Logo
প্রশ্ন: শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সময় ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা ও গবেষণায় অভিজ্ঞতার অভাবে অনেক ক্ষেত্রে থিসিস ও অ্যাসাইনমেন্ট সম্পন্ন করতে সমস্যায় পড়েন। বিশেষ করে বিদেশে অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থী, যেমন—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরা, পড়াশোনার পাশাপাশি আয়-রোজগারে ব্যস্ত থাকার কারণে নিজেরা এই কাজগুলো যথাযথভাবে করতে পারেন না। ফলে তারা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কিছু এজেন্সি বা ব্যক্তির সহায়তা নেন, যারা তাদের হয়ে থিসিস বা অ্যাসাইনমেন্ট লিখে দেয়। এক্ষেত্রে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে জানতে চাই: ১. এভাবে অ্যাসাইনমেন্ট বা থিসিস করিয়ে নেওয়া একজন শিক্ষার্থীর জন্য কতটুকু ন্যায়সঙ্গত? ২. টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে থিসিস বা অ্যাসাইনমেন্ট লেখা কি ইসলামে বৈধ? ৩. এটি কি হারাম উপার্জনের অন্তর্ভুক্ত হবে?
জবাব দিচ্ছেন: মাওলানা আবূ নছর মোহাম্মদ কুতুবুজ্জামান তাফাদার
  • ২৯ নভেম্বর, ২০২৫

প্রশ্নকারী: আব্দুল ওয়াসেহ, সিলেট

জবাব: উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় একজন শিক্ষার্থী তার নিজস্ব যোগ‍্যতা ও প্রচেষ্টা ছাড়াই অন্যের সহায়তায় একাডেমিক মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হওয়া যেমন শিক্ষা অর্জনের মহান উদ্দেশ্যের পরিপন্থি, তেমন ইহা প্রতারণার শামিল, যা ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তথা হারাম। তাই কোন শিক্ষার্থীর জন‍্যে এরূপ অবৈধ সুযোগ নেয়া জায়িয নয়। উপরন্তু এতে অন‍্যায় ও অনৈতিক কাজে সহায়তার ন‍্যায় গর্হিত অপরাধ ও গুনাহ অন্তর্ভুক্ত থাকায় টাকার বিনিময়ে অন্যের হয়ে কোন থিসিস বা অ্যাসাইনমেন্ট লেখা ইসলামে নাজায়িয। তাই এরূপ উপার্জন শরীআতের দৃষ্টিতে হারাম।

মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلا تَعَاوَنُوا عَلَى الإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ

-আর তোমরা সৎকর্ম ও তাকওয়ার কাজে সহযোগিতা করো, কিন্তু পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর। (সূরা মায়িদাহ, আয়াত-২)

প্রতারনা শরীআতের দৃষ্টিতে গর্হিত কাজ হিসেবে পরিগণিত। সুনান আত তিরমিযী কিতাবে বর্ণিত হাদীসে এসেছে-

عن أبي هُرَيْرَةَ؛ أنَّ رسولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ عَلَى صُبْرَةٍ من طَعَامٍ، فأدْخَلَ يَدَهُ فيهَا، فَنالَتْ أصَابِعُهُ بَللًا، فقال: “يا صَاحِبَ الطَّعامِ ما هذا”؟ قال: أصَابَتْهُ السّماءُ، يَا رسولَ اللهِ، قال: “أفَلا جَعَلتَهُ فَوقَ الطَّعَامِ حَتَّى يَرَاهُ النَّاسُ؟ ” ثمَّ قال: “من غَشَّ فَلَيْسَ مِنَّا

হযরত আবূ হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত যে, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম (বাজারে) একটি খাদ্যশস্যের স্তূপ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন। তিনি নিজের হাতকে স্তূপের মধ্যে প্রবেশ করালেন। তিনি তার হাতে ভিজা অনুভব করেন। স্তূপের মালিককে তিনি প্রশ্ন করেন, এ কি? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটা বৃষ্টির পানিতে ভিজে গিয়েছিল। তিনি বললেন, ভিজাগুলো স্তূপের উপরে রাখলে না কেন, যাতে লোকেরা দেখতে পেত? অতঃপর তিনি বললেন, প্রতারণাকারী ও ধোঁকাবাজদের সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। (সুনান আত তিরমিযী, হাদীস-১৩৬২; باب ما جَاءَ في كَرَاهِيةِ الغِشِّ في البُيُوعِ)

ফেইসবুকে আমরা...