1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
শিশুর হাতে মোবাইল নয় বই দিন
সায়্যিদা নাদিরা হুসেন
  • ৪ জুন, ২০২৩

মোবাইল একটি নিত্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র। এর ব্যবহারের ব্যাপকতা অনেক। তাই ছোট বড় সবার হাতেই মোবাইল ফোন দেখা যায়। কারো প্রয়োজনে, কারো বিনোদনে। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে আজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা।
শিশুদেরকে খাওয়ানো, ঘুমপাড়ানো, মনভোলানো, শান্ত করা এমনকি বর্ণমালা ও ছড়া শেখানোর কাজটিও মোবাইলের কারণে বাবা মায়ের জন্য অনেক সহায়ক হচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন। কিন্তু অভিভাবকরা বুঝতে পারছেন না এতে করে শিশুদের মোবাইল আসক্তি বাড়ছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুসারে বিশ্বের প্রতি তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একজন শিশু।
শিশুদের মোবাইল আসক্তির কারণ
ক) শিশুরা মাতাপিতাকে অনুসরণ করে। পিতামাতা শিশুদের সামনে মোবাইল বেশি ব্যবহার করলে মোবাইল ব্যবহারে তাদের কৌতুহল বাড়ে।
খ) মা-বাবা নিজেকে সময় দিতে গিয়ে শিশুর হাতে মোবাইল তুলে দেন। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মা-বাবার প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে ১-৫ বছরের শিশুদের মধ্যে মোবাইল আসক্তি বাড়ছে।
গ) শিশুদের দুষ্টুমি থেকে নিবৃত্ত করতে গিয়ে মোবাইল দেওয়া।
ঘ) পর্যাপ্ত খেলাধুলার মাঠ ও বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকা।
ঙ) সর্বোপরি অভিভাবকের অসচেতনতা ও আলসেমি।
কিভাবে বুঝবেন শিশু মোবাইল ফোনে আসক্ত
বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা শিশুর আচরণ দেখে নিচের বিষয়গুলোকে মোবাইল আসক্তি বলে চিহ্নিত করেছেন।
১। মোবাইল সরিয়ে নিলে কান্নাকাটি করে ও অপরিচিত কাউকে দেখলে সেখান থেকে সরে যায়।
২। রেগে যায় ও খিটমিটে স্বভাব হয়। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
৩। খাওয়া-দাওয়া ঠিকমত করে না।
৪। রাতে ঠিকমত ঘুমায় না। পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
৫। মা-বাবার অবাধ্যতা বেড়ে যায়, জেদ ধরে, ভাঙ্গচুর করে। এককথায় নেশাগ্রস্তের মতো আচরণ করে।
শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে বিশেষজ্ঞদের মতামত: দেশ বিদেশের চিকিৎসক, গবেষক, মনোবিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব বাস্তবে লক্ষ্য করে উদবিগ্ন। তাঁরা ইউটিউব, বিভিন্ন চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা প্যারেন্টিং, কনসাল্টিং ও বিভিন্ন কেস স্ট্যাডি তুলে ধরে শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন না দেওয়ার জন্য অভিভাবককে অনুরোধ করেছেন। কিছু কিছু অভিভাবক বলছেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুর কাজ সহজ হচ্ছে ও শিশুরা শিখতে পারছে। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে ভিন্ন কথা। বিজ্ঞানের দাবি, শিশুদের হাতে মোবাইল ফোনসহ কোনো ইলেকট্রনিক গেজেট দেওয়া উচিত নয়। এতে নানারকম রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হয় শিশু এবং তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়। নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা: প্রাণ গোপাল দত্ত একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে বলেন, মোবাইল ফোন শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এর থেকে নির্গতরশ্মি শিশুদের দৃষ্টিশক্তিকে ভীষণ ক্ষতি করে। তিনি মোবাইল ফোন শিশুদের জন্য সিগারেটের চেয়েও ক্ষতিকর বলে দাবি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজা মোবাইল ফোন শিশুদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার জন্য নীরব ঘাতক বলে আখ্যায়িত করেছেন। বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ আনোয়ারুল ফাত্তাহ একুশে টেলিভিশনের অনলাইনকে বলেন, শিশুদের মস্তিষ্ক ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে নির্গত ক্ষতিকর রশ্মি ধারণের উপযুক্ত নয়। তাছাড়া মোবাইলের যে ভলিউম তার কম্পন খুবই ভয়াবহ। শিশুরা এক নাগাড়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তাদের মৃগি রোগ ও হাঁপানীর ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুরা এক মিনিট মোবাইলে কথা বললে মস্তিষ্কে যে কম্পন সৃষ্টি হয় তা স্থির হতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। ওই গবেষণায় আরো দাবি করা হয় যেসব বাচ্চারা দৈনিক পাঁচ/ছয় ঘণ্টা মোবাইল ব্যবহার করে তাদের বুদ্ধির বিকাশ সাধারণ বাচ্চাদের তুলনায় কম হয়। বিশেষজ্ঞ জিনিয়া জেসমিন করিম (শিশু বিকাশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ) সমাধান সূত্রের এক অনুষ্ঠানে বলেন, চার বছরের আগে কোনো শিশুর হাতে যেন মোবাইল ফোন দেওয়া না হয়। তিনি বলেন, মোবাইল ব্যবহারের ফলে শিশুর ভাষার বিকাশ হয় না এবং শিশুর সামনে কোনো মা-বাবা মোবাইল ব্যবহার না করার অনুরোধ করেন। সম্প্রতি মাইক্রোসফট কর্তা বিল গেটস অভিভাবকদের অনুরোধ করেছেন, কোনো অবস্থাতেই তারা যেন চৌদ্দ বছরের আগে সন্তানের হাতে মোবাইল তুলে না দেন। তার নিজেরও ২০, ১৭ ও ১৪ বছরের তিন সন্তান। তাদের কেউই হাই স্কুলে ওঠার আগে মোবাইল হাতে পায়নি। গেটস জানিয়েছেন, বাবা মার দায়িত্ব পালন খুব সহজ কাজ নয়।
তাছাড়া খাওয়ার সময়, ঘুমানোর সময় ও রাস্তা পারাপারের সময় মোবাইল স্ক্রিন নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছেন ব্রিটিশ চিকিৎসক দল। শিশুকে আচরণগত সমস্যার ঝুঁকি থেকে দূরে রাখতে চাইলে তার হাতে স্মার্ট ফোন না দেওয়ার কথা বলেছে জার্মানির লাইপজিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডঐঙ) তথ্য অনুযায়ী মোবাইল ফোন থেকে নির্গত রেডিয়েশন পসিবলি কার্সিনোজেনিক অর্থাৎ এই রেডিয়েশন থেকে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা খুব বেশি। বিশেষ করে রেডিয়েশনের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি মস্তিষ্কে। কারণ শিশুদের ব্রেনের ত্বক, টিস্যু ও হাড় খুব পাতলা হয়। ফলে রেডিয়েশনের ক্ষতিকর প্রভাব প্রাপ্ত বয়স্কদের থেকে দ্বিগুণ বেশি। জার্নাল অব আমের%B

ফেইসবুকে আমরা...