কুরবানীর ইতিহাস অনেক প্রাচীন। পৃথিবীতে মানুষের ইতিহাসের সূচনা থেকেই কুরবানীর ইতিহাসের সূচনা। কুরআনে কারীমেও সেদিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, “প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কুরবানীর বিধান রেখেছিলাম, যাতে তারা নির্ধারিত পশু জবাই করার সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে এ জন্য যে, তিনি চতুষ্পদ জন্তু থেকে তাদের জন্য রিযক নির্ধারণ করেছেন।” (সূরা হাজ্জ, আয়াত-৩৪) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরগ্রন্থসমূহে উল্লেখ করা হয়েছে যে হযরত আদম (আ.) থেকে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত প্রত্যেক জাতিকে আল্লাহ তাআলা তার নৈকট্য লাভের জন্য কুরবানীর বিধান দিয়েছেন। ‘কুরবানী’ অর্থই হচ্ছে নৈকট্য হাসিলের মাধ্যম। কুরআনে কারীমে ‘কুরবানী’ শব্দটি উল্লেখের মাধ্যমেও বিশেষ এই আমলের গুরুত্ব, মর্যাদা ও তাৎপর্য অনুধাবন করা যায়।
মানবজাতির ইতিহাসে প্রথম মানব হযরত আদম (আ.) এর দুই পুত্র কাবিল ও হাবিলের মাধ্যমেই প্রথম কুরবানী শুরু হয়। পৃথিবীতে অবতরণের পর হযরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) এর সন্তান জন্ম হতে লাগলো। ধীরে ধীরে মানুষ বাড়তে লাগলো পৃথিবীতে। হযরত হাওয়া (আ.) এর গর্ভে সন্তান জন্ম নিতো জোড়ায় জোড়ায়। প্রতি জোড়ায় একজন ছেলে আর একজন মেয়ে জন্ম হতো। একই জোড়ার ছেলে ও মেয়েরা পরস্পর বিয়ে করতে পারবে না। বিয়ে করতে হলে ভিন্ন জোড়ার কাউকে করতে হবে। কাবিল ও হাবিল ছিল ভিন্ন জোড়ার। কিন্তু হাবিলের জোড়ার মেয়েটি তেমন সুন্দরী ছিল না। সেই তুলনায় কাবিলের জোড়ার মেয়েটি ছিল বেশি সুন্দরী। নিয়ম অনুসারে হাবিল বিয়ে করবেন কাবিলের জোড়ার মেয়েটিকে আর কাবিল বিয়ে করবেন হাবিলের জোড়ার মেয়েটিকে। কিন্তু কাবিল বেঁকে বসে, সে হাবিলের জোড়ার মেয়েটিকে বিয়ে করবে না। যেভাবেই হোক, নিজের জোড়ার সুন্দরী মেয়েটিকেই বিয়ে করবে।
এমতাবস্থায় পিতা হযরত আদম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে একটি মীমাংসা করলেন। তাদের দুজনকে আল্লাহর নামে কুরবানী দিতে হবে। যার কুরবানী আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে, তার ইচ্ছাই গ্রহণ করা হবে। এখন কার কুরবানী গৃহীত হলো আর কার কুরবানী গৃহীত হলো না, তাও বুঝা যাবে। যার কুরবানী কবূল হবে আসমান থেকে আগুন এসে ঐ কুরবানীকে পুড়িয়ে দিবে।
পিতা আদম (আ.) এর দেওয়া মীমাংসা অনুসারে তারা উভয়েই কুরবানীর বস্তু উপস্থাপন করলো আল্লাহর কাছে। হাবিল একটি সুস্থ ও মোটাতাজা দুম্বা কুরবানী করলো আর কাবিল তার কিছু সবজি ও শস্য উৎসর্গ করলো। আল্লাহ পাক হাবিলের কুরবানীকেই কবূল করলেন। উপর থেকে আগুন দিয়ে দুম্বাটিকে পুড়িয়ে নিলেন। যেহেতু আল্লাহ পাক হাবিলের কুরবানী কবূল করেছেন, সে হিসেবে বিয়ের নিয়ম আগের মতোই রইলো, হাবিল বিয়ে করবেন কাবিলের জোড়ায় জন্ম নেয়া মেয়েটিকে আর কাবিল হাবিলের জোড়ার মেয়েটিকে। কিন্তু কাবিল এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারলো না। কুরবানী কবূল না হওয়াতে এবং স্ত্রী হিসেবে কাক্সিক্ষত মেয়েকে না পাওয়াতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল। ক্রোধের বশে হাবিলকে সে বললো, আমি তোমাকে হত্যা করবো। কাবিলের এমন আচরণে হাবিল শান্তভাবে একটি সুন্দর জবাব দিলেন যেটা কুরআনে কারীমে মানবজাতির শিক্ষার জন্য আল্লাহ পাক তুলে ধরেছেন। হাবিল জবাব দিয়েছিলেন, “আল্লাহ পাক কেবল মুত্তাকীদের পক্ষ থেকেই কবূল করেন।” এ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত একটি শিক্ষা উপস্থাপন করা হয়েছে; আর সেটা হলো, যে কুরবানী একমাত্র আল্লাহর ওয়াস্তে, তাকওয়ার ভিত্তিতে এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হয়, কেবল সে কুরবানীই আল্লাহ কবূল করেন।
ফাতহুল কাদীরের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, হাবিলের পেশকৃত দুম্বাটিকে জান্নাতে উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং তা জান্নাতে বিচরণ করতে থাকে। পরবর্তীতে ইবরাহীম (আ.) ইসমাঈল (আ.) এর কুরবানীর ঘটনায় ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.) আসমান থেকে এই দুম্বা নিয়েই অবতরণ করেন এবং ইসমাঈল (আ.) এর পরিবর্তে এই দুম্বা কুরবানী করা হয়। সেজন্য কুরআনে কারীমে আল্লাহ পাক এই কুরবানীকে “যিবহুন আযীম’ বা মহান কুরবানী নামে অভিহিত করেছেন। উল্লেখ্য, কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে হযরত ইবরাহীম (আ.) জান্নাতী সেই দুম্বার শিং স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কাবা শরীফের দেওয়ালে ঝুলিয়ে রাখেন। ৬৪ হিজরীর মুহাররাম মাসে পাপিষ্ঠ ইয়াযিদের নির্দেশে যখন পবিত্র মক্কা নগরী অবরোধ করা হয় এবং কাবা ঘরে আগুনের বারুদ নিক্ষেপ করা হয়, সে সময় কাবা ঘরের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয় এবং ইসমাঈল (আ.) এর স্মৃতিচিহ্ন বহনকারী সেই দুম্বার শিংটিও ভস্মীভূত হয়ে যায়।
হযরত ইবরাহীম (আ.) কর্তৃক প্রিয় পুত্র ইসমাঈল (আ.) এর কুরবানীর ঘটনা ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায়। বস্তুতঃ ইসলামী শরীআতের কুরবানী এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত; যেটা হাদীস শরীফ দ্বারাও প্রমাণিত। সাহাবায়ে কিরাম একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি আরয করে বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! কুরবানী কী?’ রাসূল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের পিতা ইবরাহীম (আ.) এর সুন্নাত।’ তাঁরা আবার জিজ্ঞেস করেন, ‘এতে কী পাওয়া যায়?’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘প্রতি লোমের বিনিময়ে একটি করে নেকি’। (ইবনু মাজাহ)
আল্লাহর নবী হযরত ইবরাহীম (আ.) কে আল্লাহ পাক জীবনে কঠিন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। তিনি ছিলেন নিঃসন্তান। ছিয়াশি বছর বয়সে আল্লাহ পাক তাঁকে প্রথম সন্তান ইসমাঈল (আ.) কে দান করেন। পরম আশা ও অব্যাহত দুআর পর ছিয়াশি বছর বয়সে তিনি যে সন্তান লাভ করেন, পরে দেখা যায় সেই সন্তানই একের পর এক পরীক্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রী হাজেরা ও দুগ্ধপোষ্য ইসমাঈলকে সুদূর হিজাযের জনমানবশূন্য ধু-ধু মরুভূমিতে রেখে আসা সেই পরীক্ষারই এক দৃশ্যপট।
ইসমাঈল (আ.) শিশু থেকে কৈশোরে পদার্পণ করলেন। তাফসীরে রূহুল বয়ানে আছে ৯ বছরের কথা। কোন কোন বর্ণনায় তিনি যখন ১৩ বছরে উপনীত হলেন একদিন পিতা এসে বলেন, ‘প্রিয় বৎস, আমি স্বপ্নে দেখেছি তোমাকে আমি জবাই করছি। বলো, তোমার কী মত?’ বালক ইসমাঈল (আ.) নিঃসঙ্কোচে জবাব দেন, ‘আব্বাজান! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা পালন করুন। আমাকে ইন শা আল্লাহ ধৈর্যশীলদের মধ্যেই পাবেন।’ হযরত ইসমাঈল (আ.) এর এই উত্তম জবাব এবং নিঃসঙ্কোচ আত্মসমর্পণ ছিল পিতার প্রতি পুত্রের এবং প্রতিপালকের প্রতি মানবকুলের আনুগত্যের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
এ কথা অকাট্যভাবে প্রমাণিত সত্য যে, নবী রাসূলগণের স্বপ্নও ওহীর অন্তর্ভূক্ত। তাই এ স্বপ্নের অর্থ ছিল এই যে, আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে হযরত ইবরাহীম (আ.) এর একমাত্র পুত্রকে জবাই করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ হুকুমটি স্বপ্নের মাধ্যমে দেওয়ার কারণ হলো হযরত ইবরাহীম (আ.) এর আনুগত্যের বিষয়টি পূর্ণমাত্রায় প্রমাণিত করা। পিতা-পুত্র মহান প্রতিপালকের নির্দেশ সত্বর পালনের নিমিত্তে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন এবং এ কাজ সমাধার জন্য তারা মক্কা শরীফের অদূরে মিনা প্রান্তরে গমন করেন। পুত্র ইসমাঈল পিতা ইবরাহীম (আ.) কে বললেন, আব্বাজান! আমার হাত-পা খুব শক্ত করা বেঁধে নিন যাতে আমি নড়াচড়া করতে না পারি। অন্যথায় আমার সাওয়াব কমে যেতে পারে। আর আপনার পরিধেয় বস্ত্রাদি সামলে নিন, যাতে আমার রক্তের ছিটা তাতে না পড়ে, কেননা রক্ত দেখলে আমার মা অধিক ব্যাকুল হয়ে যেতে পারেন। আপনার ছুরিটি ভালো করে ধার দিয়ে নিন এবং আমার গলায় দ্রুত চালাবেন, যাতে আল্লাহর ডাকে সাঁড়া দিতে আমার দেরি না হয়। আমাকে আপনি উপুড় করে শোয়াবেন, কেননা কুরবানী করার সময় আমার চেহারার উপর আপনার দৃষ্টি পড়লে পুত্রের প্রতি বাৎসল্য আপনার কাজে বিঘœ ঘটাতে পারে। একমাত্র আদরের সন্তানের মুখে এমন কথা শুনে পিতার মানসিক অবস্থা কি যে হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু হযরত ইবরাহীম (আ.) দৃঢ়তায় অটল থেকে ইসমাঈল (আ.) কে সোজা করে শুইয়ে দিয়ে তার গলায় ছুরি চালালেন। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, বার বার ছুরি চালানো সত্ত্বেও গলা কাটছে না। হযরত ইবরাহীম (আ) এবং ইসমাঈল (আ.) এর আত্মসমর্পণে মহান আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন। আল্লাহ বলেন, ‘অবশেষে যখন পিতাপুত্র উভয়ে আল্লাহর কাছে নিজেদের আনুগত্যের শির নত করে দিল এবং ইবরাহীম (আ.) পুত্রকে উপুড় করে শুইয়ে দিলেন (জবাই করার জন্য), তখন আমি ডাক দিয়ে বললাম, হে ইবরাহীম! তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছ।’ (সূরা আস-সাফফাত, আয়াত-১০৫)
হযরত ইবরাহীম (আ.) যখন পুত্রের গলায় ছুরি চালাতে লাগলেন, তখন হযরত জিবরাঈল (আ.) আল্লাহর নির্দেশে বেহেশত থেকে নির্ধারিত দুম্বা নিয়ে রওয়ানা হলেন। আকাশ থেকে তিনি এ সময় উচ্চস্বরে ধ্বনি দিতে থাকেন ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’। এমন মধুর ধ্বনি শুনে হযরত ইবরাহীম (আ.) স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে উঠলেন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার’। হযরত ইসমাঈল (আ.) পিতার মুখে তাওহীদের বাণী শুনতে পেয়ে দৃঢ় কণ্ঠে বলে উঠলেন, ‘আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’ হজরত জিবরাঈল (আ.) এবং দুই নবীর কালামগুলো আল্লাহর কাছে এতই পছন্দনীয় হলো যে, কিয়ামত পর্যন্ত ঈদুল আদ্বহা এবং ঈদুল ফিতরের দিনগুলোতে বিশ্ব মুসলিমের কণ্ঠে ওই কালামগুলো উচ্চারিত হতে থাকবে।
মহান আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইবরাহীম (আ.) পুত্রকে ছেড়ে দিলেন এবং আসমান থেকে প্রেরিত দুম্বাটিকে জবাই করলেন। এটাই সেই কুরবানী যা আল্লাহর দরবারে এতই প্রিয় ও মাকবুল হয়েছিল যে, আল্লাহ তাআলা পরবর্তী সকল উম্মতের মধ্যে তা অবিস্মরণীয় রূপে বিরাজমান রাখার ব্যবস্থা করে দিলেন। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেনে, ‘আর আমি তাঁর (ইসমাঈলের) পরিবর্তে জবাই করার জন্য দিলাম একটি মহান কুরবানী। এবং পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে চিরকালের জন্য তার সুনাম ও সুখ্যাতি রেখে দিলাম’- (আস সা-সাফফাত, আয়াত-১০৭-১০৮)। আল্লাহ তাআলা নিজের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কুরবানীর এই সুন্নত জারী রাখার মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে হযরত ইবরাহীম (আ.) এর সুনাম ও সুখ্যাতি ধরে রাখবেন।
কুরবানী ইসলামের একটি ‘মহান নিদর্শন’ যা ‘সুন্নাতে ইবরাহীম’ হিসেবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে মদীনায় প্রতি বছর আদায় করেছেন এবং সাহাবীগণও নিয়মিতভাবে কুরবানী করেছেন। অতঃপর অবিরত ধারায় মুসলিম উম্মাহর সামর্থ্যবানদের মধ্যে এটি চালু আছে। কুরবানীর আমল কুরআন, সুন্নাহ এবং ইজমায়ে উম্মত দ্বারা সুপ্রমাণিত। কুরবানী, আত্মসমর্পণ ও আত্মত্যাগের এ প্রেরণা ও চেতনা সমগ্র জীবনে জাগ্রত রাখার জন্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আরো নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘বলুন, আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সবকিছু আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য, যার কোন শরীক নেই। এরই নির্দেশ আমাকে দেওয়া হয়েছে এবং আমিই প্রথম মুসলিম (আল্লাহর প্রতি আত্মসপর্মণকারী)’- (সূরা আনআম, আয়াত-১৬২-১৬৩)
পবিত্র কুরআনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- ‘অতএব নামায আদায় কর তোমার রবের উদ্দেশ্যে এবং ‘নাহর কর।’ (সূরা কাউসার, আয়াত-০২) মুফাসসিরীনে কিরামের মতে এখানে ‘নাহর’ অর্থ কুরবানী। তাফসীরে রূহুল মাআনীর ভাষ্যমতে কতিপয় ইমাম ঐ আয়াত দ্বারা কুরবানী ওয়াজিব হওয়াকে প্রমাণ করেছেন। তিরমিযী শরীফের হাদীসে আছে- হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশ বছর মদীনায় ছিলেন এবং প্রতি বছর কুরবানী করেছেন।’ হযরত মুল্লা আলী কারী (র.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বছর কুরবানী করায় কুরবানীর আমল ওয়াজিব হওয়ার প্রমাণ বহন করে।’ এজন্য ইমাম আবূ হানীফা (র.) নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের উপর কুরবানীকে ওয়াজিব মনে করেন।
হযরত ইবরাহীম (আ.) এর প্রতি নিজ সন্তানকে কুরবানীর এ নির্দেশ ও উদ্দেশ্য ছিল পিতা-পুত্রের আনুগত্য ও আল্লাহর ভয়ের পরীক্ষামাত্র। সে পরীক্ষায় পিতা-পুত্র যেমন উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তেমনি তাদের তাকওয়ার পরিচয়ও ফুটে উঠেছিল। সুতরাং কুরবানী নিছক একটি উৎসব নয়, কুরবানী হচ্ছে আল্লাহর প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ আত্মসমর্পণের এক অনুপম দীক্ষা এবং তাকওয়া অর্জনের এক দীপ্ত অঙ্গীকার।