সৌদি আরব ও কাতার প্রায় সাড়ে তিন বছরের দ্বন্ধ-বিরোধের অবসান ঘটিয়ে সম্প্রতি সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধন রচনা করেছে। অন্যদিকে সৌদি-তুরস্ক সম্পর্কেও পরিবর্তন ও নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সৌদি আরব ও কাতার পরস্পরের আকাশ, স্থল ও সমুদ্র সীমান্ত খুলে দিয়েছে। দেশ দুটির এই সমঝোতাকে মধ্যপ্রাচ্য ও আরব দেশগুলোর মধ্যে বড় মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে গত ডিসেম্বরে সৌদি আরবের আল-উলা শহরে অনুষ্ঠিত হয় উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আঞ্চলিক সম্মেলন। এ সম্মেলনেই কাতারের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর সম্পর্ক পুন:স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানান সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। চুক্তিকে মোহাম্মদ বিন সালমান নিজেদের মধ্যে ‘সংহতি ও স্থিতিশীলতার’ চুক্তি বলে মন্তব্য করেন। যুবরাজ বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলের উন্নতি ও চারপাশে থাকা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা জরুরী।’
এ চুক্তিতে পৌঁছার জন্য ভূমিকা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেরও। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ভূরাজনৈতিক স্বার্থে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোকে একজোট এবং ইরানের বিরুদ্ধে দেশগুলোকে এক কাতারে আনতে উদ্যোগ নেয়। এজন্য ট্রাম্পের জামাতা ও তৎকালীন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত জারেড কুশনার গত বছরের শেষদিকে মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন এবং জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালান। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। আর এসবের ফলেই আজ সৌদি-কাতারের নতুন যুগের সূচনা। উল্লেখ্য, কাতার একটি ছোট্ট দেশ। এর জনসংখ্যা মাত্র ২৭ লাখ। আর এর অধিকাংশই প্রবাসী। তেল ও গ্যাস সম্পদ দেশটিকে বিশ্বের ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটিতে পরিণত করেছে। দেশটি এশিয়া ও ইউরোপে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
বিরোধের নেপথ্যে:
২০১৭ সালের জুনে আচমকা কাতারের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেশটি আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরি ও সন্ত্রাসবাদ উসকে দিচ্ছে। পাশাপাশি ইরান ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও তোলা হয়। কাতারকে ইরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক সীমিত এবং দোহাভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়ারও দাবি জানায় সৌদি আরব।
ইরানের সঙ্গে আঞ্চলিক ক্ষমতার আধিপত্য নিয়ে সৌদি আরবের বিরোধ দীর্ঘ দিনের। ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিরও বিরোধী সৌদি আরব। কাতারকে একঘরে করে উপসাগরীয় অঞ্চলে ইরানকে বন্ধুহীন করার লক্ষ্য ছিল সৌদি আরবের। কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সঙ্গে সামিল হয় বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর। পরে এই দেশগুলোর সঙ্গে যোগ দেয় ইয়েমেন, লিবিয়া ও মালদ্বীপ। আর এই সাতটি দেশই কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি স্থল, নৌ ও আকাশপথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় কাতারের সঙ্গে। আরোপ করে নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ। তবে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করার অভিযোগ কাতার বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
এদিকে আঞ্চলিকভাবে কাতারের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ। এটাও ছিল সৌদি আরবের উদ্বেগের একটি কারণ। কাতার ও তুরস্ক উভয় দেশই সিরিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত ইসলামী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থনের নীতি গ্রহণ করে। তুরস্ক কাতারে সামরিক ঘাঁটিও স্থাপন করে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটাতে দেশটিতে ইসলামপন্থী দলগুলো লড়ছে।
সৌদি নেতৃত্বে কাতারের বিরুদ্ধে উপসাগরীয় দেশগুলোর ব্যবস্থা গ্রহণে এ অঞ্চলে কাতার একঘরে হয়ে এক গভীর সংকটের মুখে পড়ে। কাতারের খাদ্যসামগ্রী আমদানির বেশির ভাগই হতো সৌদি আরবের সীমান্তপথে। স্থলপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় কাতারের নির্মাণশিল্পেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে ২০২২ সালে ফুটবল বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্য কাতারের সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। বর্তমানে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ও বিরোধ মিটে যাওয়ায় এ আশঙ্কা এখন অনেকটাই কেটে গেছে। দেখা দিয়েছে নতুন আশার আলো।
সৌদি-তুরস্ক সম্পর্কেও নতুন চমক:
এদিকে সৌদি আরব ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের। মূলত আরব বিশ্ব ও মুসলিম দুনিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি। আরব বিশ্ব ও মুসলিম দুনিয়ায় একচেটিয়া মোড়লীপনা ছিল সৌদি আরবের। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মস্থান এবং দুই পবিত্র মসজিদের সেবক হিসেবে সৌদি আরবকে মুসলিম বিশ্ব আলাদা মর্যাদায় দেখে থাকে। অবশ্য ওসমানিয়া সালতানাত আমলে দুই পবিত্র মসজিদের তথা মক্কা ও মদীনার খাদিম ছিলেন তৎকালীন তুর্কি ওসমানীয় শাসকেরা। পরবর্তীকালে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে ওসমানীয় সালতানাতের পরাজয় এবং ব্রিটিশরা এ অঞ্চল থেকে চলে যাবার পর বর্তমান সৌদি আরব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই মুসলিম বিশ্বে সৌদি প্রভাবেরও শুরু। ২০১০ সালের শুরুতে পশ্চিমা শক্তির মদদে যে তথাকথিত ‘আরব বসন্তে’র জাগরণ তার ঘোর বিরোধী ছিল সৌদি আরব। অন্যদিকে এর পক্ষের শক্তি ছিল তুরস্ক। এই তথাকথিত ‘আরব বসন্তে’র পর থেকেই দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ব্যাপক রূপ নেয়। এর আগে অবশ্য বাগদাদ চুক্তি, স্নায়ুযুদ্ধ, ইরান-ইরাক যুদ্ধসহ বিভিন্ন ইস্যুতে উভয় দেশকে একই কাতারে দেখা গেছে। কিন্তু সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ‘আরব বসন্তে’র পর থেকে। আর সবশেষে সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের চার বছরের শাসনামলে এই সম্পর্কের অবনতি চূড়ান্ত রূপ নেয়। এই সময় সৌদি বাদশাহর শারীরিক অসুস্থতার সুযোগে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই হয়ে ওঠেন দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্র। আর যুবরাজ বিন সালমানের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে ট্রাম্পের। অন্যদিকে ট্রাম্প আমলের পুরো সময় যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক সম্পর্ক তিক্ততায় রূপ নেয়। এ সময় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট অফিসে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকান্ড দুই দেশকে নিয়ে যায় একেবারে দুই মেরুতে। মোহাম্মাদ বিন সালমানের নাম মুখে না নিলেও তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান পরোক্ষভাবে এমন আভাস দেন যে, এই হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা যুবরাজই। অন্যদিকে এ হত্যাকান্ডে যুবরাজ বিন সালমানের হাত ছিল এমনটাই ধারণা আন্তর্জাতিক মহলেও। কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে সুস্পর্কের কারণে এ থেকে অনেকটা রেহাই পেয়ে যান সৌদি যুবরাজ।
এদিকে ২০১৪ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদে তুরস্কের মনোনয়নের প্রকাশ্য বিরোধিতা করে সৌদি আরব। বর্তমানে চলমান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে শুরুতে দুই দেশ একই লক্ষ্যে মাঠে নামলেও কিছুদিন পরই তৈরি হয় বিভক্তি। লিবিয়ার গৃহযুদ্ধেও পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দেশ দুটি। ২০১৭ সালে সৌদি আরব-কাতারের বিরুদ্ধে যে নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ আরোপ করে দুই দেশকে তা আরও দূরত্বে নিয়ে যায়। এ সময় থেকে বিশেষ করে বর্তমান তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের আমলে মুসলিম বিশ্বে শুরু তুরস্কের প্রভাব বিস্তারের। সৌদিকে হটিয়ে মুসলিম বিশ্বের নেতৃত্বে আসার চেষ্টা চালায় তুরস্ক। এ ক্ষেত্রে তুরস্কের লক্ষ্যনীয় তৎপরতাও দেখা যায়। ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গা, কাশ্মীর, চীনের উইঘুর ইত্যাদি মুসলিম ইস্যুতে তুরস্ককে যতটা সোচ্চার দেখা গেছে, সৌদি আরবকে তেমন দেখা যায়নি। বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ এই অঞ্চলের মুসলিম দেশগুলোর সাথেও কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে তুরস্ক। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ককেশাসসহ বিভিন্ন অঞ্চলেও তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। গত ১০ বছরে এরদোয়ান ৩০টি আফ্রিকান দেশে ২৮ বার সফর করেছেন। লিবিয়াতে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত খলিফা হাফতারকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে তুরস্কই বড় ভূমিকা রেখেছে। অতি সাম্প্রতিক নাগোরনো-কারাবাখের যুদ্ধে আজারবাইজানের জেতার নেপথ্যেও তুরস্ক। অপরদিকে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় রোহিঙ্গা ও কাশ্মীর ইস্যু সৌদির কাছে যতটা গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল তা পায়নি।
নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত:
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় এবং জো বাইডেন ক্ষমতায় আসায় আরব বিশ্বেও শুরু হয়েছে পরিবর্তনের ইঙ্গিত। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সূত্র থেকে যে আভাস পাওয়া যায়, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের সৌদি নীতিতেও পরিবর্তন আসতে পারে। তবে খুব সহসাই রাতারাতি সব পরিবর্তন ঘটবে তাও নয়। সৌদি আরব ছিলো মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের পর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র। জো বাইডেন সব দেখে শুনেই এগুবেন। নির্বাচনের আগে ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি পুণরায় বাস্তবায়নের আভাস দিয়েছিলেন জো বাইডেন। তবে ক্ষমতা গ্রহণের পর বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিনকেনস এর সিনেট শুনানিতে নতুন মার্কিন প্রশাসনের পরারাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে খুব দ্রুত ট্রাম্পের সব নীতি পাল্টে দেওয়ার আভাস মেলেনি। তেমনটি হলে ইরান নীতিতেও খুব দ্রুত পরিবর্তন আসছে না। হোয়াইট হাউসের নতুন প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন ইরানের সাথে সমঝোতায় যেতে হলেও দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হবে। আর সৌদি নীতির ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। সৌদির ক্ষেত্রে কিছুটা কঠোর হলেও রাতারাতি সৌদি আরবকে যুক্তরাষ্ট্র ছুড়ে ফেলবে তেমনটিও নয়। তবে ন্যাটোভুক্ত দেশ হিসেবে এখন তুরস্ককেও কাছে টানার চেষ্টা করবে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন চাইবেন সৌদি ও তুরস্কের মধ্যে সমঝোতা। এদিকে বাইডেন প্রশাসনও জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে দেওয়া স্বীকৃতি থেকে সরে আসছেনা। তবে বাইডেন প্রশাসনের ইন্টেলিজিয়েন্স বিষয়ক প্রধান আভরিল হেইন্স ইতিমধ্যেই এ আভাস দিয়েছেন যে, জামাল খাসোগি হত্যাকান্ডে মার্কিন গোপন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। সার্বিক এসব বিষয় ও পরিবর্তন নিয়ে যুবরাজ বিন সালমানও উদ্বিগ্ন। আর এই সব বিষয়ই তুরস্কের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে সৌদি আরবকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এমনটাই ধারণা আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের। বর্তমান পরিবর্তিত ব্যবস্থায় সৌদি আরব ও তুরস্ক উভয় দেশই কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি তুরস্কের ভূমিকম্পে সৌদি ত্রাণ পাঠানো তারই ইঙ্গিত। একই সময় সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সাথে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ানের টেলিফোন সংলাপও তেমনই ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক ও বৈশ্বিক বাস্তবতায় দুই দেশই চেষ্টা করছে আবার এক কাতারে সামিল হওয়ার। গত ডিসেম্বরে বিশ্বের বড় অর্থনীতির ২০টি দেশের জোট জি-টুয়েন্টি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় সৌদি আরবে। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সম্মেলনটি হয়েছে ভার্চুয়ালি। সম্মেলনের প্রাক্কালে বাদশাহ সালমান নিজে উদ্যোগী হয়ে ফোন করেন রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ানকে। সম্মেলনের বিষয় ছাড়াও পারস্পারিক সম্পর্ক নিয়েও তাদের মধ্যে আন্তরিক আলোচনা হয়। যতদূর জানা যায়, দুই নেতা আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার মতবিরোধ নিরসনে একান্ত আগ্রহী। সৌদি ও তুরস্কের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকেও তেমন ইতিবাচক আভাস পাওয়া যায়। এ সব থেকে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে এমন চিত্রই ফুটে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর বিরোধী অবস্থানে থাকা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দুটি মুসলিম দেশ সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী হয়ে ওঠায় মুসলিম বিশ্বেও নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। দেখা দিয়েছে সুরঙ্গের শেষে নতুন সম্ভাবনার আলো। দুই দেশের মধ্যে বৈরীতা নয়, সুসম্পর্কই চায় মুসলিম দুনিয়া। এতে বৈশ্বিক রাজনীতিতে মুসলিম বিশ্বের প্রভাব ও গুরুত্ব দুইই বাড়বে।
লেখক: সাংবাদিক, দৈনিক প্রথম আলো।