হাদীসের মূল ভাষ্য
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ. رواه البخاري ومسلم.
অনুবাদ: হযরত আবূ হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার অতিথিকে সম্মান করে। (বুখারী ও মুসলিম)
হাদীসের ব্যাখ্যা
আলোচ্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনটি বিষয়ের প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। ১. ভালো কথা বলা নতুবা চুপ থাকা, ২. প্রতিবেশীকে সম্মান করা ৩. অতিথির সমাদর করা। এ তিনটি বিষয় হলো মানবীয় উত্তম স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত ও অধিক সাওয়াব লাভের কারণ।
ভালো কথা বলা নতুবা চুপ থাকা
ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিশ্বাস হলো, একজন মানুষকে তার প্রতিটি কথা ও কাজের জন্য আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। মানুষের প্রকাশ্য ও গোপন প্রতিটি কথা আল্লাহ শুনেন এবং ফিরিশতাগণ লিখে রাখেন। যেমন আল্লাহ বলেন,
أَمْ يَحْسَبُونَ أَنَّا لا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَجْوَاهُمْ بَلٰى وَرُسُلُنَا لَدَيْهِمْ يَكْتُبُونَ
-তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও গোপন পরামর্শ শুনি না? হ্যাঁ, আমি শুনি। আর আমার ফিরিশতাগণ তাদের নিকট লিখে রাখেন। (সূরা যুখরূফ, আয়াত ৮০)
তাই মুমিন ব্যক্তির জন্য উচিত হলো সর্বদা ভালো কথা বলা ও ভালো কাজ করা, কখনো ভালো কথা বলা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে চুপ থাকা। আলোচ্য হাদীসে এ বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে।
আল্লামা ইবন দাকীক আল ঈদ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যে এমন পরিপূর্ণ ঈমান রাখে, যা আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তি দিয়ে তাঁর সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যায়, সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে। কেননা যে আল্লাহর প্রতি যথাযথ বিশ্বাস রাখে সে আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করে এবং তাঁর থেকে সাওয়াব বা উত্তম প্রতিদান আশা করে। আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন তা পালনের এবং যা থেকে নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করার চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বীয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নিয়ন্ত্রণ, যা তার রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে, যার জন্য সে জিজ্ঞাসিত হবে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولٰئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْؤُولاً -‘নিশ্চয় কান, চোখ ও অন্তর- এদের প্রত্যেকটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে’। আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেন, مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ -‘সে যে কথাই উচ্চারণ করে এর জন্য সদা উপস্থিত সংরক্ষণকারী রয়েছেন’। আর জিহবার বিপদ অত্যধিক। এজন্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, هَلْ يُكَبُّ النَّاس فِي النَّارِ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ إِلاَّ حَصَائِدُ أَلْسِنَتُهُمْ -‘লোকদের উপুড় অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার জন্য তাদের জিহবার উপার্জন ছাড়া আর কিছু আছে নাকি?’। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন, كُلُّ كَلامِ ابْنِ آدَمَ عَلَيْهِ إِلاَّ ذكرَ الله تعالى وَأمْراً بِمَعْرُوفٍ، وَنَهْياً عَنْ مُنْكَرٍ ‘আল্লাহর যিকর, সৎকাজের আদেশ ও মন্দকাজের নিষেধ ছাড়া আদম সন্তানের সকল কথা তার উপর আপতিত হবে।’ যে এগুলো জানে এবং যথাযথভাবে বিশ্বাস করে সে জিহবার ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করে। ফলে সে হয়তো ভালো কথা বলে নতুবা নিরব থাকে। (শারহুল আরবাঈন, পৃষ্ঠা ৪৮)
ইমাম নববী (র.) বলেন, فليقل خيرا أو ليصمت এ হাদীসাংশের অর্থ হলো, মুমিন ব্যক্তি যখন কথা বলার ইচ্ছা করবে তখন সে কথা যদি উত্তম বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে সে এর সাওয়াব পাবে, তা আবশ্যকীয় হোক, কিংবা মানদূব হোক, এরূপ হলে সে কথা বলবে। আর যদি এটি সাওয়াব লাভের মতো উত্তম কথা বলে প্রতিভাত না হয় তাহলে তা বলা থেকে বিরত থাকবে। চাই তা হারাম কিংবা মাকরূহ হোক, কিংবা মুবাহ হোক, যা বলা না বলা উভয়ই সমান। এ বিবেচনায় মুবাহ কথা পরিত্যাগ করাই আদিষ্ট বলে গণ্য হবে এবং তা থেকে বিরত থাকা উত্তম হবে। কেননা এরূপ কথা বলার দ্বারা হারাম কিংবা মাকরূহ এর মধ্যে পতিত হবার আশঙ্কা রয়েছে। আর এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হয়েও থাকে। (ইমাম নববী, শারহু মুসলিম)
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম শাফিঈ (র.) বলেছেন, কথা বলতে চাইলে প্রথমে চিন্তাভাবনা করবে। যদি এটি প্রতিভাত হয় যে এতে কোনো ক্ষতি নেই তাহলে কথা বলবে। আর যদি এটি প্রতিভাত হয় যে, এতে কোনো ক্ষতি আছে অথবা এ নিয়ে যদি সন্দেহ করে তাহলে তা থেকে বিরত থাকবে। (প্রাগুক্ত)
ইমাম আবুল কাসিম আল কুশাইরী (র.) বলেছেন, চুপ থাকা নিরাপদ এবং এটিই মূল। যথাসময়ে চুপ থাকা সূফীদের বৈশিষ্ট্য, অনুরূপভাবে যথাস্থানে কথা বলা সর্বোত্তম স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেন, আমি আবূ আলী আদ দাককাক (র.) কে বলতে শুনেছি, من سكت عن الحق فهو شيطان أخرس -যে হক কথা বলা থেকে চুপ থাকে সে বোবা শয়তান। তিনি (ইমাম কুশাইরী) বলেন, মুজাহাদা তথা কঠোর সাধনাকারীগণ চুপ থাকাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কারণ তারা কথা বলার বিপদ সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তাছাড়া এতে রয়েছে, নফসের প্রাধান্য, প্রশংসনীয় গুণের প্রকাশ এবং বাকপটুতা দিয়ে অন্যের মধ্যে নিজেকে বিশিষ্ট করে তোলার আগ্রহ ও আরো অনেক বিপদ। এটি (চুপ থাকা) সাধকদের গুণ এবং তাদের আধ্যাত্মিক স্তর অতিক্রম ও চরিত্র পরিশোধনের একটি স্তম্ভ। হযরত ফুযাইল বিন আয়ায (র.) বলেন, যে কথাকে আমলের মধ্যে গণ্য করে তার অনর্থক কথা কমে যায়। যুন নূন (র.) বলেন, সবচেয়ে নিরাপদ সেই ব্যক্তি যে তার জিহবাকে সংযত রাখে। (প্রাগুক্ত)
কোনটি উত্তম: ভালো কথা বলা না চুপ থাকা?
ভালো কথা বলা না চুপ থাকা কোনটি উত্তম এ বিষয়ে এককভাবে কোনোটিকে প্রাধান্য দেওয়া সম্ভব নয়। এ সম্পর্কে উলামায়ে কিরামের বক্তব্যের সারকথা হলো, ভালো কথা বলা নিরব থাকার চেয়ে উত্তম। আর নিরব থাকা মন্দ কথা বলার চেয়ে উত্তম।
প্রতিবেশীকে সম্মান করা
এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বিতীয় যে কথাটি বলেছেন সেটি হলো, وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ جَارَهُ، -যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে সম্মান করে।
প্রতিবেশীর সম্মান ও অধিকারের বিষয়ে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করেছে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলার ঘোষণা হলো,
وَٱعۡبُدُوا۟ ٱللهَ وَلَا تُشۡرِكُوا۟ بِهِ شَیۡـࣰٔا وَبِٱلۡوَٰلِدَیۡنِ إِحۡسَـٰنا وَبِذِی ٱلۡقُرۡبىٰ وَٱلۡیَتَـٰمىٰ وَٱلۡمَسـٰكِینِ وَٱلۡجَارِ ذِی ٱلۡقُرۡبىٰ وَٱلۡجَارِ ٱلۡجُنُبِ وَٱلصَّاحِبِ بِٱلۡجَنۢبِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِیلِ وَمَا مَلَكَتۡ أَیۡمَـٰنُكُمۡ
-তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং কোনো কিছুকে তাঁর সাথে শরীক করো না। আর পিতা-মাতা, নিকটাত্মীয়, ইয়াতীম, মিসকীন, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথি, নিঃস্ব মুসাফির ও তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো। (সূরা নিসা, আয়াত ৩৬)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিকটের ও দূরের সকল প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বুখারী শরীফের এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয় (বুখারী, হাদীস-৫৬১৭)। অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার আল্লাহর নামে কসম করে বলেছেন, সে ব্যক্তি মুমিন নয়, যার অনিষ্ট থেকে তাঁর প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস-৫৬১৫)
অন্য বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষভাবে মহিলাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেন তারা প্রতিবেশী মহিলাকে কোনোভাবে হেয় বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করে। হযরত আবূ হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম নারীদের বলতেন, لَا تَحْقِرَنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شَاةٍ -কোনো নারী যেন তার নারী প্রতিবেশীকে (হাদিয়া ফেরত দিয়ে) হেয় প্রতিপন্ন না করে, যদিও তা বকরীর পায়ের ক্ষুরও হয় না কেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৬১৬)
মুল্লা আলী কারী (র.) বলেছেন, প্রতিবেশীর সর্বনিম্ন অধিকার হলো তাকে কোনোভাবে কষ্ট না দেওয়া। নতুবা তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও সদ্ব্যবহারের নির্দেশ তো বিভিন্ন বর্ণনায় রয়েছে। (মিরকাত, খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ১৪২)
উল্লেখ্য যে, প্রতিবেশী বলতে শুধু নিজের ঘরের আশপাশের লোক নন; বরং এক হাদীসের ভাষ্যানুযায়ী চতুর্দিকে চল্লিশ ঘর পর্যন্ত প্রতিবেশী বলে গণ্য। আবার অধিকারের ক্ষেত্রে নিকটতর প্রতিবেশী অগ্রগণ্য। যেমন, বুখারী শরীফে আছে, হযরত আয়িশা (রা.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমার দুজন প্রতিবেশী রয়েছেন। আমি কার কাছে হাদিয়া পাঠাবো? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার দরজা (অর্থাৎ ঘর) তোমার অধিক নিকটবর্তী। (সহীহ বুখারী, হাদীস-৫৬১৯)
সারকথা হলো, প্রতিবেশী তিনি কাছের কিংবা দূরের হোন তার প্রতি সদ্ব্যবহার করা একজন মুমিনের অন্যতম কর্তব্য।
অতিথির সমাদর করা
আলোচ্য হাদীসে তৃতীয় যে কথাটি এসেছে তা হলো, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার অতিথিকে সম্মান করে।
অতিথিকে সম্মান ও সমাদর করা একটি উত্তম গুণ। ইসলাম এ বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে। অতিথি আপ্যায়ন বা মেহমানদারি সর্বোচ্চ সীমা তিনদিন ও তিনরাত। এর অধিক হলে অতিথির জন্য বিশেষ কদর বা আপ্যায়নের বাধ্যবাধকতা নেই। আবার মেযবানকে কষ্ট দিয়ে বেশিদিন অবস্থান করা মেহমানের জন্যও উচিত নয়। যেমন, বুখারী শরীফে আছে,
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ جَائِزَتُهُ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ وَالضِّيَافَةُ ثَلَاثَةُ أَيَّامٍ فَمَا بَعْدَ ذَلِكَ فَهُوَ صَدَقَةٌ وَلَا يَحِلُّ لَهُ أَنْ يَثْوِيَ عِنْدَهُ حَتَّى يُحْرِجَهُ.
-যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস রাখে সে যেন তার অতিথিকে সম্মান করে। আর অতিথির সম্মান একদিন ও একরাত। আর সাধারণ মেহমানদারি তিনদিন ও তিনরাত। এরপর যা হবে তা হলো সাদকাহ (অর্থাৎ মেযবানের ইচ্ছাধীন)। আর মেযবানকে কষ্ট দিয়ে তার কাছে মেহমানের অবস্থান করা বৈধ নয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস-৬১৩৫)
এ হাদীসে মেহমান ও মেযবানের জন্য যে নির্দেশনা রয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সমাজে বিবাহের পর নতুন বর বধু নিয়ে শশুরবাড়িতে আড়াই দিন পর্যন্ত অবস্থানের একটি রীতি প্রচলিত আছে। সম্ভবত এর ভিত্তি হলো উপরোক্ত হাদীস। আল্লাহই এ বিষয়ে অধিক পরিজ্ঞাত।
শেষকথা
ভালো কথা বলা নতুবা চুপ থাকা একজন মুমিনের ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রজীবনের সকল ক্ষেত্রেই তার জন্য অত্যন্ত উপকারী ও নিরাপত্তার কারণ হিসেবে বিবেচিত। আর প্রতিবেশী ও মেহমানকে সম্মান করা সামাজিক কর্তব্য। আল্লাহ আমাদের এ দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথভাবে সম্পাদনের তাওফীক দান করুন। আমীন।