কোন একটি দেশের নির্বাচন যে দুনিয়া জুড়ে এমন মেরুকরণ করতে পারে, সেই সাথে উত্তেজনার পারদ চরমে তুলে প্রায় সারা দুনিয়ার মানুষের ঘুম কেড়ে নিতে পারে, সাম্প্রতিক ইতিহাসে দুনিয়া জুড়ে এমন নযীর বোধ হয় খুব বেশি নেই। তবে এমনই এক নির্বাচন গত মাসে অনুষ্ঠিত হলো তুর্কিতে। প্রথম দফায় সংসদে নিজ দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও অধিক ভোট পেলেও আইনি প্যাঁচে পড়ে নির্বাচিত হতে পারেননি উসমানী সালতানাতের গর্বিত উত্তরাধিকার রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান। তবে সেদিনই মোটামুটি স্পষ্ট হয়েছিল সারা দুনিয়ার নামকরা মিডিয়া তার আগের কয়েক মাস জুড়ে যেভাবে প্রচার করছিল, এরদোয়ান বোধ হয় এবার হেরেই যাবেন, সে প্রচারণা তুর্কিতে গিয়ে কোন প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়নি। আর তাই বিশ্বরাজনীতির টুকটাক খবর রাখেন এমন সকলেই মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন ২৮ মে এরদোয়ানেরই জয় হবে, প্রত্যাশিতভাবে তাই হয়েছে। কামাল আতাতুর্কের উত্তরাধিকার কামাল কিলিচদারোলু শেষপর্যন্ত দুনিয়ার তাবড় সব পশ্চিমা মিডিয়ার, এবং স্বাভাবিকভাবেই পশ্চিমা পরাশক্তিদের প্রিয়পাত্র হয়েও হেরেছেন উসমানীদের উত্তরাধিকার আর সাঈদ নুরসীদের পরিশ্রমের ফসল এরদোয়ানের নিকট। তুরস্কে শেষ পর্যন্ত ইসলামের নিশানা মুছে ফেলার অপতৎপরতা আবারো উড়ে গেলো আল্লাহু আকবারের ধ্বনিতে।
তুর্কির নির্বাচন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে এরদোয়ানের পক্ষে আর পশ্চিমা পরাশক্তিদের নিকট কিলিচদারোলুর পক্ষে যে ধরনের তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছিল, তাতে মাসিক পরওয়ানার কোন পাঠকের নিকটই আর এ খবর নতুন করে বিস্তারিত বলার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে হয় না। এই নিবন্ধে তাই বিস্তারিত ফলাফলের বদলে এই নির্বাচনের বিষয়ে নিবন্ধকারের কয়েকটি পর্যবেক্ষণ সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো।
প্রথমত যে বিষয়টা আমাদের স্পষ্ট হওয়া দরকার, তা হলো সেক্যুলারিজম বলতে আসলে খুব সুনির্দিষ্ট রূপরেখাবিশিষ্ট কোন মতবাদকে যে বুঝায় তা কিন্তু নয়। মোটাদাগে সর্বত্র ধর্মের সাথে বিরোধ থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় এর বিভিন্ন রূপ দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের সেক্যুলারিজম নাগরিকদেরকে ব্যক্তি পর্যায়ে খানিকটা ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেয়। বলা চলে, তাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নীতি (যা বহুলাংশে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক) মেনে যদি কেউ ব্যক্তি জীবনে ইসলাম পালন করে, তবে তারা এ নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাবে না। কিন্তু কামাল আতাতুর্কের সেক্যুলারিজম এতটুকু উদারও নয়। কামালপন্থীদের নিকট সেক্যুলারিজমের অর্থ হলো তুর্কি থেকে ইসলামকে নিষিদ্ধ করা। আর সে কারণেই ইতিপূর্বে এই মতবাদের অনুসারীরা তুর্কিতে আরবী আযান নিষিদ্ধ থেকে শুরু করে সর্বত্র আরবী ভাষাকেই নিষিদ্ধ করে, যেহেতু আরবী ভাষার সাথে ইসলামের সংযোগ রয়েছে। যেকোন সেক্যুলারিজমই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক হলেও কামালপন্থীদের সেক্যুলারিজম সবচেয়ে ভয়াবহ।
পতনোন্মুখ উসমানী সালতানাতের শেষকালে এই কামাল আতাতুর্কের উত্থান ঘটে। প্রথমে উসমানী বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন এবং বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত উসমানী সালতানাতের মূল তুর্কি ভূখণ্ড যথাসম্ভব অখণ্ড রাখতে আতাতুর্কের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু এই তুর্কি ভূখণ্ডে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার খেসারত হিসেবে তুরস্কে উসমানী সালতানাত বিলুপ্তি এবং তারপর প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে রীতিমত ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
এবারের নির্বাচনে এই ইতিহাসের প্রাসঙ্গিকতা হলো— কিলিচদারোলু যদি জিততে পারতেন, তবে সেই কামালী যামানায় তুর্কির প্রত্যাবর্তনের সূচনা হতো এসব বদলে দিতে না পারলেও ধীরে ধীরে কিলিচদারোলু পিছিয়ে যেতেন সেই কামাল আতাতুর্কের আদর্শের দিকেই। আর এ কারণেই এরদোয়ানের বিজয় এবার এতোটা জরুরি ছিল।
কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে, এরদোয়ান তো প্রায় দুই দশক ধরেই ক্ষমতায় আছেন, ৫ বছর পরপর নির্বাচনও করছেন, জিতেও আসছেন, তবে এবার কেন এতো বেশি উত্তেজনা তৈরি হলো? এর অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম হলো, এবার সেক্যুলারদের মিডিয়াযুদ্ধই এ নির্বাচনকে বেশি আলোচনায় নিয়ে এসেছিল। আন্তর্জাতিক সব গণমাধ্যম নানা জনমত জরিপ করে বারবার দেখাচ্ছিল যে এবার আর এরদোয়ানের পক্ষে জেতা সহজ হবে না। সেখান থেকেই একপক্ষের উৎকণ্ঠা আর আরেক পক্ষে উৎসাহ উদ্দীপনার পারদ চড়তে শুরু করে। এরদোয়ানের সম্ভাব্য পরাজয়ের জন্য বড় করে দেখানো হচ্ছিল সাম্প্রতিক ভূমিকম্প আর অর্থনৈতিক সংকটকে। মজার বিষয় হলো, বলা হয়ে থাকে এরদোয়ানের ২০০২ সালে ক্ষমতায় আসার পিছনেও ভূমিকম্পের প্রভাব ছিল। ১৯৯৯ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে তৎকালীন সরকারের চরম অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির কারণে যে জনরোষ তৈরি হয়, ২০০২ সালে এরদোগানের একে পার্টির বিজয়ে তার ভূমিকা ছিল বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেই জায়গা থেকে অনেকের ধারণা ছিল এবারও ভূমিকম্পের কারণে হয়তো ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে! কিন্তু ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ প্রদেশসমূহে এরদোয়ানের ভূমিধ্বস বিজয় প্রমাণ করে এবারের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের এই ধারণা ছিল একেবারেই ভূয়া। মূলত শুরুর দিকে এরদোয়ানের প্রশাসন ভূমিকম্প পুনরুদ্ধারে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও পরবর্তীতে তাদের ভূমিকা গণঅসন্তুষ্টি প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে বলেই নির্বাচনের ফলাফল থেকে বুঝা যাচ্ছে।
তুর্কির রাজনীতিতে এরদোয়ানের জন্য সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হলো তার রাজনৈতিক গুরু নাজমুদ্দীন এরবাকান, যার হাত ধরে তুর্কি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর প্রথম ইসলামপন্থীদের উত্থান হয়েছিল, সেই এরবাকানের ঐতিহ্যবাহী দল সাদাত পার্টি এরদোয়ানের বিরোধী জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। শুধু তাই নয়, এবারের নির্বাচনে সাদাত পার্টির অফিস থেকেই এরদোয়ানবিরোধী জোটের ঘোষণা হয় এবং সাদাত পার্টি কিলিচদারোলুর দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে, নিজেদের প্রতীক ব্যবহার না করেই। তবে এরবাকানের পুত্র ফাতিহ এরবাকান আদর্শচ্যুত সাদাত পার্টি থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠন করেন এবং এরদোয়ানকে সমর্থন করেন। ফাতিহের নিজস্ব সাংগঠনিক সক্ষমতা না থাকলেও পিতৃপরিচয়ের কারণে তার এই ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর এরদোয়ানের পতন নিশ্চিত করতে প্রকাশ্যে ইসলাম নিষিদ্ধ করতে চাওয়া জোটের শরীক হওয়া সাদাত পার্টি যে নির্বাচনে খুব একটা দাগ কাটতে পারেনি, তাও এতোদিনে পরিষ্কার।
এরদোয়ানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা পরাশক্তিদের যে প্রাণপণ প্রচেষ্টা, তা থেকে সহজেই অনুমেয় এরদোয়ান আসলে কতটা জরুরি। কিলিচদারোলু এরদোয়ানের মতো প্রভাবশালী রাজনীতিক না হওয়া সত্ত্বেও, শুধুমাত্র এরদোয়ান বিরোধী মুখ হওয়ার কারণেই পশ্চিমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেয়েছিলেন। তার কারণ বিশ্বরাজনীতিতে এরদোয়ানের অবস্থান। এরদোয়ান ভুলত্রুটির উর্ধ্বে কোন মহামানব নন, তার বহু অবস্থান হয়তো ভুল ছিল, কিন্তু সামগ্রিকভাবে এরদোয়ানের যে ইসলামের পক্ষে, মুসলিমদের পক্ষে অবস্থানগ্রহণের প্রচেষ্টা, তা পশ্চিমাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জের বিষয়। তুরস্ক মূলত সোভিয়েত ইউনিয়নের হাত থেকে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার উদ্দেশ্যে ন্যাটোতে যোগ দিয়েছিল, এবং সে সময় তুরস্ক কামাল আতাতুর্কের আদর্শের উপরই ছিল, আবার বিশ্বরাজনীতিতে গুরুত্ব বহন করার মতো কোন রাষ্ট্রও ছিল না। ন্যাটোর প্রভাবশালী সদস্যরা অনেকটা দুধভাত হিসেবেই তুরস্ককে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করেছিল সহজে বিপুল সংখ্যক সামরিক লোকবল পাওয়ার আশায়। কিন্তু সেই তুরস্ক এরদোয়ানের হাত ধরে আজ বিশ্বরাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্যে যাকে সমীহ করে চলতে হয় খোদ যুক্তরাষ্ট্র কিংবা রাশিয়াকেও। আবার আজকের তুরস্ক আর আতাতুর্কের আদর্শের উপরও নেই, তুরস্ক এখন ইসলামী ভাবধারার জন্যও বিশ্বখ্যাত। ন্যাটোর ভিতরে এমন সদস্যরাষ্ট্র ন্যাটোর মোড়লদের জন্য গলার কাটাই বটে। তুরস্ক যে যুগে ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন বা স্বীকৃতি প্রদান করেছিল, সে যুগে তুরস্কের চেয়ে বড় কট্টর সেক্যুলার দেশ আর ছিল না। অথচ সেই তুরস্ক মধ্যপ্রাচ্যে আজ ইসরায়েলের অন্যতম হুমকি বলে বিবেচিত হচ্ছে, প্রকাশ্যে স্বীকৃতি দেয়নি এমন বহু দেশও এখন তুরস্কের চেয়ে ইসরায়েলের জন্য তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক। সম্প্রতি ইরান-কাতার-সৌদি এই দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কের রসায়ন বদলে যাওয়াতে এবং সৌদির মতো দেশ কোন কোন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাহ্য করার ফলে এরদোয়ানের তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের নিকট আরো বেশি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তুর্কি-কাতার-ইরান-সৌদির মধ্যে কোন ধরনের সমঝোতা হলে তা মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের জন্য মহাবিপদের কারণ হবে, হুমকির মুখে পড়বে মার্কিন স্বার্থ। সাম্প্রতিক সৌদি-ইরান চুক্তি ও তার আগে সৌদি-কাতার সংকট নিরসন পশ্চিমাদের এই আশঙ্কাকে আরো চরমে পৌঁছিয়েছে। এছাড়াও মুসলিম উম্মাহের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোন বিষয়ে এরদোয়ানের উচ্চকণ্ঠ সর্বজনবিদিত। রোহিঙ্গা ইস্যুতে এরদোয়ান সরকার বাংলাদেশের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছে, তা মূলত এরদোয়ানের উম্মাহ কেন্দ্রিক ভাবনারই নিদর্শন। এমন আরো বহু কারণে মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয় হলো এরদোয়ানের পতন।
এরদোয়ানের পতনের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো— তুরস্কের আইনি কাঠামো। তুরস্ক কাগজে কলমে এখনো সেক্যুলার রাষ্ট্র, এরদোগানের দলও সেক্যুলার দল। কামালপন্থীদের দীর্ঘশাসনের ফলে তুরস্কের আইন-কানুনে ইসলামকে নিষিদ্ধ করার যে মিশন চলছিল, এরদোয়ান সেই মিশন থমকে দিলেও এখনো তুরস্কের বহু আইন ইসলামবিরোধী। বলা হয়ে থাকে, “শাসক ভালো হলে ভালো আইনের দরকার হয় না, আর শাসক খারাপ হলে ভালো আইন কোন কাজেও আসে না।” তুরস্কে বর্তমানে শাসকের প্রভাবে ইসলামবিরোধী কোন আইনই কার্যকর না হলেও খাতায়-কলমে এখনো বহু আইন রয়ে গেছে। সেক্যুলারদের হাতে ক্ষমতা গেলে এ কারণেই পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তুরস্ক আবারো হয়ে উঠবে পশ্চিমাদের পুতুলরাষ্ট্র।
সর্বোপরি তুরস্কের এবারের নির্বাচন মূলত ছিল অনেকটা গণভোটের মতো। উসমানীদের তুরস্ক থাকবে, নাকি কামালপন্থীদের তুরস্ক ফিরে আসবে। তুরস্কের জনগণ উসমানী সালতানাতের উত্তরাধিকারদেরকে বেছে নিয়েছেন। এতদসত্ত্বেও এরদোয়ানের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কামালপন্থীদের আদর্শকে মুকাবিলা করা। তুরস্কে এখনো উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ কামালপন্থী আদর্শ লালন করে। দীর্ঘদিনের ঘৃণ্য সেক্যুলার শাসনের প্রভাব এখনো জনগণের উপর রয়ে গেছে। এরদোয়ান ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে জনগণের মধ্যে উসমানী তথা ইসলামী ধারাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করলেও তার সে চেষ্টা সফল হতে এখনো বহু পথ বাকি আছে। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এরদোয়ানের প্রতি যে আবেগ তৈরি হয়েছে, তার ফলে এরদোয়ানকে একই সাথে তুরস্কের সফল রাষ্ট্রনায়কের পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিত্বকারী মুখ হিসেবেও ভূমিকা পালন করতে হবে। মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্ব সংকটে এরদোয়ানের মতো শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের নেতৃত্ব শুধু তুরস্কের জন্য নয়, বরং সমগ্র উম্মাহের জন্যই এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।