমান হয়ে যায়।১২

এরপর তিনি ফিরে এসে নিজামপুর পরগনার মলিয়াইশে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। এবং বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাঁর পীর মুর্শিদের প্রতিষ্ঠিত তরীকা-ই-মুহাম্মদীয়ার বার্তা প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। দ্রুততম সময়ে যদিও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা সহজসাধ্য ছিল না, তাই লোকজনের মনোযোগ আকর্ষণ এবং ইসলাম ধর্মের মৌলিক নীতি বিষয়ে লোকজনকে প্রশিক্ষণ দিতে তিনি তাঁর মসজিদ সংলগ্ন একটি খানকা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর বক্তব্য শুনতে এবং নিজেদেরকে তরীকায়ে মুহাম্মদিয়ার বিধি অনুযায়ী সজ্জিত করতে এই খানকায় বিপুল সংখ্যক লোক একত্রিত হতো। তিনি মুজাররাদ (চিরকুমার) ছিলেন। ১৩

সিলসিলাহ পরিচিতি ও অবদান
বাংলা অঞ্চলে সায়্যিদ আহমদ শহীদ (র.) এর দুইজন বিশিষ্ট খলীফা মাওলানা শাহ কারামত আলী জৌনপুরী (র.) ও সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এর সিলসিলাহের মাধ্যমে বিকাশ লাভ করে। উক্ত দুই মুবারক সিলসিলাহ’র মাধ্যমে দ্বীনের প্রচার প্রসারে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়। বিশাল সংখ্যক মানুষের ইসলাম গ্রহণ, ইসলামী তাহযীব, তামাদ্দুন ও সুন্নাতের ব্যাপক প্রচলন এবং অসংখ্য মসজিদ, মাদরাসা, খানকা, ইয়াতীমখানা, হিফযখানা, কিতাবখানাসহ বিভিন্ন দ্বীনী ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে এই সিলসিলাহদ্বয় দ্বীন ও দেশের কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখে।১৪

খলীফা
সূফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী (র.) এর খলীফাদের মধ্যে সূফী ফতেহ আলী ওয়াইসি বর্ধমানী (র.) ছিলেন প্রধান। তিনি কামালিয়াতের উচ্চ পর্যায়ের অধিকারী ছিলেন। তাঁর পিতা সায়্যিদ ওয়ারেস আলী বালাকোট যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। তিনি রুহানীভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অহরহ যিয়ারত পেতেন বিধায় তাঁকে ‘রাসূলে নুমা’ বলা হয়। তিনি উচ্চ পর্যায়ের আশিকে রাসূল ছিলেন। তরীকতের ইমামগণের কাছ থেকে তিনি রূহানী তালীম তারবিয়াতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বিধায় তাঁকে ওয়াইসী বলা হয়। ‘দিওয়ানে ওয়াইসী’ তাঁর ফারসি ভাষায় লিখিত ইশকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অমর কাব্যগ্রন্থ। তাঁর ৩৯ জন বিশিষ্ট খলীফা ছিলেন। এর মধ্যে ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দীদে জামান শাহ আবূ বকর সিদ্দিকী (র.) ছিলেন প্রধান খলীফা। তাঁর মাধ্যমে ফুরফুরা সিলসিলাহ বিকাশ লাভ করে। মুসলমানদের পশ্চাৎপদতার সময় তিনি ৮০০ ওল্ড স্কিম ও নিউ স্কিম মাদরাসা ও ১১০০ মসজিদ সহ বহু খানকা, সামাজিক ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। শিক্ষা, সমাজ সংস্কার ও উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেন। বাংলা ভাষায় ইসলাম চর্চায় কিতাব রচনা ও সংবাদপত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। তাঁর অন্যতম প্রধান খলীফা মাওলানা রুহুল আমীন বশীরহাটি (র.) একাই প্রায় ১৩৮টি কিতাব রচনা করেন। মুজাদ্দীদে যামানের আরেক বিশিষ্ট খলীফা সূফী ছদর উদ্দীন আহমদ শহীদ (র.) তাসাওউফের উপর ১৮টি কিতাব রচনা করেন। খলীফাদের মধ্যে পীর প্রফেসর আব্দুল খালেক (র.) পাকিস্তানের সংবিধানে শরীআর আইন বাস্তবায়নের জন্য গঠিত ‘তা’লীমাতে ইসলামিয়া’ বোর্ডের সদস্য ছিলেন। প্রফেসর আব্দুল খালেক (র.) তাঁর পীরের নির্দেশে বাংলা ভাষায় সর্ববৃহৎ ও সর্বাধিক তথ্যবহুল সিরাতগ্রন্থ ‘সায়্যিদুল মুরসালীন’ এর রচয়িতা। মুজাদ্দীদে জামান (র.) এর অন্যতম প্রধান ও বিশিষ্ট খলীফা সূফী নিসার উদ্দীন আহমদ (র.), যিনি ছারছিনা সিলসিলাহ’র প্রতিষ্ঠাতা। সূফী নিসার উদ্দীন (র.) বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন কামিল মাদরাসা ‘ছারছিনা দারুচ্ছুন্নাত কামিল মাদরাসা’ প্রতিষ্ঠাসহ বহু মসজিদ, মাদরাসা, খানকা, ইয়াতীমখানা প্রতিষ্ঠা, কিতাব ও সংবাদপত্র প্রকাশসহ বহুমাত্রিক খিদমত করেন। মুজাদ্দীদে যামানের খলীফাদের মধ্যে বহুভাষাবিদ জ্ঞানতাপস ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, সোনাকান্দার আব্দুর রহমান হানাফী, যশোরের সূফী তোয়াজুদ্দীন, মাওলানা হাতেম আলী বাগদাদী (র.) প্রমুখের মাধ্যমেও বহু খিদমত সাধিত হয়। যা এখনও তাঁদের খলীফা ও উত্তরসূরিদের মাধ্যমে জারী আছে।১৫

সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এর অন্যান্য খলীফাদের মধ্যে চট্টগ্রামের শাহ আহমদুল্লাহ (র.) খান বাহাদুর হামীদুল্লাহ খান (র.), মাওলানা আকরাম আলী নিজামপুরী (র.) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।১৬

বিশিষ্ট জনের মূল্যায়ন
১। ড. মুহাম্মদ আবদুল্লাহ তাঁর ‘বাংলাদেশে খ্যাতিমান আরবীবীদ (১৮০১- ১৯৭১)’ গ্রন্থে ২৩ জন বিশিষ্ট আলিমের নাম উল্লেখ করেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম সূফী নূর মুহাম্মদ নিজামপুরী (র.)।
২। প্রখ্যাত আলিম আল্লামা নূর মুহাম্মাদ আজমী (র.) তাঁর মিশকাত শরীফের বঙ্গানুবাদের ১ম খ- ২য় অধ্যায়ে ‘বঙ্গে ইলমে হাদীস’ সম্পর্কিত আলোচনায় সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) কে চট্টগ্রামের মুহাদ্দিসীনে কিরামের মধ্যে তালিকাভুক্ত করেন।
৩। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও ইসলামী গবেষক সায়্যিদ আবুল হাসান নদভী (র.) তাঁর রচিত ‘কারাওয়ানে ঈমান ও আজীমত’ গ্রন্থে বলেন, সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) ছিলেন বাংলা অঞ্চলে সায়্যিদ আহমদ বেরলভী (র.) এর প্রধান খলীফাদের একজন।১৭

উপসংহার
বাংলার এই অঞ্চলে মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরী (র.) এর পাশাপাশি সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এবং তাঁর খলীফাগণ নিজেদেরকে তরীকা তথা তরীকায়ে মুহাম্মাদীয়ার প্রচার ও প্রচারণায় গভীরভাবে নিয়োজিত করেন। এছাড়া মাওলানা ওলিয়ত আলী ও এনায়েত আলী রাজশাহী ও মালদায়, মাওলানা ইমাম উদ্দিন চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও নোয়াখালীতে এবং মাওলানা আবদুল্লাহ ঢাকায় এই আন্দোলনকে ছড়িয়ে দেন। সূফী নূর মুহাম্মাদ জিহাদ থেকে চট্টগ্রামের নিজামপুর পরগনার মলিয়াইশ গ্রামে ফিরে এসে আসাম, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে তাঁর পীর সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর আধ্যাত্মবাদ প্রচার করেন। সায়্যিদ আহমদ (র.) এর একনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে তাঁর অন্তর্গত গুণ, পবিত্র চরিত্র, অদম্য সাহস সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরীকে তাঁর ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত তরীকায়ে মুহাম্মাদিয়া প্রচারে নিয়োজিত রেখেছিল। ইতিহাসবিদ গোলাম রাসূল মেহের বলেন, সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) অত্যান্ত নিষ্ঠাবান, রিয়ামুক্ত, দ্বীনদার ও পরহেজগার বুযুর্গ ছিলেন। ইসলামী বিশ্বকোষের ১৪ খণ্ডে উল্লেখ আছে, “তিনি ছিলেন উঁচু মাপের আলিম ও মুহাদ্দিস। ছিলেন সমকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কামিল বুযুর্গ।” সূফী নূর মুহাম্মাদ নিজামপুরী (র.) এর পবিত্র জীবন যেন আসহাবে সুফফার নূরে জ্যোতির্ময়। তাঁর জীবনালেখ্য আমাদের সাহাবা কিরামের সেই জীবনাচারকেই যেন পুনর্পাঠ করায়। এই মহান মুহাদ্দিস ও বীর মুজাহিদ ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর, ১৩ কার্তিক ১২৬৬ বঙ্গাব্দ, ১২৭৫ হিজরীর রবীউল আউয়াল মাসের ২৪ তারিখ সোমবারে ইহধাম ত্যাগ করেন। চট্টগ্রামের মিরসরাইতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মসজিদের পাশেই তিনি শায়িত আছেন।

তথ্যসূত্র

১. ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, ইসলাম প্রসঙ্গ, মাওলা ব্রাদার্স, ২য় মুদ্রণ, ২০০০, পৃ. ১০১,  Shabnam Begum, Bengal’s Contribution to Islamic Studies During The 18th Century, PhD. Thesis, Aligarh Muslim University, 1994, P.7

২. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মিয়া, সীরাতে সূফী নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (র.), পৃ. ১৩

৩. মোহাম্মদ সাইফুল হক সিরাজী, নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (র.) এর জীবনী, পৃ. ৬

৪. মোহাম্মদ সাইফুল হক সিরাজী, মীর সরাইয়ের সুফী সাধক ও ইসলামিক ব্যক্তিত্ব, পৃ. ২৮

৫. মোশ্বদায়ে ফজলে হক, ১৩৫২ হিজরীতে মুদ্রিত, আজীমপুর দায়রা শরীফ, সিদ্দিক আহমদ খান, মাওলানা আব্দুল খালেক (র.) এর জীবনী পৃ. ৪৫০-৫১, ড. মতিউর রহমান খান, আইনায়ে ওয়াইসি, পৃ.১১৯

৬. ড. মো. ইবরাহীম খলিল, সূফীবাদ এবং প্রধান প্রধান সূফী ও তাঁদের অবদান, পৃ. ৩২১

৭. মুহা. মুবারক আলী রহমানী, সীরাতে- ওয়সী,পৃ. ২য় সংস্করণ, ২০১৭, পৃ. ২১-২২

৮. মাওলানা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন খান, সাইয়েদ আহমদ বেরেলভী (র.), পৃ.১২৩, মাওলানা রুহুল আমীন, কারামতে আহমদীয়া, পৃ. ৩৪

৯. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ মিয়া, প্রাগুক্ত পৃ.১৫৯-১৬৪, .মাওলানা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন খান, প্রাগুক্ত পৃ.২১৮

১০.চট্টগ্রামের সূফী সাধক, পৃ. ৯৩-৯৪, মুহা. মুবারক আলী রহমানী, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৩

১১. এম ওবাইদুল হক, বাংলাদেশের পীর আওলিয়াগণ, পৃ. ৩০৪, মাওলানা নুরুর রহমান, তাযকেরাতুল আওলিয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, এমদাদীয়া লাইব্রেরী, ১ম মুদ্রণ, ১৯৮২, পৃ. ২০৫-৯, মাওলানা আবুল লায়েস আনসারী, চল্লিশ আওলিয়ার কাহিনী, পৃ. ৫১৯-৫২৬, আব্দুল মান্নান চৌধুরী, সূফী নূর মুহাম্মদ র. এর জীবনী, পৃ. ৯

১২. মুহা. মুবারক আলী রহমানী, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৪, মাওলানা রুহুল আমীন, ফুরফুরা পীর সাহেবের বিস্তারিত জীবনী, ৬ষ্ঠ মুদ্রণ, পৃ. ২৩, মাওলানা আবুল লায়েস আনসারী, প্রাগুক্ত, পৃ. ৫২৬-৩১

Muhammad Ismail, Development of Sufism In Bengal, PhD. Thesis, Aligarh Muslim University, 1989, P. 33,34, ড. মুহম্মদ শেহাবুল হুদা ( দ্যা সেইন্টস এন্ড শ্রাইনস অব চিটাগাং) শীর্ষক অভিসন্দর্ভ এর অনুবাদ, শাহাব উদ্দীন নীপু, চট্টগ্রামেরর সূফী সাধক ও দরগাহ সুফিবাদ চর্চার হাজার বছর, পৃ. ১৩৯১৪. হামিদ উল্লাহ খান, আহাদিসুল খাওয়ানিন, কলকাতা, ১৮৩১, পৃ. ৩১৮ ইনস্ক্রিপশানস অব বেংগল, খন্ড ৪, পৃ. ২৮৭-৮৮

১৫. শেখ বোরহানুদ্দীন, হাদিয়াতুছ্ ছালেকীন, ১ম সংস্করণ, ১৯৬০, পৃ. ১৭-২০, আহমদুল ইসলাম চৌধুরী, শানে ওয়াইসী, ওয়াইসী হয়ে আজমগড়ী সিলসিলাহ, পৃ১৯,২৩, ৩৯, ড. আ. র.ম. আলী হায়দার, শিক্ষা বিস্তার ও সংস্কারে ফুরফুরার পীর আবু বকর সিদ্দীকী (র), ইফাবা, মে ২০০৪, পৃ. ১৩

১৬. ড. মুহম্মদ শেহাবুল হুদা (দ্যা সেইন্টস এন্ড শ্রাইনস অব চিটাগাং) শীর্ষক অভিসন্দর্ভ এর অনুবাদ, শাহাব উদ্দীন নীপু, প্রাগুক্ত পৃ. ১৪৬, ১৫৩, রশীদ আহমদ, বাংলাদেশের সূফীসাধক, ঢাকা, মার্চ, ১৯৭৪, পৃ. ৩৯, সৈয়দ দেলোয়ার হোসেন, জীবনী ও কারামত, ১ম সংস্করণ, পৃ. ৩৬, ড. মঈন উদ্দিন আহমদ খান, আ হিস্ট্রি অব ফরায়েজি মুভমেন্ট ইন বেংগল, ১৯৬৫, পৃ. ১১, আহমদুল ইসলাম চৌধুরী, প্রাগুক্ত পৃ.৩৬
১৭. মোহাম্মদ সাইফুল হক সিরাজী, নূর মোহাম্মদ নিজামপুরী (র.) এর জীবনী, পৃ. ২১

ফেইসবুকে আমরা...