1. redwan.iub@gmail.com : admin2021 :
  2. admin@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
  3. editor@parwana.net : Parwana Net : Parwana Net
Logo
কুরআনে নবী-শ্রেষ্ঠত্বের অনুষঙ্গ: পরিপ্রেক্ষিত সূরা বাকারা
সাঈদ হুসাইন চৌধুরী
  • ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন,
ذٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ- هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ- الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ- وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ-
-এটা সেই কিতাব যাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটা মুত্তাকীদের জন্য পথ নির্দেশ, যারা গায়বের বিষয়ে ঈমান আনে এবং নামায কায়িম করে, আর আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সেসব বিষয়ের উপর, যা কিছু আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। (সূরা বাকারা, আয়াত-২-৪)
আল্লাহ তাআলা তাকওয়া অর্জনের জন্য রাসূলের উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি ঈমানকে শর্তায়িত করেছেন। এটাকে তিনি হিদায়াত ও সফলতার ভিত্তি বানিয়ে দিয়েছেন। এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ ব এর উপর নাযিলকৃত কুরআন কারীমের উপর ঈমান আনয়নের কথা অন্যান্য নবীর কিতাবসমূহের উপর ঈমান আনয়নের পূর্বে উল্লেখ করেছেন। এটা বুঝানোর জন্য যে, অন্যান্য কিতাবের উপর ঈমান আনার মূল ভিত্তি হলো কুরআনের উপর ঈমান আনা।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ ۗ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَـٰكِن لَّا يَعْلَمُونَ
-আর যখন তাদেরকে বলা হয়, লোকেরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে, আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মতো! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৩)
রাসূলুল্লাহ ব এর সাহাবীদের ঈমানের ব্যাপারে যখন কাফিরদের বলা হতো, তারা সাহাবীদেরকে বোকা বা নির্বোধ বলে গালি দিত। আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীর সাহাবীদের বিরুদ্ধবাদীদের একাধিক تأكيد (দৃঢ়তা) এর শব্দ ব্যবহার করে তাদের জবাব দিয়েছেন। অন্যান্য নবীর সঙ্গীদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা এমন করেননি। নূহ (আ.) এর সম্প্রদায়ের প্রতি লক্ষ্য করুন। তাঁর জাতির লোকেরা বলেছিল,
أَنُؤْمِنُ لَكَ وَاتَّبَعَكَ الْأَرْذَلُونَ
-আমরা কি তোমাকে মেনে নেব যেখানে তোমার অনুসরণ করছে ইতরজনেরা! (সূরা শুআরা, আয়াত-১১১)
নূহ (আ.) এর জাতি তার প্রতি ঈমান আনয়নকারী তার সঙ্গীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে। কিন্তু তাদের অপমানসূচক বক্তব্যের জবাব নূহ (আ.) কেই দিতে হয়েছিল। কুরআনে এসেছে,
قَالَ وَمَا عِلْمِي بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ – إِنْ حِسَابُهُمْ إِلَّا عَلٰى رَبِّي لَوْ تَشْعُرُونَ
-তিনি (নূহ) বললেন, তারা কি কাজ করছে, তা জানা আমার কি দরকার? তাদের হিসাব নেয়া আমার পালনকর্তারই কাজ; যদি তোমরা বুঝতে! (সূরা শুআরা, আয়াত-১১২-১১৩)
এ আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে, আল্লাহ তাআলা শুধু তাঁর নবীর সম্মানের কারণেই নবীর সাহাবীদের বিষোদগারের জবাব দিয়েছেন।
আরেকটি আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, وَلَقَدْ أَنزَلْنَا إِلَيْكَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ ۖ وَمَا يَكْفُرُ بِهَا إِلَّا الْفَاسِقُونَ
-আমি আপনার প্রতি স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ অবতীর্ণ করেছি। ফাসিক ব্যতীত কেউ এগুলো অস্বীকার করে না। (সূরা বাকারা, আয়াত-৯৯)
এই আয়াত আল্লাহ তাআলা ইয়াহুদী প-িত আব্দুল্লাহ ইবনু সূরিয়্যার একটি কটুক্তির জবাবে নাযিল করেছেন। সে নবীর ওহীকে অস্বীকার করে বলেছিল, ما جئت بشئ
বিষয়টি এ কারণেই উল্লেখ করছি যে, দেখা যাচ্ছে আল্লাহ তাআলা তার নবীর উপর আরোপিত প্রতিটি অপবাদের জবাব তিনি নিজেই প্রদান করছেন। এমনকি মুশরিক, ইয়াহুদী কিংবা খ্রিষ্টান, যে যখনই রাসূলুল্লাহ ব এর উপর অপবাদ দিয়েছে বা কুৎসা রটনা করেছে, আল্লাহ তাআলা নিজে তাদের অপবাদ বা কুৎসার জবাব দিয়েছেন। এসব জবাব কখনও কখনও ছিল দৃঢ়তাজ্ঞাপক অব্যয় যোগে, কখনো শপথ করে, আবার কখনো ছিল যথার্থ ভাষালঙ্কার প্রয়োগের মাধ্যমে।
উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ তাআলা একাধিক তাকীদ (تأكيد) ব্যবহার করেছেন। প্রথমত اللام القسم তথা শপথের অর্থজ্ঞাপক لام ব্যবহার করেছেন। সুতরাং আয়াতের উহ্য অংশ হবে … والله لقد أنزلنا (আল্লাহর কসম! আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি…)। দ্বিতীয়ত قد তথা تحقيق অর্থজ্ঞাপক অব্যয় ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়া তিনি أيات শব্দকে بينات বিশেষণ দ্বারা বিশেষায়িত করেছেন। এটা বুঝানোর জন্য যে, এই কিতাবের স্পষ্টতাই একে অবজ্ঞা করার সমূহ সম্ভাবনা নাকচ করে দিচ্ছে। আর আয়াতের শেষাংশ وَمَا يَكْفُرُ بِهَا إِلَّا الْفَاسِقُونَ এখানে আল্লাহ তাআলা কুরআন অস্বীকারের বিষয়টি ইয়াহুদীদের সাথে সম্পৃক্ত করে তাদেরকে ফাসিক বলে অভিহিত করেছেন।
এই বিশেষত্ব আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসূল ব কে দান করেছেন এবং এর মাধ্যমে তাঁর নবীকে অন্যান্য সকল নবী-রাসূলের উপর মর্যাদাবান করেছেন। কেননা অন্যান্য নবীদের ক্ষেত্রে তাদের উপর আরোপিত অপবাদের জবাব প্রদান করা তাদের নিজেদের দায়িত্ব ছিল। যেমন হযরত নূহ (আ.) নিজের পক্ষাবলম্বন করে বিরুদ্ধবাদীদের জবাবে বলেছেন, يَا قَوْمِ لَيْسَ بِي ضَلَالَةٌ وَلٰكِنِّي رَسُولٌ مِّن رَّبِّ الْعَالَمِيْنَ “হে আমার সম্প্রদায়! আমি কখনও ভ্রান্ত নই; বরং আমি বিশ্বপ্রতিপালকের রাসূল।” (সূরা আরাফ, আয়াত-৬১)
হযরত হুদ (আ.) বলেছেন, يَا قَوْمِ لَيْسَ بِي سَفَاهَةٌ وَلَـٰكِنِّي رَسُولٌ مِّن رَّبِّ الْعَالَمِينَ -হে আমার সম্প্রদায়, আমি মোটেই নির্বোধ নই, বরং আমি বিশ্বপ্রতিপালকের প্রেরিত রাসূল। (সূরা আরাফ, আয়াত-৬৭)
ফিরাউন যখন হযরত মূসা (আ.) কে জাদুর অপবাদ দিয়েছিল তখন তিনি নিজে জবাব দিয়ে বলেছেন, لَقَدْ عَلِمْتَ مَا أَنزَلَ هَـٰؤُلَاءِ إِلَّا رَبُّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ بَصَائِرَ وَإِنِّي لَأَظُنُّكَ يَا فِرْعَوْنُ مَثْبُورًا -তুমি জান যে, আসমান ও যমীনের পালনকর্তাই এসব নিদর্শনাবলি প্রত্যক্ষ প্রমাণস্বরূপ নাযিল করেছেন। হে ফিরাউন, আমার ধারণা তুমি ধ্বংস হতে চলেছ। (সূরা ইসরা, আয়াত-১০২)
এভাবে অন্যান্য নবীগণের প্রত্যেকেই নিজের জবাব নিজে দিয়েছেন। তাই এই মূলনীতি আয়ত্ত্ব করে রাখ, যা নবী করীম ব এর উচ্চ মর্যাদা বর্ণনা করে। আমি ‘আল ইস্তিগাছাহ’ গ্রন্থে এই মূলনীতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছি,
نبي تولى الله عنه دفاعه + و خيب قوما قد رموه بجنة
-এই নবী এমন, স্বয়ং আল্লাহ তাআলা যার প্রতিরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। আর যারা তাঁকে পাগলের অপবাদ দিয়েছে, তিনি তাদেরকে নিরাশ করেছেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقُولُوا رَاعِنَا وَقُولُوا انظُرْنَا وَاسْمَعُوا ۗ وَلِلْكَافِرِينَ عَذَابٌ أَلِيمٌ
-হে মুমিনগণ, তোমরা ‘রায়িনা’ বলো না, ‘উনযুরনা’ বলো এবং তিনি যা বলেন তা শুনতে থাকো। আর কাফিরদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। (সূরা বাকারা, আয়াত-১০৪)
পূর্বোক্ত আয়াতগুলোর মতো এখানেও আল্লাহ তাআলা নিজে তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের প্রতিহত করেছেন। রাসূলুল্লাহ ব এর কতিপয় সাহাবী তাদের নিজেদের প্রচলিত ভাষায় তাঁকে ‘راعنا’ (আমাদের কথা শুনুন) বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করতেন। ইয়াহুদীরাও তাকে ‘راعنا’ বলে সম্বোধন করত। কিন্তু ইয়াহুদীরা ‘راعنا’ শব্দটিকে রাসূলুল্লাহর নিন্দার্থে ‘رعونة’ বা নির্বুদ্ধিতা বলে উল্লেখ করত। আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে এই শব্দ ব্যবহার করতে নিষেধ করলেন এবং এর পরিবর্তে ‘انظرنا’ বলে সম্বোধন করতে আদেশ দিয়েছেন। যাতে কোনো তাচ্ছিল্য বা ভিন্নার্থ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই শব্দ পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো রাসূল ব এর সম্মান ও মর্যাদাকে রক্ষা করা এবং এর মাধ্যমে রাসূল ব কে নিয়ে পরোক্ষ তাচ্ছিল্যের পথটিও রুদ্ধ করে দেওয়া।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
وَقَالَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ لَوْلَا يُكَلِّمُنَا اللهُ أَوْ تَأْتِينَا آيَةٌ ۗ كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ۘ تَشَابَهَتْ قُلُوبُهُمْ ۗ قَدْ بَيَّنَّا الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ .
-যারা অজ্ঞ, তারা বলে, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে কেন কথা বলেন না? অথবা আমাদের কাছে কোনো নিদর্শন কেন আসে না? এমনিভাবে তাদের পূর্বে যারা ছিল তারাও এদেরই অনুরূপ কথা বলেছে। তাদের অন্তর একই রকম। নিশ্চয় আমি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেছি তাদের জন্য যারা প্রত্যয়শীল। (সূরা বাকারা, আয়াত-১১৮)
মক্কার মুশরিকরা রাসূল ব এর রিসালাতের প্রতি সন্দেহ পোষণ করে বলত, যদি আপনার রিসালাতের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা সরাসরি আমাদের সাথে কথা বলতেন, অথবা আপনার রিসালাতের সত্যায়নে আমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে কোনো নিদর্শন আসত, তাহলে হয়তো আমরা বিশ্বাস করতাম। তাদের এমন ফাঁকিপূর্ণ ও অবাস্তব কথা শুনে রাসূল ব খুব কষ্ট পেতেন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় হাবীবকে সান্তনা দিয়ে বলেছেন, كَذٰلِكَ قَالَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِم مِّثْلَ قَوْلِهِمْ ۘ تَشَابَهَتْ قُلُوبُهُمْ ঠিক এমন কথা পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যকার কাফিররাও বলেছিল। মূলত (কুফরী ও অবাধ্যতার ক্ষেত্রে) তাদের অন্তরের সাদৃশ্য রয়েছে।
পরক্ষণেই, এই আয়াতের পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলের রিসালাতকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে বলেছেন, إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا ۖ وَلَا تُسْأَلُ عَنْ أَصْحَابِ الْجَحِيمِ -নিশ্চয় আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে পাঠিয়েছি। আপনি দোযখবাসীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন না। (সূরা বাকারা, আয়াত-১১৯)
অর্থাৎ, কেন তারা ঈমান আনেনি (এমন জবাবদিহি আপনাকে করা হবে না)। আপনার দায়িত্ব কেবল দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া। আপনার উপর যে দায়িত্ব ছিল তা আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। এখন তাদের হিসাব-নিকাশ আমার দায়িত্বে। وَلَا تسْأَل ক্রিয়াপদ কোনো কোনো কিরাতে জযম দেওয়া হয়েছে। জানার অর্থে নিষেধ সূচক ‘লা’, তখন আয়াতের অর্থ হবে, দুযখীদের শাস্তি কেমন হবে এই বিষয়ে আপনি জানতে চাইবেন না। কারণ আমার কাছে তাদের শাস্তি অনেক কঠিন, যার বর্ণনা দেওয়া যায় না। অথবা তাদের জন্য শাফাআত করার উদ্দেশ্যেও তাদের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন না। কেননা কুফরীর কারণে তারা চরম ও অবর্ণনীয় শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত।
তাফসীরে তাবারীতে এসেছে, রাসূল (সা.) তাঁর পিতামাতার ব্যাপারে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, “যদি আমি আমার পিতা-মাতার ব্যাপারে জানতে পারতাম”। এরপর আল্লাহ তাআলা এই আয়াত وَلَا تُسْأَلُ عَنْ أَصْحَابِ الْجَحِيْمِ নাযিল করে রাসূলকে তাদের ব্যাপারে কোনো দুআ করতে নিষেধ করেছেন, কেননা তারা জাহান্নামী। কিন্তু এই বর্ণনাটি মুরসাল, দায়িফ। আয়াতের অপরাপর প্রসঙ্গও এই বর্ণনার দুর্বলতা নির্দেশ করছে। প্রকৃতপক্ষে, রাসূলুল্লাহর পিতা-মাতা ফিতরাতের অন্তর্ভুক্ত। তারা উভয়ে জাহান্নাম থেকে মুক্ত। এ ব্যাপারে আমি ‘খাওয়াতিরুন দ্বীনিয়্যাহ’ গ্রন্থে বিশদ আলোচনা করেছি।
আল্লাহ তাআলা বলেছেন, وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا
-এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি যাতে করে তোমরা মানবম-লির জন্য সাক্ষ্যদাতা হও আর রাসূল হোন তোমাদের জন্য সাক্ষ্যদাতা। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৪৩)
আয়াতে وَسَطًا বলতে উত্তমতা এবং ন্যায়পরায়ণতা বুঝানো হয়েছে, شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ বলতে অন্যান্য উম্মতের কাছে তাদের নবীগণ আল্লাহর দাওয়াত পৌঁছিয়েছেন; এই মর্মে সাক্ষ্য প্রদানকে বুঝানো হয়েছে। রাসূলুল্লাহর সম্মানার্থেই তাঁর উম্মতকে আল্লাহ তাআলা এই মর্যাদা দিয়েছেন।
কা’ব আল আহবার বলেন, আল্লাহ তাআলা এই উম্মতকে এমন তিনটি বিশেষত্ব দিয়েছেন যা ইতিপূর্বে কোনো নবী-রাসূল ব্যতিত অন্য কাউকে দেননি। প্রত্যেক নবীকে আল্লাহ বলেছিলেন, أنت شاهد على خلقي (আপনি আমার সৃষ্টির জন্য সাক্ষী) আর এই উম্মতকেও আল্লাহ বলেছেন, لتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ (যাতে করে তোমরা মানবম-লির জন্য সাক্ষ্যদাতা হতে পারো)। কোনো কোনো নবীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ما عليك من حرج (আপনার জন্য কোনো জটিলতা থাকবে না), আমাদের জন্যও আল্লাহ তাআলা একই কথা বলেছেন, مَا يُرِيدُ اللهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ (আল্লাহ তোমাদের জন্য কোনো জটিলতা চান না)। নবীদেরকে তিনি বলেছেন, ادعنى أستجب لك (আপনি ডাকুন, আমি আপনার ডাকে সাড়া দেবো)। আমাদের উদ্দেশ্যেও তিনি বলেছেন, ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ (তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব)।

মূল: আব্দুল্লাহ বিন সিদ্দিক আল গুমারী
অনুবাদক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ফেইসবুকে আমরা...