1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে ফকীহগণের মর্যাদা
মো. মুহিবুর রহমান
  • ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি আমাদের সুন্দর জীবনবিধান দিয়েছেন। সালাত ও সালাম সায়্যিদুল মুরসালীন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি, যিনি মানুষের জীবনবিধানের প্রায়োগিক বিশ্লেষণ করেছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআন-সুন্নাহ সংরক্ষণের পাশাপাশি দীনের বিভিন্ন দিক সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। কুরআন-সুন্নাহ থেকে মানুষের জীবনবিধানের খুঁটিনাটি সকল ধারা-উপধারা বের করে আনার নামই হলো ইলমুল ফিকহ। যারা ফিকহশাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করে কাক্সিক্ষত মানে উত্তীর্ণ হতে পারেন, তাদেরকে বলা হয় ফকীহ।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে ফিকহ ও ফকীহগণের মর্যাদা ছিল আকাশচুম্বী। সাহাবীগণের মধ্যে যারা ফকীহ ছিলেন, তাদের কাছে অন্যান্য সাহাবী ও তাবিঈগণ ফতওয়া জিজ্ঞাসা করতেন এবং সেই ফতওয়া অনুসারে আমল করতেন। পর্যায়ক্রমে এই ফিকহী ধারা বিস্তার লাভ করে, মাসআলার জবাব খুঁজে বের করতে ফিকহ ও উসূলুল ফিকহ শাস্ত্র বিধিবদ্ধ রূপ লাভ করে।
মুসলিমদের মধ্যে কিছু লোককে ফকীহ হওয়ার তাগিদ দিয়ে আল্লাহ বলেন,
فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنْذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ.
-তাদের (মুসলিমদের) প্রত্যেক গোত্র থেকে একদল লোক কেন (রাসূলের সঙ্গে) বের হয় না? যাতে তারা দীনের সঠিক বুঝ লাভ করতে পারে এবং ফিরে এসে নিজ গোত্রের লোকদের সতর্ক করতে পারে, যাতে তারা সতর্ক হয়। (সূরা তাওবাহ, আয়াত-১২২)
আল্লাহর বাণীর মর্ম হচ্ছে, কিছু লোক দীনের ফকীহ হয়ে নিজ গোত্রের লোকদেরকে সতর্ক করবে ও দীনের সঠিক জ্ঞানের আলোকে পরিচালিত করবে। সেই সঙ্গে গোত্রের লোকদেরকেও তাদের নির্দেশনা অনুসারে চলতে বলা হয়েছে। সুতরাং কিছু মানুষ দীনের পূর্ণাঙ্গ বুঝ অর্জন করবে, আর কিছু মানুষ তাদের শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণ করে জীবন চালাবে- এটাই কুরআনের নির্দেশনা।
ফকীহগণের মর্যাদা সর্বমহলেই স্বীকৃত। বর্তমান সময়ের কিছু মানুষের কাছে একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় যে, কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসারেই আমল করতে হবে, ফকীহদের কথায় ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। আসলে তারা বুঝতেই চান না যে, ফকীহগণ কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসারেই ফিকহী সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান ছাড়া ফকীহ হওয়া অসম্ভব এই বিষয়টা তারা বেমালুম চেপে যান। বক্ষ্যমান প্রবন্ধে আমরা প্রাচীন যুগের প্রথিতযশা মুহাদ্দিসগণের দৃষ্টিতে ফকীহগণের মর্যাদা আলোচনার অভিলাষ পোষণ করছি। কেননা তাঁরাই ছিলেন হাদীসে নববীর প্রকৃত ধারক ও বাহক, তাঁদের মাধ্যমেই আমরা হাদীস জানতে পেরেছি।
ইলমে হাদীসের জগতে সুপরিচিত তাবিঈ সুলাইমান আল আমাশ (র.) ছিলেন ইমাম আবূ হানীফা (র.) এর উস্তায। বুখারী-মুসলিমসহ সকল মুহাদ্দিস তাঁর বর্ণিত হাদীস উদ্ধৃত করেছেন। একদিন জনৈক ব্যক্তি এসে তাঁকে একটি মাসআলা জিজ্ঞেস করল। তিনি জবাব দিতে পারলেন না। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইমাম আবূ হানীফা (র.)। তিনি অনুমতি নিয়ে জবাব দিলেন। আমাশ (র.) বিস্ময়াভিভূত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কোথায় পেয়েছ? আবূ হানীফা (র.) বলেলেন, কেন? আপনিই তো অমুকের সূত্রে অমুক থেকে এই হাদীস আমাকে শুনিয়েছেন! এভাবে তিনি একাধিক সূত্রে আমাশের হাদীসগুলো এক মুহূর্তেই তার সামনে তুলে ধরেন। আমাশ তখন বললেন,
أيها الفقهاء أنتم الأطباء ونحن الصيادلة
-ফকীহগণ! তোমরা হলে চিকিৎসক, আর আমরা ঔষধ বিক্রেতা। (আবূ নুআয়ম; মুসনাদ আবূ হানীফা, আল কামিল)
ঔষধ বিক্রেতার কাজ ঔষধ বিক্রি করা, আর ডাক্তারের কাজ হলো কোন রোগের জন্য কোন ঔষধ লাগবে তা নির্ধারণ করা। অনুরূপ মুহাদ্দিসগণের কাজ হাদীসের সনদ যাচাই-বাছাই করে মানুষের কাছে বর্ণনা করা, আর ফকীহগণের কাজ হলো কোন হাদীস দ্বারা কোন হুকুম নির্ধারণ করা হবে, কীভাবে নির্ধারিত হবে ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা করে শরীআতের বিধান বর্ণনা করা।
ইমাম বুখারী (র.) কে বলা হয় “আমীরুল মুমিনিন ফিল হাদীস”। একইসঙ্গে ফিকহের ক্ষেত্রে তাকে একজন মুজতাহিদ মনে করা হয়। তাঁর সহীহ বুখারী গ্রন্থের রয়েছে বিশ^জোড়া খ্যাতি। সহীহ বুখারীর পাঠক যদি একটু মনোযোগ দিয়ে ইমাম বুখারীর কিতাব সাজানোর পদ্ধতি লক্ষ্য করেন, তাহলে এই বিষয়টি পরিষ্কার বুঝা যাবে যে, সহীহ বুখারী মূলত ফিকহী নিয়মের আলোকেই রচিত। কেননা তিনি প্রত্যেক অধ্যায়ে বিভিন্ন তরজমাতুল বাব তথা শিরোনাম প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সেই শিরোনামের অধীনে সংশ্লিষ্ট হাদীস অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁর শিরোনামসমূহ এক একটা ফিকহী সিদ্ধান্তের নির্যাস। এজন্যই মুহাদ্দিসগণের কাছে প্রসিদ্ধ একটা উক্তি হচ্ছে,
فقه البخاري في تراجمه
-বুখারীর ফিকহ তাঁর তরজমাতুল বাবে নিহিত।
এ সম্পর্কে ইমাম নববী (র.) বলেন, “বুখারী (র.) এর উদ্দেশ্য কেবল হাদীস উল্লেখের সাথে সীমিত নয় বরং হাদীস থেকে বিধান বের করা ও তাঁর উদ্দিষ্ট বাবের উপর দলীল প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর লক্ষ্য। এজন্যই তিনি অনেক বাবে হাদীস উল্লেখ না করে সংক্ষেপে কেবল একথা বলেছেন যে, ‘এতে অমুকের থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস রয়েছে’ বা তিনি অনুরূপ কথা বলেছেন। কখনো বর্ণনাকারীদের নামের পরম্পরা তথা সনদ ছাড়া কেবল হাদীসের মূল ভাষ্য তথা মতন উল্লেখ করেছেন, কখনো হাদীসকে মু‘আল্লাক হিসেবে (সনদের প্রথম দিকের রাবীদের নাম বাদ দিয়ে কেবল শেষ রাবীর নাম বহাল রেখে) উল্লেখ করেছেন; এসব করেছেন কেবল তরজমাতুল বাবে উল্লেখকৃত মাসআলার প্রমাণ প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে।” (ইবনু হাজার, হাদইউস সারী মুকাদ্দিমাতু ফাতহিল বারী, আর-রিসালাহ আল-আলামিয়্যাহ, খ.১, পৃ. ১১)

তাছাড়া সহীহ বুখারীর বিভিন্ন স্থানে তিনি বিভিন্ন ফিকহী মতামত তুলে ধরেছেন। সাহাবীদের মাযহাব, তাবিঈদের ফিকহী সিদ্ধান্ত গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন। ক্ষেত্রবিশেষে মতবিরোধপূর্ণ মাসআলায় প্রতিপক্ষের ফিকহী দলীল ও ইজতিহাদী যুক্তি খ-ন করেছেন। এসব কিছু প্রমাণ করে ইমাম বুখারী (র.) ইলমুল ফিকহ ও ফকীহগণের কদর করতেন।
সহীহাইন ছাড়া সিহাহ সিত্তার অপর চারটি গ্রন্থের প্রণেতা ইমাম আবূ দাউদ, তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ (র.) সকলেই তাঁদের হাদীস গ্রন্থসমূহকে ফিকহের ধারাবাহিকতা অনুসারে সাজিয়েছেন। আর এজন্য এ চারটি গ্রন্থকেই ‘আস-সুনান’ বলা হয়। ইমাম আবূ দাউদ (র.) তাঁর সুনান গ্রন্থকে কেবল আহকাম সংশ্লিষ্ট হাদীসের মধ্যেই সীমিত রেখেছেন।
এই চারটি সুনান গ্রন্থের মধ্যে সুনানুত তিরমিযীর কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সুনানুত তিরমিযীকে জামি‘উত তিরমিযীও বলা হয়। ইমাম তিরমিযী (র.) হাদীস বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গে ফকীহগণের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,
جميع ما في هذا الكتاب من الحديث فهو معمول به وقد أخذ به بعض أهل العلم ما خلا حديثين.
-দুটো হাদীস ছাড়া এই কিতাবের সমস্ত হাদীস অনুসারে আমল করা হয় এবং এই হাদীসসমূহ দ্বারা আহলে ইলমের কেউ না কেউ দলীল দিয়েছেন।” (আল-ইলালুস সগীর)
হাদীসের সাথে ফকীহগণের সম্পর্ক বুঝাতে ইমাম তিরমিযী বলেন, كذلك قال الفقهاء وهم أعلم بمعاني الحديث-ফকীহগণ এমনটাই বলেছেন। আর হাদীসের মর্ম সম্পর্কে তারাই সবিশেষ জ্ঞাত। (জামিউত তিরমিযী, আবওয়াবুল জানাইয, বাবু মা জা-আ ফি গুসলিল মায়্যিতি)
এভাবে ইমাম তিরমিযী তাঁর সুনান গ্রন্থের অসংখ্য জায়গায় ফকীহগণের বক্তব্য ও বিভিন্ন মাযহাবের সিদ্ধান্ত উল্লেখ করেছেন। কোন পক্ষে অধিক ফকীহ রয়েছেন তাও উল্লেখ করেছেন, ফকীহগণের দলীল গ্রহণের পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন, কোন হাদীসের উপর সাধারণভাবে আমল প্রচলিত আছে ইত্যাদি অসংখ্য ফিকহী আলোচনায় ভরপুর কিতাব হলো জামিউত তিরমিযী। প্রাচীন যুগের এ সকল শীর্ষস্থানীয় হাদীসবিদের কর্মপদ্ধতি দেখে আমরা বুঝতে পারি তাঁরা ঠিকই ফকীহগণের কদর করতেন।
মদীনাবাসীর ইমাম বলে প্রসিদ্ধ প্রখ্যাত হাদীসবিদ ও মালিকী মাযহাবের স্বতন্ত্র মুজতাহিদ ইমাম মালিক (র.) বলেছেন, ما كنا نأخذ (أي الحديثَ) إلا من الفقهاء. -আমরা কেবল ফকীহগণের কাছ থেকেই হাদীস গ্রহণ করতাম। (কাযী ইয়ায, তারতীবুল মাদারিক)
ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (র.) ছিলেন একজন হাদীস বিশারদ ও ইমাম বুখারীর উস্তায। তিনি ফকীহগণের কাছ থেকে ফায়দা হাসিল করতেন। তাঁর অনুসারীদের মাযহাবকে হাম্বলী মাযহাব বলা হয়। তিনি শাফিঈ মাযহাবের ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু ইদরীস আশ-শাফিঈ (র.) সম্পর্কে বলেছেন, وإني لأدعو للشافعي منذ أربعين سنة في الصلاة অর্থাৎ আমি নামাযে চল্লিশ বছর যাবত শাফিঈর জন্য দুআ করছি। (খতীব বাগদাদী, তারীখে বাগদাদ)
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ ইবনুল ফাদল আল বাযযায বলেছেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি যে, আমি ও আহমাদ ইবনে হাম্বল (র.) একবার হজ্জে গিয়ে একই স্থানে অবস্থান করেছি। ফজরের নামায শেষে আমি আহমাদ ইবনে হাম্বলের খোঁজে সুফিয়ান ইবনে উয়াইনার মজলিসে এবং আরো অন্যান্য মুহাদ্দিসের মজলিসে গেলাম। অবশেষে তাঁকে একজন আরবী যুবকের মজলিসে পেলাম। ভিড় ঠেলে আমি তাঁর নিকট গিয়ে বসলাম এবং বললাম, আপনি সুফিয়ান ইবনে উয়াইনার মজলিস ছেড়ে এখানে এসে বসেছেন! অথচ তাঁর নিকট যুহরী, আমর ইবনে দীনার ও যিয়াদ ইবনে ইলাকাহ প্রমুখ এমন অসংখ্য তাবিঈ’র হাদীস রয়েছে, যাদের সংখ্যা আল্লাহই ভালো জানেন। একথা শুনে আহমাদ (র.) বললেন,
اسكت، فإن فاتك حديث بعلو تجده بنزول ولا يضرك في دينك ولا في عقلك وإن فاتك عقل هذا الفتى أخاف أن لا تجده إلى يوم القيامة، ما رأيت أحدا أفقه في كتاب الله من هذا الفتى القرشي ، قلت : من هذا؟ قال : محمد بن إدريس الشافعي.
-চুপ থাক, যদি উচ্চ সনদের কোন হাদীস তোমার হাতছাড়া হয়ে যায়, তবে নিম্ন সনদে হলেও তুমি তা পেয়ে যাবে। এতে তোমার দীন ও জ্ঞানবুদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু এই যুবকের জ্ঞানবুদ্ধি যদি তোমার হাতছাড়া হয়, তবে আমার আশংকা হয় কিয়ামত পর্যন্ত তুমি তা কোথাও পাবে না। আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে এই কুরাইশী যুবকের চেয়ে বেশি সমঝদার আর কাউকে আমি পাইনি। আমি বললাম, তিনি কে? তিনি বললেন, মুহাম্মদ ইবনে ইদরীস আশ শাফিঈ। (আব্দুর রহমান ইবনু আবি হাতিম, আল জারহু ওয়াত তাদীল, বৈরুত: )

ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের উস্তাযের উস্তায সুফিয়ান ইবনু উয়াইনা (র.) ছিলেন অনেক উচ্চ পর্যায়ের মুহাদ্দিস। তিনি বলেছেন, الحديث مضلة إلا للفقهاء -ফকীহগণ ব্যতীত অন্যদের জন্য হাদীস অনেক সময় বিভ্রান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (ইবনুল হাজ্জ মালিকী, আল মাদখাল)
তিনি আরো বলেছেন, التسليم للفقهاء سلامة في الدين অর্থাৎ ফকীহগণের হাতে নিজেকে ন্যস্ত করাই নিজ দীন কে নিরাপদ রাখার উপায়। (তারীখে বাগদাদ)
আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (র.)-এর নাম শুনেনি ইলমে হাদীসের এরকম কোনো ছাত্র নেই। তিনি বলেছেন,لولا أن الله أغاثني بأبي حنيفة وسفيان كنت كسائر الناس -আল্লাহ যদি আমাকে আবূ হানীফা ও সুফিয়ান (সাওরী) (র.) এর মাধ্যমে রক্ষা না করতেন, তবে আমি অন্যান্য মানুষের (মুহাদ্দিসের) মতো হয়ে থাকতাম। (খতীব বাগদাদী, তারীখে বাগদাদ)
আবুয যিনাদ আব্দুল্লাহ ইবনে যাকওয়ান (র.) ছিলেন ইমাম মালিক (র.)-এর শিক্ষক ও হযরত আনাস (রা.) -এর শিষ্য। তিনি বলেছেন,
وأيم الله إن كنا لنلتقط السنة من أهل الفقه والثقة ونتعلمها شبيها بتعلمنا آي القرآن
-আল্লাহর কসম, আমরা ফকীহ ও বিশ্বস্ত ব্যক্তিগণের নিকট থেকে সুন্নাহ ও হাদীস সংগ্রহ করতাম এবং কুরআনের আয়াতসমূহ যেভাবে শেখা হয় সেভাবে তা শিখতাম। (ইবনে আব্দুল বার, জামি‘উ বায়ানিল ইলম)
হিলাল ইবনে খাব্বাব বলেন, আমি সাঈদ ইবনে যুবায়ের (র.) কে জিজ্ঞেস করলাম,
ما علامة هلاك الناس ؟ قال : إذا هلك فقهاءهم هلكوا -মানুষের ধ্বংস হওয়ার আলামত কী? তিনি বললেন, যখন তাদের ফকীহগণ মৃত্যুবরণ করবে, তখন তারাও ধ্বংস হয়ে যাবে। (খতীব বাগদাদী, আল ফকীহ ওয়াল মুতাফাক্কিহ)
ফকীহগণের মর্যাদা সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের সকল বক্তব্য পেশ করতে হলে স্বতন্ত্র গ্রন্থ রচনা প্রয়োজন। এ সম্পর্কে বুঝতে উপরের আলোচনা একটা প্রাথমিক জ্ঞান লাভে সহায়ক হবে। বিস্তারিত জানতে ফকীহগণের কর্মপদ্ধতি নিয়ে পড়াশোনা করা যেতে পারে। আল্লাহ সবাইকে তাওফীক দান করুন।

 লেখত: প্রভাষক, মৌলভীবাজার সরকারি মহিলা কলেজ।

ফেইসবুকে আমরা...