মহান রাব্বুল আলামীনের অসীম দয়া উম্মতে মুহাম্মদীর উপর। তারা দুনিয়াতে সর্বশেষ আগমন করলেও জান্নাতে প্রবেশ করবে সবার আগে। রাসূলুল্লাহ e বলেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم : نَحْنُ الآخِرُونَ، الأوَّلُونَ يَومَ القِيامَةِ، ونَحْنُ أوَّلُ مَن يَدْخُلُ الجَنَّةَ
আবূ হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ e বলেছেন, আমরা সবশেষে আগত উম্মাত, কিন্তু কিয়ামাতের দিন আমরা হবো সর্বাগ্রবর্তী, আমরাই প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করব।
أنَّهُمْ أُوتُوا الكِتابَ مِن قَبْلِنا، وأُوتِيناهُ مِن بَعْدِهِمْ، فاخْتَلَفُوا، فَهَدانا اللَّهُ لِما اخْتَلَفُوا فيه مِنَ الحَقِّ،
অথচ তাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের পূর্বে এবং আমাদেরকে তা দেওয়া হয়েছে তাদের পরে। তারা বিরোধে লিপ্ত হয়ে পড়লো কিন্তু তারা যে সত্য দ্বীনের ব্যপারে বিরোধে লিপ্ত হয়েছিল, আল্লাহ আমাদেরকে সে দ্বীন সম্পর্কে হিদায়াত দান করেছেন।
فَهذا يَوْمُهُمُ الذي اخْتَلَفُوا فِيهِ، هَدانا اللَّهُ له، قالَ: يَوْمُ الجُمُعَةِ، فالْيَومَ لَنا، وغَدًا لِلْيَهُودِ، وبَعْدَ غَدٍ لِلنَّصارى.
তিনি বলেন, তারা যে (সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ) দিন নিয়ে মতবিরোধ করেছিলো, এই জুমুআর দিনই হচ্ছে সেই দিন। আল্লাহ আমাদেরকে এই দিনের ব্যপারে হিদায়াত দান করেছেন। তাই আমাদের জন্য (ফদীলতপূর্ণ শ্রেষ্ঠ দিন ) হচ্ছে জুমুআর দিন। আর ইয়াহুদীদের জন্য পরের দিন এবং খ্রিষ্টানদের জন্য তারও পরের দিন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস-১৮৬৫)
الراوي: أبو هريرة • مسلم، صحيح مسلم (855) • [صحيح] • أخرجه البخاري (876)، ومسلم (855(
তারা সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন নিয়ে ইখতিলাফ করার কারণ কী ছিলো? মুসলিম শরীফের ব্যখ্যা গ্রন্থ ‘শরহে নববী’তে ইমাম নববী (র.) বর্ণনা করেন,
قال القاضي : الظاهر أنه فرض عليهم تعظيم يوم الجمعة بغير تعيين ووكل إلى اجتهادهم لإقامة شرائعهم فيه، فاختلف اجتهادهم في تعيينه ولم يهدهم الله له، وفرضه على هذه الأمة مبينا، ولم يكله إلى اجتهادهم ففازوا بتفضيله. قال: وقد جاء أن موسى عليه السلام أمرهم بالجمعة وأعلمهم بفضلها فناظروه أن السبت أفضل، فقيل له : دعهم .
ইমাম কাযী ইয়ায (র.) বলেন, হাদীসের বাহ্যিক অর্থ থেকে বুঝা যায়, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর জুমুআবার তথা শ্রেষ্ঠ দিনকে তাযীম করা ফরয করেছিলেন। কিন্তু সেই দিনটি নির্দিষ্ট করে না দিয়ে বরং তা নির্বাচন করার দায়িত্ব তাদের ইজতিহাদের উপর ন্যস্ত করেছিলেন। তখন তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে হিদায়াত না পেয়ে সেই দিনের ব্যাপারে ইখতিলাফ করে। আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মদীকে সেই শ্রেষ্ঠ দিন নির্বাচন করা তাদের ইজতিহাদের উপর ন্যস্ত না করে তিনি নিজেই স্পষ্ট বর্ণনা করে দিলেন, এতে তারা অধিক মর্যাদাবান হলো।
কাযী ইয়ায (র.) আরও বলেন, মূসা (আ.) শ্রেষ্ঠ দিন তথা জুমুআবারের ফদীলত অধিক জানেন বিধায় তিনি সেই দিন সম্পর্কে তাদের আদেশ করেছিলেন, কিন্তু তারা শনিবার শ্রেষ্ঠ বলে ইখতিলাফ করে। তখন আল্লাহ তাঁকে নির্দেশ দেন, তাদেরকে তাদের মতের উপর ছেড়ে দাও। (শরহু মুসলিম, ইমাম নববী (র.) কৃত,كتاب الجمعة بَابٌ : هِدَايَةُ هَذِهِ الْأُمَّةِ لِيَوْمِ الْجُمُعَةِ)
সুতরাং এই জুমুআবার আমাদের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এক বিশেষ উপহার। জুমুআবার মর্যাদাপূর্ণ দিন হওয়ার কারণ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ e বলেন,
إِنّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الْأَيّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللهِ مِنْ يَوْمِ الْأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ،
নিশ্চয়ই জুমুআর দিন হলো সমস্ত দিনের সর্দার। জুমুআর দিন আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে মহান দিবস। এমনকি এদিন আল্লাহ তাআলার কাছে ঈদুল আদহা ও ঈদুল ফিতর তথা ইসলামের দুই ঈদের দিন থেকেও মহান।
فِيهِ خَمْسُ خِلَالٍ: خَلَقَ اللهُ فِيهِ آدَمَ، وَأَهْبَطَ اللهُ فِيهِ آدَمَ، وَفِيهِ تَوَفّى اللهُ آدَمَ، وَفِيهِ سَاعَةٌ لَا يَسْأَلُ اللهَ الْعَبْدُ فِيهَا شَيْئًا إِلّا أَعْطَاهُ إِيّاهُ، مَا لَمْ يَسْأَلْ حَرَامًا،
জুমুআর দিনের বিশেষ পাঁচটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ দিন আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন। এ দিন তাঁকে জান্নাত থেকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এদিনেই আল্লাহ তাঁকে ইন্তিকাল দান করেছেন। জুমুআর দিন একটা সময় আছে, যেসময় বান্দা আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা-ই দান করবেন, যদি না সে হারাম কোনো বিষয়ের প্রার্থনা করে।
وَفِيهِ تَقُومُ السّاعَةُ، مَا مِنْ مَلَكٍ مُقَرّبٍ، وَلَا أَرْضٍ وَلَا سَمَاءٍ، وَلَا رِيَاحٍ وَلَا جِبَالٍ وَلَا بَحْرٍ، إِلّا وَهُنّ مُشْفِقُونَ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ.
তদ্রূপ, কিয়ামতও সংঘটিত হবে জুমুআর দিনেই। নৈকট্যপ্রাপ্ত ফিরিশতারা পর্যন্ত জুমুআর দিন (কিয়ামতের আশঙ্কায়) ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে। পৃথিবী, আকাশ, বাতাস, পাহাড়, পর্বত, সাগর সবকিছু জুমুআর দিন (কিয়ামতের আশঙ্কায়) উদ্বিগ্ন থাকে। (মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবা, হাদীস-৫৫৫৯; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস-১৫৫৪৮; সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস-১০৮৪)
তবে বড় আফসোস! মানুষ আর জিন জাতি এ ব্যাপারে গাফিল থাকে। আবূ হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ e বলেছেন-
وَمَا مِنْ دَابّةٍ إِلّا يَفْزَعُ لِيَوْمِ الْجُمُعَةِ إِلّا هَذَيْنِ الثّقَلَيْنِ الْجِنِّ وَالْإِنْسِ. قال الشيخ شعيب: إسناده صحيح على شرط مسلم.
মানুষ ও জিন ব্যতীত এমন কোনো প্রাণী নেই, যা জুমুআর দিন (কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কায়) ভীতসন্ত্রস্ত থাকে না। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস-৫৫৬৩; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস-৭৬৮৭)
জুমুআর দিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, জুমুআবার রাতে আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দাদের আমলনামা পেশ করা হয়। আবূ হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূলে কারীম e বলেছেন-
إن أعمالَ بني آدمَ تُعرضُ كلَّ خميسٍ ليلةَ الجمعةِ فلا يُقبلُ عملُ قاطعِ رحمٍ
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অর্থাৎ জুমুআর রাতে আদম সন্তানের আমল (আল্লাহর সামনে) পেশ করা হয়। তখন আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীদের আমল কবূল করা হয় না। (মুসনাদ আহমাদ, হাদীস-১০২৭২; আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীস-৬১)
যেহেতু এই জুমুআবার শ্রেষ্ঠ মর্যাদাপূর্ণ দিন, সুতরাং এই দিনের জন্য চাই বিশেষ প্রস্তুতি। হাদীসে এই দিনে কিছু বিশেষ আমলের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এবং সেই আমলগুলোর বিশেষ ফদীলত বর্ণনা করা হয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে সেগুলো আলোকপাত করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।
জুমুআর দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে জুমুআর নামায আদায় করা। কারণ জুমুআকে আল্লাহ তাআলা বান্দার উপর ফরয করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
হে মুমিনগণ! জুমুআর দিন যখন নামাযের জন্য ডাকা হয়, তখন আল্লাহর যিকরের দিকে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ছেড়ে দাও। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (সূরা জুমুআহ, আয়াত-৯)
আল্লাহ তাআলা জুমুআর আযান হলে ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করে তাঁর যিকরের প্রতি ধাবিত হতে আদেশ করেছেন, আল কুরআনের মধ্যে আল্লাহর স্পষ্ট আদেশ, ফরয অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ e বলেন,
الجُمُعةُ حَقٌّ واجِبٌ على كلِّ مُحْتلِمٍ.
الراوي: حفصة • جمال الدين المرداوي، كفاية المستقنع لأدلة المقنع (282) • إسناده جيد
প্রত্যেক সাবালক পুরুষের উপর জুমুআ আদায় করা অত্যাবশ্যক দায়িত্ব। (কিফায়াতুল মুসতানকি, ২৮২)
তবে চার শ্রেণির উপর জুমুআ ফরয নয়।
রাসূলুল্লাহ e বলেন,
الجمعةُ حقٌّ واجبٌ في جماعةٍ، إلا أربعةُ: عبدٌ مملوكٌ، أو امرأةٌ، أو صبيٌّ، أو مريضٌ
রাসূলুল্লাহ e বলেন, জুমুআর নামায প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাআতের সাথে আদায় করা ফরয। তবে চার শ্রেণির লোকের জন্য ফরয নয়; ক্রীতদাস, নারী, শিশু ও রোগী। (সুনান আবূ দাঊদ, ১০৬৭)
জুমুআর নামায ত্যাগকারীর বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ e এর কঠিন ধমক রয়েছে। রাসূলুল্লাহ e বলেন,
مَنْ تَرَكَ ثَلاَثَ جُمَعٍ تَهَاوُنًا بِهَا طَبَعَ اللَّهُ عَلَى قَلْبِهِ
যে ব্যক্তি অলসতা করে পরপর তিনটি জুমুআহ ত্যাগ করে মহান আল্লাহ তার অন্তরে সীলমোহর মেরে দেন। (সুনান আবূ দাঊদ, ১০৫২)
অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ e বলেন,
من تركَ ثلاثَ جمعاتٍ من غيرِ عذرٍ كتبَ منَ المنافقين
যে ব্যক্তি বিনা ওযরে তিনটি জুমুআ ত্যাগ করল তাকে মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়! (মাজমাউয যাওয়াইদ, ২/১৯৬, তাবারানী, হাদীস-৪২৪)
তবে কেউ যদি ওযরের কারণে জুমুআ না পড়তে পারে, তবে সে যুহরের নামায আদায় করে নিবে। আর কেউ যদি বিনা ওযরে জুমুআ ত্যাগ করে যুহর পড়ে, তবে তার নামায মাকরূহের সাথে আদায় হবে। আল ইখতিয়ার লি তালিলিল মুখতার কিতাবে ইমাম মুসিলী (র.) বলেন,
ومن صلى الظهر يوم الجمعة بغير عذر جاز و يكره.
অর্থাৎ বিনা ওযরে জুমুআ ত্যাগ করে যুহর পড়লে তা মাকরূহের সাথে আদায় হবে। (আল ইখতিয়ার, ১/২৭৯)
তো এই ফরয জুমুআর নামায আদায়ের সাথে কিছু সুন্নাত কাজ জড়িত রয়েছে, যেগুলো আদায় করলে বিশেষ ফদীলত পাওয়া যায়। সেই কাজগুলো হচ্ছে,
১. উত্তমভাবে মিসওয়াক করা, এবং গোসল করা। জুমুআর দিন গোসল করা সুন্নাত। তবে গোসলের সুযোগ না থকলে অবশ্যই উযূ করে নিবে। রাসূলুল্লাহ e বলেন,
مَنْ تَوَضَّأَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَبِهَا وَنِعْمَتْ وَمَنِ اغْتَسَلَ فَهُوَ أَفْضَلُ
-যে ব্যক্তি জুমুআর দিন উযূ করল, সে তো ভালো ও উত্তম কাজ করল। আর যে গোসল করলো সে অধিকতর উত্তম কাজ করল। (সুনান আবূ দাঊদ, হাদীস-৩৫৪)
২. উত্তম পোশাক পরিধান করা।
৩. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩. কাউকে না ডিঙিয়ে সামনের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে যতটুকু সম্ভব ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসা।
৪. খুতবাহ শুরুর পূর্বে, সাধ্যমতো নফল নামায আদায় করা।
৫. কোনোরূপ অনর্থক কথা না বলে মনযোগ দিয়ে ইমামের খুতবাহ শুনা। এই কাজগুলোর ফদীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ e বলেন,
مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلَبِسَ مِنْ أَحْسَنِ ثِيَابِهِ وَمَسَّ مِنْ طِيبٍ- إِنْ كَانَ عِنْدَهُ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَلَمْ يَتَخَطَّ أَعْنَاقَ النَّاسِ ثُمَّ صَلَّى مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ إِذَا خَرَجَ إِمَامُهُ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلاَتِهِ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهَا وَبَيْنَ جُمُعَتِهِ الَّتِي قَبْلَهَا. قَالَ وَيَقُولُ أَبُو هُرَيْرَةَ ”وَزِيَادَةُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ”.
-যে ব্যক্তি জুমুআর দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করবে, তার কাছে সুগন্ধি থাকলে ব্যবহার করবে, তারপর জুমুআর সালাত আদায়ের জন্য মাসজিদে যাবে, সামনে যাওয়ার জন্য লোকদের ঘাড় টপকাবে না এবং যথাসাধ্য সালাত আদায় করে ইমামের খুতবার জন্য বের হওয়া থেকে সালাত শেষ করা পর্যন্ত সময় নীরবতা অবলম্বন করবে- তাহলে এটা তার জন্য এ জুমুআ ও তার পূর্ববর্তী জুমুআর মধ্যবর্তী যাবতীয় (সগীরা) গুনাহর কাফ্ফারা হয়ে যাবে। আবূ হুরাইরা (রা.) বলেন, আরো তিন দিনের গুনাহেরও কাফফারা হবে। কেননা নেক কাজের সাওয়াব (কমপক্ষে) দশ গুণ হয়। (সুনান আবূ দাঊদ, হাদীস-৩৪৩)
৬. পায়ে হেঁটে যাওয়া।
রাসূলুল্লাহ e বলেন,
مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ ثُمَّ بَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ كَانَ لَهُ بِكُلِّ خُطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا
-যে ব্যক্তি জুমুআহর দিন গোসল করবে এবং (স্ত্রীকেও) গোসল করাবে, প্রত্যুষে ঘুম থেকে জাগবে এবং (পরিবারের অন্যান্যদের ও) জাগাবে, জুমুআর জন্য বাহনে চড়ে নয় বরং পায়ে হেঁটে মাসজিদে যাবে এবং কোনরূপ অনর্থক কথা না বলে ইমামের নিকটে বসে খুতবা শুনবে, তার (মাসজিদে যাওয়ার) প্রতিটি পদক্ষেপ সুন্নাত হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে সে এক বছর যাবত সিয়াম পালন ও রাতভর সালাত আদায়ের (সমান) সাওয়াব পাবে। (সুনান আবূ দাঊদ, হাদীস-৩৪৫)
৮. যথাসম্ভব আগেভাগে জুমুআর দিন মসজিদে যাওয়া।
রাসূলুল্লাহ e বলেন,
إِذَا كَانَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ، وَقَفَتِ الْمَلاَئِكَةُ عَلَى باب الْمَسْجِدِ يَكْتُبُونَ الأَوَّلَ فَالأَوَّلَ، وَمَثَلُ الْمُهَجِّرِ كَمَثَلِ الَّذِي يُهْدِي بَدَنَةً، ثُمَّ كَالَّذِي يُهْدِي بَقَرَةً، ثُمَّ كَبْشًا، ثُمَّ دَجَاجَةً، ثُمَّ بَيْضَةً، فَإِذَا خَرَجَ الإِمَامُ طَوَوْا صُحُفَهُمْ، وَيَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ.
-জুমুআর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতাগণ অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে পূর্বে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার পূর্বে আসে, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি মোটাতাজা উট কুরবানী করে। অতঃপর যে আসে, সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি গাভি কুরবানী করে। অতঃপর আগমনকারী ব্যক্তি মোরগ দানকারীর ন্যায়। অতঃপর আগমনকারী ব্যক্তি একটি ডিম দানকারীর ন্যায়। অতঃপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতাগণ তাঁদের খাতা বন্ধ করে দিয়ে মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শ্রবণ করতে থাকেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস-৯২৯)
৯. কাবলাল জুমুআ চার রাকাআত, এবং বাদাল জুমুআ চার রাকাআত আদায় করা যা সুন্নতে মুআক্কাদা।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّي قَبْلَ الْجُمُعَةِ أَرْبَعًا وَبَعْدَهَا أَرْبَعًا
-আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ (রা.) জুমুআর (ফরযের) পূর্বে চার রাকাআত এবং পরে চার রাকাআত (সুন্নাত) নামায আদায় করতেন। (জামে আত তিরমিযী, হাদীস-৫২৩)
রাসূলুল্লাহ e আরও বলেন,
إِذَا صَلَّى أَحَدُكُمُ الْجُمُعَةَ فَلْيُصَلِّ بَعْدَهَا أَرْبَعًا
-তোমাদের কেউ যখন জুমুআর সালাত আদায় করে, তখন সে যেন তার পরে চার রাকাআত (সুন্নাত) সালাত আদায় করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস-১৯২১)
যেসব কাজগুলো জুমুআর সাওয়াবকে বরবাদ করে দেয়
১. খুতবাহ’র সময় কথা বলা
أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَنْصِتْ. وَالإِمَامُ يَخْطُبُ فَقَدْ لَغَوْتَ
আবূ হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল e বলেছেন, জুমুআর দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লীকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবাহ দিচ্ছেন, তাহলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে। (সহীহ বুখারী, হাদীস-৯৩৪)
খুতবাহ চলাকালীন সময়ে নামায এবং তাসবীহ পড়ার হুকুম
ইমাম আবুল হাসান আল কুদূরী (র.) বলেন,
وإذا خرج الإمام على المنبر يوم الجمعة ترك الناس الصلاة والكلام حتى يفرغ من خطبته.
অর্থাৎ যখন ইমাম সাহেব মিম্বরে আরোহন করবেন তখন মুসল্লিরা নামায পড়া ও কথা বলা বন্ধ করে দিবে যতক্ষণ না ইমাম সাহেব খুতবাহ শেষ করেন।
ইমাম তাহতাবী (র.) বলেন, পুরাতন কাযা নামায, তিলাওয়াতে সিজদা, মান্নতের নামাযসহ সকল ধরনের নফল নামায তখন বন্ধ রাখবে। তবে যদি জুমুআর আগের ওয়াক্তের নামায কাযা থাকে যা জুমুআহ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য জরুরি (অর্থাৎ ওয়াক্তিয়া নামায বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য পিছনের কাযা নামায যা ৬ ওয়াক্ত থেকে কম, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে আদায় করা ওয়াজিব। সুতরাং) সেই কাযা নামায খুতবাহ চলাকালীন পড়তে পারবে।
আর কথা বলা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাখ্যা হচ্ছে: ইমাম সাহেব মিম্বরে আরোহন করা মাত্র দুনিয়াবি সব কথাবার্তা বন্ধ থাকবে। তবে খুতবাহ শুরুর পূর্বে তাসবীহ এবং যিকর পড়তে পারবেন। সুতরাং মুসল্লীরা মুআযযিনের আযানের জবাব দিবেন। কারণ সহীহ বুখারীতে এসেছে, মুআবিয়া (রা.) মিম্বরে বসে আযানের জবাব দিয়েছেন। এবং বলেছেন,
قالَ: يا أيُّها النّاسُ، إنِّي سَمِعْتُ رَسولَ اللَّهِ صَلّى اللهُ عليه وسلَّمَ على هذا المَجْلِسِ، حِينَ أذَّنَ المُؤَذِّنُ، يقولُ ما سَمِعْتُمْ مِنِّي مِن مَقالتِي.
-হে লোকসকল! তোমরা আমার হতে যে বাক্যগুলো শুনেছ, তা আল্লাহর রাসূল e-কে মুয়াযযিনের আযানের সময় এ মজলিসে বাক্যগুলো বলতে আমি শুনেছি। (বুখারী, ৯১৪; হাশিয়াতুত তাহতাবী, ৫১৮)
২. খুতবার সময় অমনোযোগী থাকা, পাথর বা অন্য কিছু নাড়াচাড়া করা।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَدَنَا وَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ وَزِيَادَةُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ وَمَنْ مَسَّ الْحَصَى فَقَدْ لَغَا. قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
আবূ হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ e বলেছেন, যে ব্যক্তি ভালোভাবে উযূ করে জুমুআর নামায আদায় করতে আসে, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে মনোযোগ সহকারে নীরবে খুতবা শুনে, তাঁর এ জুমুআ হতে ঐ জুমুআ পর্যন্ত এবং আরো তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি কাঁকর-বালি ইত্যাদি নাড়াচাড়া করলো সে বাজে কাজ করলো। (সহীহ ইবন মাজাহ- ১০৯০)
ইমাম আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। (জামে আত তিরমিযী, হাদীস-৪৯৮)
৩. মানুষকে ডিঙিয়ে অগ্রসর হওয়া।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَجُلاً، دَخَلَ الْمَسْجِدَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ـ يَخْطُبُ فَجَعَلَ يَتَخَطَّى النَّاسَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ وَآنَيْتَ.
জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, জুমুআর দিন রাসূলুল্লাহ e এর খুতবারত অবস্থায় এক ব্যক্তি মাসজিদে প্রবেশ করলো। সে লোকের ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ e বলেন, তুমি বসো, তুমি (অন্যকে) কষ্ট দিয়েছ এবং অনর্থক কাজ করেছ। (সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস-১১১৫)
জুমুআর দিনের অন্যান্য সুন্নত আমল হচ্ছে-
১. জুমুআর রাত থেকে নিয়ে সূর্যাস্তের পূর্বে একবার সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা।
রাসূলুল্লাহ e বলেন,
مَنْ قَرَأَ سورة الكهفِ يومَ الجمعةِ أَضاءَ له مِنَ النُّورِ ما بيْنَ الجُمعتينِ. المستدرك على الصحيحين (3436) صحيح الإسناد
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি জুমুআর দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য দুই জুমুআর মধ্যবর্তী সময় নূর দ্বারা আলোকোজ্জ্বল করে দিবেন।
২. দুআ কবূলের বিশেষ সময়ে আল্লাহর কাছে দুআ করা।
রাসূলুল্লাহ e বলেন,
وَفِيهِ سَاعَةٌ لَا يَسْأَلُ اللهَ الْعَبْدُ فِيهَا شَيْئًا إِلّا أَعْطَاهُ إِيّاهُ، مَا لَمْ يَسْأَلْ حَرَامًا،
জুমুআর দিন একটা সময় আছে, যে সময় বান্দা আল্লাহর কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাআলা তাকে তা-ই দান করবেন, যদি না সে হারাম কোনো বিষয়ের প্রার্থনা করে। (সুনান ইবন মাজাহ, ১০৮৪)
সেই সময়টি কোনটি? এটা নিয়ে ইখতিলাফ রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ মত দুইটি।
ক. আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত। কারণ হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ e বলেন,
الْتَمِسُوا السَّاعَةَ الَّتِي تُرْجَى فِي يَوْمِ الْجُمُعَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ إِلَى غَيْبُوبَةِ الشَّمْسِ
জুমুআর দিনের যে মুহূর্তে (দুআ কবূল হওয়ার) আশা করা যায় তা আসরের পর হতে সূর্যাস্তের মধ্যে খোঁজ কর। (সুনান তিরমিযী, ৪৮৯)
খ. সেই মূহুর্তটি হচ্ছে, ইমাম সাহেব মিম্বরে বসার পর থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত। আবূ মূসা আল আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা.) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তোমার পিতাকে রাসূলুল্লাহ e থেকে জুমুআর দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছ? তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমার পিতাকে রাসূলুল্লাহ e বলেছেন,
هِيَ مَا بَيْنَ أَنْ يَجْلِسَ الإِمَامُ إِلَى أَنْ تُقْضَى الصَّلاَةُ
ইমামের বসা থেকে সালাত শেষ করার মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সে মুহূর্তটি নিহিত। (সহীহ মুসলিম, হাদীস-১৮৬০)
প্রথম মত ইমাম আবূ হানীফা (র.) ও ইমাম আহমদ ইবন হাম্বল (র.) গ্রহণ করেছেন। দ্বিতীয় মত ইমাম শাফিঈ (র.) গ্রহণ করেছেন। আমাদের উচিত উভয় সময়েই দুআ এবং যিকরে মশগুল থাকা। তবে ২য় মত অনুযায়ী আমল করার সময় খুতবাহ এবং নামায চলাকালীন সময়ে দুআ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বরং যখন ইমাম খুতবাহ কিংবা নামাযে থাকবেন না সেই ফাঁকে ফাঁকে দুআ করে নিবেন।
৩. জুমুআর দিন বেশি বেশি দুরূদ শরীফ পাঠ করা।
রাসূলুল্লাহ e বলেন,
إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ قُبِضَ وَفِيهِ النَّفْخَةُ وَفِيهِ الصَّعْقَةُ فَأَكْثِرُوا عَلَىَّ مِنَ الصَّلاَةِ فِيهِ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَىَّ. قَالَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلاَتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرَمْتَ يَقُولُونَ بَلِيتَ. فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ عَلَى الأَرْضِ أَجْسَادَ الأَنْبِيَاءِ.
তোমাদের দিনসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হল জুমুআর দিন। এদিনে আদম (আ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছিলো, এদিনই তাঁর রূহ কবয করা হয়েছিলো, এদিন শিঙায় ফুৎকার দেওয়া হবে এবং এদিনই বিকট শব্দ করা হবে। কাজেই এদিন তোমরা আমার উপর বেশি দুরূদ পাঠ করো। কারণ তোমাদের দুরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়। তখন সাহাবারা বললেন: কীভাবে আমাদের দুরূদ আপনার কাছে পেশ করা হবে? অথচ আপনি মাটির সাথে মিশে যাবেন! আউস ইবন আউস (রা.) বলেন, তারা বুঝতে চাচ্ছিলেন আপনার শরীর তো জরাজীর্ণ হয়ে মিশে যাবে। রসূলুল্লাহ e বললেন, মহান সর্বশক্তিমান আল্লাহ মাটির জন্য নাবী-রাসূলগণের দেহকে হারাম করে দিয়েছেন। (সুনান আবূ দাঊদ, হাদীস-১০৪৭, হাদীসের মান: সহীহ)
জুমুআ বারের একটি বিশেষ দুরূদ শরীফ
রাসূলুল্লাহ e হযরত যায়িদ ইবন ওয়াহাব (রা.) কে বলেন,
يا زيدُ ! لا تدَعْ إذا كان يومُ الجمعةِ أن تُصلِّيَ على النَّبيِّ ﷺ ألفَ مرَّةٍ: تقولُ اللَّهمَّ صَلِّ على محمَّدٍ النَّبيِّ الأمِّيِّ
হে যায়িদ! তুমি জুমুআবারে اللَّهمَّ صَلِّ على محمَّدٍ النَّبيِّ الأمِّيِّ এই দুরূদ শরীফ এক হাজার বার পাঠ করা ছেড়ে দিও না। (القول البديع (283) في سنده لين)
৪. জুমুআবার মৃত্যুবরণের আকাঙ্ক্ষা করা। কারণ রাসূলুল্লাহ e বলেন,
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ إِلاَّ وَقَاهُ اللَّهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ.
জুমুআর দিনে অথবা জুমুআর রাতে কোন মুসলমান ব্যক্তি যদি মৃত্যুবরণ করে তাহলে কবরের শাস্তি হতে আল্লাহ তাকে রক্ষা করেন। (তিরমিযী, ১০৭৪)
৫. জুমুআবারের ফজরের নামাযকে বিশেষ গুরুত্বের সাথে জামাআতে আদায় করা। রাসূলুল্লাহ e বলেন,
إنَّ أفضلَ الصَّلواتِ عندَ اللَّهِ: صلاةُ الصُّبحِ يومَ الجمعةِ في جَماعةٍ
অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম নামায হচ্ছে জামাআতে আদায় করা জুমুআর দিনের ফজরের নামায।
أخرجه البزار (1279)، وأبو نعيم في (حلية الأولياء) (7/ 207)، والبيهقي في (شعب الإيمان) (3045) باختلاف يسير.
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন!

