1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
দেশে দেশে রামাদান সংস্কৃতি
আখতার হোসাইন জাহেদ
  • ৭ এপ্রিল, ২০২১

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহা বার্তা নিয়ে পবিত্র মাহে রামাদান আমাদের সন্নিকটে। রামাদানকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্বেজুড়ে মুমিন-মুসলমান। মুমিনরা রামাদানকে ইবাদাতের মওসুম হিসাবে বেচে নেয়। রোযা রামাদানে মুসলমানদের জন্য একটি অপরিহার্য ইবাদত। এ ইবাদতে মানুষ হয় সংযমী, অর্জন করে আত্মার পরিশুদ্ধিতা। সংযমকে প্রাধান্য দিয়ে মানুষ দৈনন্দিন জীবনে নিয়ে আসে অনেক পরিবর্তন। এর মধ্যে রাতের শেষ ভাগে উঠে সেহরি খাওয়া, সারাদিন কাজের পাশাপাশি ধর্মীয় কাজকে প্রাধান্য দেওয়া এবং সংযমী জীবন যাপন করা, সূর্যাস্তে সবার সাথে ইফতার করা, ইফতার শেষ তারাবীহ পড়া ইত্যাদি, এ যেন এক অনন্য রামাদান সংস্কৃতি। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে মাহে রামাদান। দেশে দেশে রামাদান সংস্কৃতি কেমন? পাঠকের জন্য মুসলিম বিশ্বের দেশভেদে রামাদান সংস্কৃতির কিছু আকর্ষণীয় অংশ তুলে ধরা হলো-
মিসর: প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিসর। এখানে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয় সিয়াম সাধনা। মানুষ যাতে ইবাদত এবং মসজিদে বেশি সময় ব্যয় করতে পারে এজন্য এ দেশে রামাদান মাসে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কমিয়ে আনা হয় কর্মঘণ্টা। রামাদানের রাতে ঘরে ঘরে বাতি জ্বালানো এবং ফানুস ওড়ানো মিসরীয়দের অনেক পুরনো সংস্কৃতি। মিসরীয়রা কামানের গোলার শব্দে ইফতার করেন এবং সেহরি শেষ করেন।
ইরান : শিয়া অধ্যুষিত ইরানে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পালিত হয় মাহে রামাদান। রামাদান উপলক্ষে ইরানের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে ইরান সরকার। তবে মজার বিষয় হচ্ছে ইরানের শিয়া মতাবলম্বি ফকিহদের মতে, কোনো ব্যক্তি রামাদানে মাত্র ১৭ কিলোমিটার ভ্রমণ করলেই সে মুসাফির হবে। আর মুসাফিরদের জন্য রোযা রাখা তাদের মতে হারাম। এদিকে অধিকাংশ ইরানিই মাসব্যাপী ইতিকাফ করে থাকেন। তারা সারাদিন অফিস করে মসজিদে রাত যাপন করাকেই ইতিকাফ হিসেবে গন্য করেন। রাতে মসজিদ কর্তৃপক্ষই ইতিকাফকারীদের খাবার সরবরাহ করেন।
আইসল্যান্ড ও সুইডেন : ইউরোপের একটি প্রজাতান্ত্রিক দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ড। ২৭ হাজার ৭৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এদেশে প্রায় ৩ লক্ষাধিক জনসংখ্যার মধ্যে মুসলমান বাস করেন মাত্র ৭৭০ জন। ইফতারের মাত্র দুই ঘণ্টা পরই সেহরি শেষ করতে হয় তাদের। স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাত ১২টায় ইফতার করে আবার ২টায় সেহরি খান তারা। অন্যদিকে ইউরোপের তৃতীয় সর্ববৃহৎ দেশ সুইডেনের মুসলমানদের অবস্থাও একই রকম। মোট জনসংখ্যার প্রায় পাঁচ লাখ মুসলমানের বসবাস এখানে। গ্রীষ্মের রোজা সুইডেনিদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। ইফতারের মাত্র চার ঘণ্টা পর সেহরি খেতে হয় তাদের।
জার্মান ও যুক্তরাজ্য : ১৯ ঘণ্টা রোযা রাখেন জার্মানের মুসলমানরা। রাত ৩ টায় সেহরি খেয়ে পরদিন রাত ১০টায় ইফতার করেন তারা। অন্যদিকে জার্মানের মুসলমানদের চেয়ে পাঁচ মিনিট কম অর্থাৎ প্রায় ১৮ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট রোযা রাখেন যুক্তরাজ্যের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০ লাখ মুসলিমের বসবাস; যা মোট জনগোষ্ঠীর ৫ শতাংশ। দেশটিতে আছে প্রায় ১ হাজার ৭৫০টি মসজিদ। এখানকার অভিবাসী মুসলমানরা তাদের স্ব স্ব দেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী রামাদান পালন করেন। মসজিদে মসজিদে রোযাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন হয়। ভিন্ন ধর্মের মানুষদের আমন্ত্রণও জানানো হয় এমন অনেক আয়োজনে। দীর্ঘ সিয়াম সাধনার পর রাতে ঘরে ঘরে ও মসজিদে মসজিদে সালাতুত তারাবীহতে মিলিত হতে ভুলেন না যুক্তরাজ্যের মুসলমানরা।
তুরস্ক : রামাদানজুড়ে বড় বড় মসজিদের পাশে বইমেলা এবং কুরআন প্রতিযোগীতা তুর্কিদের রামাদান সংস্কৃতির অংশ। রামাদান মাসে অফিস-আদালত ঠিক রেখেই তারা ইফতারের আগে ঘরে ফেরার চেষ্টা করেন। সেহরির সময় হলেই দেশটির অলিগলিতে বেজে ওঠে ড্রামের শব্দ। মানুষকে সময় মতো জাগিয়ে দেওয়ার জন্য তুর্কি তরুণরা ড্রাম বাজিয়ে সংগীত পরিবেশন করে ডাকাডাকি করেন। আবার কামানের গোলার আওয়াজ শোনার মাধ্যমে সেহরি ও ইফতার শেষ করার সংস্কৃতিও রয়েছে তুরস্কে। দিনের বেলায় রেস্তোরাঁ এবং খাবারের দোকান বন্ধ থাকলেও দুপুরের পর থেকেই চলতে থাকে ইফতারের আয়োজন। সেহরির সময়ও রেস্তোরাঁগুলো খোলা রাখা হয়। দেশটিতে সেহরি ও ইফতারের সময় অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষরাও মুসলিমদের সঙ্গে সৌহার্দ্য বজায় রেখে যোগ দিতে দেখা যায়। এছাড়াও খেজুরের পরিবর্তে জলপাই দিয়ে ইফতারের সময় রোযা ভঙ্গ করা তুর্কিদের অন্যতম একটি সংস্কৃতি।
ওমান : রামাদান এলেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া কিংবা মজুদদারী করা অসৎ ব্যবসায়ীদের একটি নেশা। কিন্তু ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায় উপসাগরীয় দেশ ওমানের ব্যবসায়ীদের মাঝে। রামাদান উপলক্ষে সেখানে বিভিন্ন দ্রব্যমূল্যে কোম্পানির থাকে বিশেষ ছাড়। ব্যবসায়ীরা যথাযথ ছাড় ক্রেতাদের হাতে বুঝিয়ে দেন সৎভাবে। রামাদান শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ওমানের বিভিন্ন রাস্তার পাশে দেখা যায় সারি সারি তাঁবু। এসব তাঁবু রোযাদারদের ইফতার করানোর জন্য ওখানকার স্থানীয় মানুষ বিশেষভাবে তৈরি করেন। ওমানীয়রা এসময় বেশি পরিমাণে দান-সাদকাহ করেন। দানের সময় শর্ত জুড়ে দেন, যেন তার নাম প্রকাশ না হয়। রসিদে লিখে দিতে হয় একজন দাতা কিংবা ‘আবদুল্লাহ’ [আল্লাহর বান্দা]।
সৌদি আরব : মক্কা-মদিনার দেশ সৌদি আরবে রামাদানের চাঁদ উঠতেই শুরু হয় একে অন্যের কল্যাণ কামনা করে ক্ষুদেবার্তা বিনিময়। শহরগুলো সাজে নতুন সাজে। ঘরবাড়ি সংস্কার এবং ধোঁয়ামোছা হয়। আমরা ঈদের আগে যা যা করি সৌদিয়ানরা রামাদানের শুরুতে ঠিক তাই করেন। দান-সাদাকাতের নীরব প্রতিযোগিতা চলে সৌদি বাসিন্দাদের মাঝে।
রোযাদারকে ইফতার করানোর ঐতিহ্যবাহী সৌদি সংস্কৃতি রামাদান মাসের সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। রোযাদারকে ইফতার করানোর জন্য রাস্তার মোড়ে মোড়ে এবং মসজিদে মসজিদে স্থাপন করা হয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশেষ তাঁবু। বাঙালি, ইন্ডিয়ানসহ ভিনদেশী শ্রমিকরা এসব তাঁবুতে মেহমান হয়ে ইফতার গ্রহণ করেন আর খাদেমের মতো তাদের মাঝে ইফতার বিতরণের কাজটি করেন সৌদিয়ানরা। রোযাদারদের ইফতার করানোর নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা যায় মদিনা মুনাওয়ারায়। বিশেষ করে মসজিদে নববীর আশপাশে। ক্ষুধার্ত মানুষ যেমন লোভনীয় খাবারের দিকে ছুটে বেড়ায়, মদিনার মানুষেরাও ঠিক সেভাবে ছুটোছুটি করেন রোযাদারকে নিজের দস্তরখানে বসানোর জন্য। সৌদি আরবে সালাতুত তারাবিহ ও কিয়ামুল লাইল চলে সেহরির পূর্ব পর্যন্ত। এ সময় মাইক থেকে ভেসে আসা সুমধুর কন্ঠের তিলাওয়াতের সূরের মূর্ছনা আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুলে। এখানে দিনের কোলাহল থাকে রাতভর। রামাদানে সৌদি আরবের সুপার মার্কেটগুলোর দৃশ্যপট সম্পূর্ণ উল্টো। বিভিন্ন কোম্পানি, মুদি ও গ্রোসারি আইটেমে থাকে বিশেষ ছাড়।
সুদান : আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম একটি মুসলিম দেশ সুদান। এখানে ইফতারিতে সাধারণত খেজুর, গোশতের হামড়া, লাহমা এবং চালের তৈরি ‘আছিদা’ গোশত ও সস দিয়ে তৈরি ‘মুলাহ’ নামক খাদ্য তারা খান এবং একই সঙ্গে ‘গাওয়া’ নামক চা জাতীয় পানীয় তারা পান করেন। সুদানিরা ইফতারে খুবই ভোজন বিলাসী। তাই তারা ‘শোরবা’ নামক স্যুপ, গোশত দিয়ে তৈরি ‘মুহাম্মার’ নামক খাবার, দুধ ভাত দিয়ে তৈরি ‘রুসবিল হালিব’ তারা ইফতারীতে রাখেন। তদুপরি পায়েস, ক্ষির, ফিরনি এগুলো তাদের প্রিয় খাবার।
সংযুক্ত আরব আমিরাত: আরব বিশ্বের ইউরোপ হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেখানে রামাদানের চাঁদ দেখার সাথে সাথেই একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু হয় রোযা। একইদিনে রামাদান শুরু হলেও আলাদা সময়ে সেহরি ও ইফতার করেন দেশটির শিয়া ও সুন্নি মুসলিমরা। সুন্নাত মেনে খেজুর দিয়ে ইফতার করেন তারা।
বরকতের এ মাসে রোযাদারদের প্রতি আমিরাতবাসীর আতিথেয়তা মুগ্ধ করার মতো। আরব আতিথেয়তার গুণটি এখনো ধরে রাখছেন তারা। রামাদান এলেই এখানকার জনগণ পাড়া-মহল্লা বা বড় বড় মসজিদের পাশে তাঁবু-প্যান্ডেল টানিয়ে ইফতার আয়োজনের পাশাপাশি সন্ধ্যার আগে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে রোযাদারদের মাঝে ইফতার বিতরণে ব্যাস্ত থাকেন আমিরাতবাসী।
অন্যদিকে রামাদান শুরুর সাথে সাথেই দেখা যায় দেশটিতে ভিন্নচিত্র। বন্ধ করা হয় নাইট ক্লাব এবং মদের বার। সে সময় প্রকাশ্যে পানাহার ও ধূমপান সেখানে দ-ণীয় অপরাধ। দেশের সড়কগুলোকে সাজানো হয় ভিন্ন সাজে। আলোকসজ্জায় সাজে উপসাগরীয় দেশটি এবং সরকারীভাবে আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগীতা।
ইরাক: রামাদানের চাঁদকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানায় ইরাকিরা। ইরাকের মুসলমানেরা তোপধ্বনির মাধ্যমে রামাদানকে বরণ করে নেয়। এ সংস্কৃতি তারা গ্রহণ করেছে তুর্কিদের কাছ থেকে। তুর্কিরা উসমানীয় শাসনামলে বাগদাদবাসীকে তোপধ্বনির মাধ্যমে ইফতার ও সেহরির সময় সম্পর্কে অবগত করাত। তোপধ্বনি কালের বিবর্তণে এখনো ইরাকে টিকে আছে একটি জনপ্রিয় রামাদান সংস্কৃতি হিসেবে। তবে হ্যাঁ, এখন আর উসমানি আমলের তোপগুলো ব্যবহার করা হয় না। এখন কম্পিউটারাইজড নিয়ন্ত্রিত তোপ ব্যবহার করা হয়।
রামাদানে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া ইরাকের আরেকটি ঐতিহ্য। এ সময় তারা পরস্পরকে ধর্মীয় গ্রন্থাদি উপহার দেন। প্রতিবেশিদের বাড়িতে ইফতার সামগ্রী পাঠান। ইরাকিরা খোলা ছাদে বা বাড়ির সামনে খোলা প্রাঙ্গণে বসে ইফতার করতে পছন্দ করেন। এটা ইরাকের একটি নিজস্ব সংস্কৃতি। বসরার খেজুর ও দুধ এবং বিশেষ ধরনের শরবত ইরাকীদের ইফতার ও সেহরিতে খুবই পছন্দ। বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের ন্যায় রামাদানে ইরাকের মসজিদগুলোও মুসল্লি মুখর হয়ে ওঠে। সব বয়সী মুসল্লির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় মসজিদগুলোতে। অন্যদিকে ইরাকীদের বিয়েগুলো যথাসম্ভব রামাদানে সম্পন্ন করা তাদের অন্যতম সংস্কৃতি।
যুক্তরাষ্ট্র : এখানে প্রায় ৭০ লাখ মুসলমানের বসবাস। বেশির ভাগ মুসলমান বাস করেন নিউইয়র্ক, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউজার্সি, ইলিনয়েস, ইস্তিয়ানো, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া ও মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যগুলোতে। এশিয়ান মুসলিমরা রামাদানে তাদের সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে পায়জামা, পাঞ্জাবি ও কাবুলি সেট কোর্তা পরিধান করেন এবং মহিলা ও শিশুরা মেহেদি দিয়ে হাত রাঙান। আমেরিকায় ইফতার সামগ্রীর মধ্যে খেজুর, খোরমা, সালাদ, পনির, রুটি, ডিম, গোশত, ইয়োগার্ট, হট বিনস, স্যুপ, চা ইত্যাদি থাকে। আর বাঙালী মুসলমানদের ইফতার তালিকায় অন্য সবকিছুর পাশাপাশি থাকে বিরিয়ানী, খিচুড়ী, শরবত, পিয়াজু এবং জিলাপীসহ আরো অনেক কিছু। রামাদান মাসে হোয়াইট হাউসে ইফতার পার্টি প্রথম শুরু করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। এটা বর্তমানে একটি প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মালয়েশিয়া: সাইরেনের শব্দে রামাদানের আগমনী বার্তা পৌঁছে যায় সবার কানে কানে। ‘শাহরুন মুবারাকুন’ বলে অভিবাদন জানিয়ে এবং উপহার বিনিময় করে শুরুতেই ভ্রাতৃত্ব বন্ধনকে মজবুত করে নেয় মালয়েশিয়ানরা। এ দেশে সরকার এবং ব্যবসায়ীরা রামাদান উপলক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীতে দেয় বিশেষ ছাড়। মালয়েশিয়ানরা অনেকাংশেই ধর্মপ্রাণ। রমাদানে মালয়েশিয়ার মসজিদগুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকে। তারাবিহসহ অন্যান্য নামাজে নারী ও শিশুদের উপস্থিতি থাকে লক্ষণীয়। তারাবিহর শেষে বিশেষ শিক্ষামূলক আসর বসে মালয়েশিয়ার মসজিদগুলোতে। সেহরির পর ঘুমানোর অভ্যাস নেই মালয়েশিয়ার মুসলমানদের। স্থানীয় মসজিদে ধর্মীয় আলোচনা শুনে সূর্য উঠলে নিজ নিজ কাজে বেরিয়ে পড়েন মালয়েশিয়ানরা।
বাংলাদেশ : বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশ। সারাদিনের রোযা শেষে এখানকার রোযাদারদের প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাড়ায় ইফতার। অঞ্চলভেদে সকলেই সাধ্যমত চেষ্টা করে ইফতারকে বর্ণাঢ্য করতে। সাধারণত বাংলাদেশী ইফতারিতে থাকে খেজুর, শরবত, ছোলা, মুড়ি, পিয়াজু এবং বেগুনি। বাহারী জিলাপি তো থাকবেই। পাশাপাশি থাকে নানা ধরনের ফল। এছাড়াও অনেকে বিরিয়ানি, খিচুড়ি, ভাত ও রুটির মত ভারী খাবারও খেয়ে থাকেন। রামাদান এলে বাংলাদেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে সর্বত্র। ইফতার মাহফিল, আত্মীয়ের বাড়িতে ইফতার পাঠানো বাঙালীর পুরোনো সংস্কৃতি। রামাদানে বাংলাদেশের মসজিদগুলো সরব হয়, জেগে উঠে। মুসল্লি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। রামাদানে ইফতার, তারাবিহ, সেহরি, দিনের বেলায় পাড়ায়-পাড়ায়, মসজিদ-মাদরাসা, স্কুল-কলেজে কুরআন শিক্ষার আসর ইত্যাদি যেন বাংলাদেশের রামাদানকে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করে।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

ফেইসবুকে আমরা...