Logo
ইমামগণের বয়ানে মাহফিলে মীলাদুন্নবী সা.
ইমাদ উদ্দীন তালুকদার
  • ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

অন্ধকারাচ্ছন্ন এই জগতে হিদায়াতের নূর হয়ে এসেছিলেন সায়্যিদুল মুরসালীন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। বর্বরতার অতল গহবরে তলিয়ে যাওয়া মানবজাতিকে পরম যত্নে শান্তি ও মুক্তির মোহনায় আগলে এনেছেন। রহমত ছড়িয়ে দিয়েছেন কুল কায়িনাতের পরতে পরতে। কিয়ামততক নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই রহমতের পদচিহ্নেই আল্লাহ মানবতার মুক্তি এঁকে দিয়েছেন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর দেওয়া নিআমতরাজির শুকরিয়া আদায়ের আদেশ করেছেন। আর নিআমতরাজির মাঝেতো শ্রেষ্ঠ নিআমত রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মাখলুকাতের মাঝে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মর্যাদা বেমিছাল। এজন্য ইসলামের স্বর্ণযুগ কুরূনে সালাসা থেকেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুনিয়াতে আগমন, তার উম্মত হওয়ার শুকরিয়া ও শ্রেষ্ঠত্বের গুণকীর্তন করার ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত মাহফিলের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এভাবে উম্মতে মুহাম্মদী প্রত্যেক যুগেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের শুকরিয়া আদায় করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের শুকরিয়া আদায় কেন্দ্রিক এই মাহফিলে মীলাদুন্নবী উম্মাতে মুহাম্মাদীর মাঝে এত ব্যাপক হয়েছে যে, চার মাযহাবের সবগুলোতে মাহফিলে মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। এই দিককে বিবেচনা করে সংক্ষিপ্তভাবে চার মাযহাবের কতিপয় ইমামের বক্তব্য তুলে ধরছি।

ইমাম আবু শামা আল মাকদিসী রাহিমাহুল্লাহ শাফিঈ (৬৬৫ হি.) বলেন-

ومن احسن ما ابتدع في زماننا ما يفعل كل عام وَمن أحسن مَا ابتدع فِي زَمَاننَا من هَذَا الْقَبِيل مَا كَانَ يفعل بِمَدِينَة اربل جبرها الله تَعَالَى كل عَام فِي الْيَوْم الْمُوَافق ليَوْم مولد النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم من الصَّدقَات وَالْمَعْرُوف واظهار الزِّينَة وَالسُّرُور فان ذَلِك مَعَ مَا فِيهِ من الاحسان الى الْفُقَرَاء مشْعر بمحبة النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وتعظيمه وجلالته فِي قلب فَاعله وشكرا لله تَعَالَى على مَا من بِهِ من ايجاد رَسُوله الَّذِي أرْسلهُ رَحْمَة للْعَالمين

আর আমাদের যুগে উত্তম বিদআত শুরু হয়েছে যে, প্রতি বছর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের দিনে সাদাকাহ, ভালো কাজ, খুশি ও আনন্দ সৌন্দর্য্য প্রকাশ করা এ সবকিছুই নবীজির মহব্বতে ও সম্মানে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাহমাতুল্লিল আলামীন করে পাঠিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। (ইমাম আবূ শামাহ আল মাকদিসী, আল বায়িস আলা ইনকারিল বিদয়ী ওয়াল হাওয়াদিস: ২৩;শামেলা)

আল্লামা ইবনুল হাজ আল মালিকী রাহিমাহুল্লাহ (৭৩৭ হি.) বলেন,

فَكَانَ يَجِبُ أَنْ يُزَادَ فِيهِ مِنْ الْعِبَادَاتِ وَالْخَيْرِ شُكْرًا لِلْمَوْلَى سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَلَى مَا أَوْلَانَا مِنْ هَذِهِ النِّعَمِ الْعَظِيمَةِ وَإِنْ كَانَ النَّبِيُّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – لَمْ يَزِدْ فِيهِ عَلَى غَيْرِهِ مِنْ الشُّهُورِ شَيْئًا مِنْ الْعِبَادَاتِ وَمَا ذَاكَ إلَّا لِرَحْمَتِهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بِأُمَّتِهِ وَرِفْقِهِ بِهِمْ لِأَنَّهُ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – كَانَ يَتْرُكُ الْعَمَلَ خَشْيَةَ أَنْ يُفْرَضَ عَلَى أُمَّتِهِ رَحْمَةً مِنْهُ بِهِمْ كَمَا وَصَفَهُ الْمَوْلَى سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى فِي كِتَابِهِ حَيْثُ قَالَ {بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ} [التوبة: ١٢٨] . لَكِنْ أَشَارَ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ

-অতএব এ মাসে (রবীউল আউয়ালে) আল্লাহ তাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ইবাদাত ও কল্যাণমূলক কাজ বৃদ্ধি করা উচিত, যেহেতু তিনি আমাদের উপর এ মহা নিআমত (রাসূল সা.) দান করেছেন। যদিও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য মাসের তুলনায় এ মাসে কোনো অতিরিক্ত ইবাদাত বৃদ্ধি করেননি। আর এটি কেবলই তাঁর উম্মতের প্রতি দয়া ও কোমলতার কারণে ছিল। কেননা তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক সময় আমল পরিত্যাগ করতেন, আশঙ্কা করতেন যে সেটি তাঁর উম্মতের ওপর ফরজ হয়ে যাবে—এটি তাঁর পক্ষ থেকে উম্মতের প্রতি করুণা। যেমন মহান আল্লাহ তাঁর কিতাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম–এর এই গুণের বর্ণনা দিয়েছেন—মুমিনদের প্রতি তিনি অত্যন্ত কোমল ও দয়ালু (সূরা তাওবাহ, আয়াত-১২৮)। (ইমাম ইবনুল হাজ আল মালিকী রাহিমাহুল্লাহ, আল-মাদখাল ২/২)

আল্লামা ইবনু রজব হাম্বালী রাহিমাহুল্লাহ (৭৯৫হি.) রবীউল আউয়াল উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। তিনি একজন মুমিনের সারা বছরের রুটিনের নির্দেশনা প্রদান করে রবীউল আউয়াল মাসকে বিশেষভাবে উদযাপনের কথা বলেন। লাতায়িফুল মাআরিফ গ্রন্থে রবীউল আউয়ালের ক্ষেত্রে মাসকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম দুই ভাগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মবৃত্তান্ত আলোচনা করা এবং শেষভাগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তিকাল আলোচনার কথা বলেন। (আল্লামা ইবনু রজব হাম্বলী রাহিমাহুল্লাহ (৭৯৫ হি.), লাতায়িফুল মাআরিফ ফী মা লি মাওয়াসিমিল আমি মিনাল ওয়াজাইফ, ওয়াজাইফু শাহরি রাবীউল আউয়াল)

ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী শাফিঈ রাহিমাহুল্লাহ (৮৫২ হি.) বলেন,

أصل عمل المولد بدعة لم تنقل عن أحد من السلف الصالح من القرون الثلاثة الصحابة والتابعين وتابع التابعين ولكنها مع ذلك قد اشتملت على محاسن وضدها، فمن تخرى في عملها المحاسن وتجنب ضدها كان بدعة حسنة وإلا فلا

মীলাদ মাহফিলের মূল হলো হাওয়াদিস মাসআলা তথা নবী পরবর্তী যুগে সূচনা হওয়া বিষয়। কুরূনে সালাসা সাহাবাহ, তাবিঈ, তাবে তাবিঈ—সালফে সালিহীনের যুগে এরকম সম্মিলিত সুরত পাওয়া যায় না। এই মাহফিলে প্রশংসনীয় ও নিন্দনীয় উভয়ের সংমিশ্রণ হয়ে গেছে। যে মাহফিলে মীলাদুন্নবীতে নেক আমলের সমন্বয় করবে আর গুনাহ পরিত্যাগ করবে, তার আমল বিদআতে হাসানাহ হবে, অন্যথায় হবে না। তিনি আরো বলেন,

ما كان من ذلك مباحا بحيث يقتضي السرور بذلك اليوم لا بأس بإلحاقه به، وما كان حراما أو مكروها فيمنع، وكذا ما كان خلاف الأولى

এদিনে খুশি প্রকাশ ও তার সাথে সম্পৃক্ত মুবাহ (বৈধ) বিষয়গুলোতে কোনো সমস্যা নেই। কেবল এগুলোতে হারাম ও মাকরূহ কাজের যা সম্পৃক্ত হবে, তা নিষিদ্ধ হবে। তেমনই এতে খেলাফে আওলা তথা উত্তমতার বিপরীত কিছু হয়ে থাকলে তাও নিষেধ করা হবে। (ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী (৯১১ হি.), আল হাভী লিল ফাতাওয়া)

আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী হানাফী রাহিমাহুল্লাহ (১০৫২ হি.) বলেন,

وما زال أهل الإسلام يحتفلون بشهر مولده صلى الله عليه وسلم، ويعملون الولائم، ويتصدقون في لياليه بأنواع الصدقات، ويظهرون السرور، ويزيدون في المبرات، ويعتنون بقراءة مولده الكريم، ويظهر عليهم من بركاته كل فضل عميم

-সবসময় মুসলমানগণ তাঁর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমনের মাসকে স্মরণ করে আনন্দ-উৎসব পালন করে আসছে। তারা খাবারের আয়োজন করেন, রাতে সাদকাহ-খাইরাত করেন, খুশি জাহির করে, নেক আমল বাড়িয়ে দেয়, তাঁর পবিত্র মীলাদ পাঠে মনোনিবেশ করে এবং তাঁর বরকত থেকে তাদের উপর অফুরন্ত কল্যাণ পরিলক্ষিত হয়।

তিনি আরও বলেন,

ومما جرب من خواصه أنه أمان في ذلك العام، وبشرى عاجلة بنيل البغية والمرام، فرحم الله امراً اتخذ ليالي شهر مولده المبارك أعيادا، ليكون أشد علة على من في قلبه مرض وعناد

আর এই আমলের বরকতে দেখা যায়, এ মাসে শান্তি, নিরাপত্তা নাযিল হয় এবং তাৎক্ষণিক সুসংবাদ হলো—মানুষের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। সুতরাং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক সেই ব্যক্তির ওপর, যে তাঁর মুবারক মীলাদ মাসের রাতগুলোকে ঈদের মতো গ্রহণ করে, যাতে এই আয়োজন যেন হয়ে ওঠে কঠিন আঘাত সেইসব লোকদের ওপর— যাদের অন্তরে রোগ ও জেদ রয়েছে (নবীপ্রেম পিছুটান যাদের)। (আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী হানাফী রাহিমাহুল্লাহ, মা সাবাতা বিস সুন্নাহ, রবীউল আউয়াল অধ্যায়)

আল্লামা ইসমাইল হাক্কী রাহিমাহুল্লাহ (১১২৭হি.) বলেন,

ومن تعظيمه عمل المولد اذا لم يكن فيه منكر قال الامام السيوطي يستحب لنا اظهار الشكر المولده عليه السلام.

-আর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তাযীমের অন্তর্গত হলো- মীলাদ মাহফিল উদযাপন করা। যদি তাতে কোনো গর্হিত কর্ম যুক্ত না থাকে। শাইখ জালালুদ্দীন সুয়ূতী (র.) বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মীলাদ তথা জন্মে আমাদের জন্য খুশি প্রকাশ করা মুস্তাহাব হবে। (আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী রাহিমাহুল্লাহ, রূহুল বায়ান:  ৯/৫৬)

আল্লামা ইবনুল আলাভী আল মালিকী রাহিমাহুল্লাহ (১৪২৫ হি.) বলেন,

أننا لا نقول بأن الاحتفال بالمولد المذكور في ليلة مخصوصة وعلى الكيفية المعهودة لدينا مما نصت عليه الشريعة صراحة كما هو الشأن في الصلاة والصوم وغيرهما إلا أنه ليس فيها ما يمنع من ذلك لأن الاجتماع على ذكر الله والصلاة والسلام على رسول الله ﷺ ونحو ذلك من وجوه الخير مما ينبغي الاعتناء به كلما أمكن لاسيما في شهر مولده لأن الداعي فيه أقوى لإقبال الناس واجتماعهم وشعورهم الفياض بارتباط الزمان بعضه ببعض، فيتذكرون الحاضر والماضي وينتقلون من الشاهد إلى الغائب

আমরা এটা বলি না যে, বিশেষ কোনো রাতে এবং আমাদের প্রচলিত পদ্ধতিতে মীলাদ উদযাপন করা শরীআতের দ্বারা সরাসরি নির্ধারিত হয়েছে, যেমন নামায, রোযা ইত্যাদি নির্ধারিত হয়েছে। তবে এরূপ উদযাপনে কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই; কারণ আল্লাহর যিকর করা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দুরূদ ও সালাম প্রেরণ করা এবং নেকীর অন্যান্য কাজের জন্য একত্রিত হওয়া এমন বিষয় যা যতবার সম্ভব গুরুত্ব দিয়ে করা উচিত। বিশেষ করে নবীজীর জন্ম মাসে, কেননা এ সময় মানুষের আগ্রহ, সমাবেশ এবং প্রবল আবেগ বেশি থাকে। এতে মানুষ বর্তমান ও অতীতকে স্মরণ করে এবং দৃশ্যমান থেকে অদৃশ্যের দিকে অগ্রসর হয়। (আল্লামা মুহাম্মাদ ইবনুল আলাভী আল-মালিকী আল-হাসানী রাহিমাহুল্লাহ, হাওলাল ইহতিফাল বি-যিকরিল মাওলিদিশ শারীফ: ১৪ পৃষ্ঠা)

এছাড়াও সালাফের অনেক ইমাম এর পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন, নিজেরা আমল করেছেন। বলা যায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সকলেই মাহফিলে মীলাদুন্নবীর পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন- ব্যতিক্রম ছাড়া।  বর্তমান যুগেও মাহফিলে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরব অনারব সকলের কাছেই স্বতঃসিদ্ধ একটি বিষয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তার শ্রেষ্টতম নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমনের শুকরিয়া আদায়ের তৌফিক দান করুন এবং খাঁটি আশিকে রাসূল হিসেবে কবূল করুন।

পরিশেষে আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (র.) এর একটি বক্তব্য উল্লেখ করতে চাই। তিনি বলেন-

يستحب لنا أيضا إظهار الشكر بمولده بالاجتماع وإطعام الطعام ونحو ذلك من وجوه القربات وإظهار المسرات

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মীলাদ উপলক্ষ্যে সম্মলিতি হওয়া, খাবার খাওয়ানো এবং অন্যান্য নেক আমল করার মাধ্যমে খুশি প্রকাশ করাও আমাদের জন্য মুস্তাহাব। (ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রাহিমাহুল্লাহ (৯১১হি.), আল হাভী লিল ফাতাওয়া ১/১৮৮)

ফেইসবুকে আমরা...